১৭ ফেব্রুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:
বসত ঘরে নিজের কবর নিজেই জীবিত অবস্থায় তৈরি করে রেখেছেন ভৈরবের সুফী সাধক সিদ্দিক শাহ সরেশ্বরী। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের কামারকান্দা এলাকার মৃত আলাই মিয়ার ছেলে। এক সময়ে নিজ এলাকায় মুদির ব্যবসা করতেন। সে সময় থেকেই তিনি মাজার ভুক্ত অনুসারী হন। এরপর থেকেই তার পীর বাবার অনুসারী হিসাবে কাজ করতে থাকেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর গ্রামের কামারকান্দা এলাকায় নিজ বসত বাড়ির একটি টিনের ঘরে ভিতরে নিজের কবর নিজেই তৈরি করে রেখেছেন। চারদিক থেকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা জায়গার ভেতরে কবরটি তৈরি করা হয়েছে। কবরের চারপাশ ইটের গাঁথুনি দিয়ে তৈরি করে ভেতরে ফাঁকা রাখা হয়েছে। উপরদিকে মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। গত দু মাস আগে তিনি অসুস্থতা হওয়ার পর কারও সাহায্য ছাড়া নিজেই করেছেন এ কবর।
এসময় কথা হয় ভৈরবের সুফী সাধক সিদ্দিক শাহ সরেশ্বরীর সাথে। তিনি বলেন, ১৮ বছর আগে রংপুর বুড়িহাট এলাকার বাবা সুদরুল শাহের কাছে আমি মুরিদ হয়। তিনি আমার গুরু বাবা । দীর্ঘদিন যাবত আমার বাবার খেদমত করার পর তিনি আমাকে বয়াত দান করেছেন। তারপর থেকে আমার কিছু ভক্ত অনুসারী তৈরি হয়েছে। বাবার আর্শিবাদে সিলেটের সুনামগঞ্জ, ঢাকা, নিজ এলাকাসহ ২৫-৩০ জনের বেশি ভক্ত রয়েছেন।
তিনি এ বিষয়ে বলেন, কবর খুঁড়ার উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে দুনিয়ার সকল মানবজাতিকেই তো মাটির তৈরি কবরে যেতে হবে। তাই আমি নিজের কবর নিজেই তৈরি করে রেখেছি। যে কবরে আমি পরকালে থাকবো সেই কবরটি নিজ হাতে বানাইলাম যা আমার ভক্তরাও দেখতে পারলো। তারা আমাকে মৃত্যুর পর এই ঘরেই দাফন করবেন।
তার স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, আমাদের পারিবারিকভাবে সবার সম্মতি নিয়েই আমার স্বামী নিজের কবর নিজে তৈরি করেছেন। তার উছিয়ত নিজের হাতে গড়া কবরেই তাকে দাফন করতে বলা হয়েছে। আমরা তার ইচ্ছাকেই সমর্থন দিয়েছি।
স্থানীয় শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, লোকমুখে শুনেছি আমার ইউনিয়নে সিদ্দিক শাহ নামের এক মাজার ভক্ত লোক তিনি নিজের কবর নিজেই তৈরি করে রেখেছেন। আসলে এই ধরণের ঘটনা আমাদের সমাজে প্রচলন নেই। এ বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজনদের মাঝে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে।
এ বিষয়ে ভৈরব এলএসডি জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলালা হাবিবুর রহমান জানান, কোন ব্যক্তি মৃত্যুর আগে তার কবরের জন্য স্থান নির্ধারণ করা ইসলামে নিষেধ নেই । কিন্তু কবর আগেই বাঁধাই করা ইসলাম সমর্থন করে না। তবে কেউ যদি মৃত্যুর পূর্বে নিজের কবর স্থান নির্ধারণ করে নিজেই তৈরি করে রাখেন সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। আবার কেউ যদি মনে করেন তার পরিবারে কবর খুঁড়ার কেউ নেই তাহলে নিজের কবর নিজে তৈরি করে রাখতে পারেন।