ভৈরবে সরকারি কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুল প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:২৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৯৩৫ Time View

 ২৪ আগস্ট, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবে  সরকারি কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। আজ ২৪ আগস্ট শনিবার বেলা ১২টায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক বাবু বিশ্বনাথ গুপ্তের হাতে এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন। এ সময় স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরাফাত, শোভন, আবির, রিদম ও সাজু বলেন, আমরা কয়েকদফা প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করেছি। একশো বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছিলেন। অনুষ্ঠান না হওয়ায় এ বিষয়ে স্যারের সাথে আলোচনা করতে আসলে তিনি কোন হিসাব ও সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে স্কুলের একাধিক শিক্ষক, দারোয়ান ও শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে স্যারের সাথে কথা বলতে আসলে তিনি চাঁদাবাজীর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমরা স্যারকে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে স্কুলের সাবেক পরিচালক আরমান মিয়া বলেন, আমি স্কুলে দীর্ঘদিন অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি দায়িত্ব ছাড়ার পর বিভিন্ন অভিভাবক ভর্তি বাণিজ্যের, শিক্ষকরা নিয়োগ বাণিজ্যের ও স্কুলে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছে আসে। আজকে এ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসেছি। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি নিজে  স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন। 

এ বিষয়ে স্কুলের সাবেক শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা ৪০ জন খন্ডকালীন  শিক্ষক শিক্ষিকাকে স্যার একদিনে বিদায় দিয়েছেন। তিনি ইচ্ছে করলে আমাদের বেশ কয়েকজনকে কর্মরত  রাখতে পারতো। আমাদেরও পরিবার রয়েছে। এখন এ সরকারি স্কুলে একাধিক শাখা থাকার পরও ১৮ জন শিক্ষক নিয়ে স্কুল পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে ২ শাখা একসাথে করে ক্লাশ করানো হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের কাছে আসলে তিনি চাকুরী বাবদ ১ লক্ষ টাকা করে চাঁদা দাবী করেন। 

এ বিষয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, আমি এনটিআরসি শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে সুপারিশ প্রাপ্ত হই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চাকুরীতে আসি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার অফিস সহায়ক সাদেক মিয়ার মাধ্যমে আমার কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি নিজেও চাঁদা চেয়েছেন । আমি চাঁদা না দেয়ায় আমাকে চাকুরীচ্যুত করতে  বাধ্য করে।  

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানান, আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিউজও হয়েছে। আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি। তাই আমি স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

১০ম গ্রেডের দাবিতে ভৈরবে প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ভৈরবে সরকারি কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুল প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ।

Update Time : ১২:২৬:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪

 ২৪ আগস্ট, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবে  সরকারি কেবি পাইলট মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। আজ ২৪ আগস্ট শনিবার বেলা ১২টায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক বাবু বিশ্বনাথ গুপ্তের হাতে এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন। এ সময় স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ বিষয়ে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরাফাত, শোভন, আবির, রিদম ও সাজু বলেন, আমরা কয়েকদফা প্রধান শিক্ষকের সাথে দেখা করেছি। একশো বছর পূর্তি উপলক্ষে তিনি প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছিলেন। অনুষ্ঠান না হওয়ায় এ বিষয়ে স্যারের সাথে আলোচনা করতে আসলে তিনি কোন হিসাব ও সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে স্কুলের একাধিক শিক্ষক, দারোয়ান ও শিক্ষার্থীর বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে স্যারের সাথে কথা বলতে আসলে তিনি চাঁদাবাজীর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমরা স্যারকে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে স্কুলের সাবেক পরিচালক আরমান মিয়া বলেন, আমি স্কুলে দীর্ঘদিন অভিভাবক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমি দায়িত্ব ছাড়ার পর বিভিন্ন অভিভাবক ভর্তি বাণিজ্যের, শিক্ষকরা নিয়োগ বাণিজ্যের ও স্কুলে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছে আসে। আজকে এ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের লোকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসেছি। এ সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তিনি নিজে  স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন। 

এ বিষয়ে স্কুলের সাবেক শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা ৪০ জন খন্ডকালীন  শিক্ষক শিক্ষিকাকে স্যার একদিনে বিদায় দিয়েছেন। তিনি ইচ্ছে করলে আমাদের বেশ কয়েকজনকে কর্মরত  রাখতে পারতো। আমাদেরও পরিবার রয়েছে। এখন এ সরকারি স্কুলে একাধিক শাখা থাকার পরও ১৮ জন শিক্ষক নিয়ে স্কুল পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে ২ শাখা একসাথে করে ক্লাশ করানো হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের কাছে আসলে তিনি চাকুরী বাবদ ১ লক্ষ টাকা করে চাঁদা দাবী করেন। 

এ বিষয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, আমি এনটিআরসি শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে সুপারিশ প্রাপ্ত হই। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চাকুরীতে আসি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার অফিস সহায়ক সাদেক মিয়ার মাধ্যমে আমার কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি নিজেও চাঁদা চেয়েছেন । আমি চাঁদা না দেয়ায় আমাকে চাকুরীচ্যুত করতে  বাধ্য করে।  

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক জানান, আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থীরা মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নিউজও হয়েছে। আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছি। তাই আমি স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।