ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো স্পেন-নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
  • ২১ Time View

আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। স্পেনের পক্ষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, আয়ারল্যান্ডের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ও নরওয়ের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মঙ্গলবার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি বসবাস করা।

স্প্যানিশ মন্ত্রিসভায় এ বিষয়টি অনুমোদনের পর সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক ন্যায়বিচারের বিষয়’ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এ স্বীকৃতি শান্তির জন্য অপরিহার্য।

আমাদের এ পদক্ষেপ ‘কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। ’

তিনি বলেন, হামাসের ৭ অক্টোবরের কর্মকাণ্ডের কারণে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়েছে। স্পেনের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধী হামাসকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

এর আগে ঘোষণার বিষয়ে নিশ্চিত করেন স্প্যানিশ সরকারের মুখপাত্র পিলার আলেগ্রিয়া। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের শান্তি অর্জনে সহায়তা করা।

এর আগে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে ‘দিনটি বিশেষ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ নরওয়ে-ফিলিস্তিন সম্পর্কের জন্য বিশেষ দিন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সবচেয়ে উৎসাহী রক্ষকদের অন্যতম নরওয়ে।

আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বলেন, আয়ারল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাথে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

আমাদের সরকারের এ সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অনুমতি দেয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে আয়ারল্যান্ডে ফিলিস্তিনি মিশনের মর্যাদা দূতাবাসে উন্নীত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থেকে আয়ারল্যান্ডে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে।

মার্টিন বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি একটি প্রক্রিয়ার শেষ নয়; বরং শুরু। এটা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে।

ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। তিনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি বিশ্বকে সংকেত দিচ্ছে যে, একটি দেশ হিসেবে আপনারাও এমন একটি বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ইউরোপের এ তিন দেশ গত কয়েকদিন আগেই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেবে বলে আসছিল। এ নিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছিল ইসরায়েল। তিন দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরও ইসরায়েল এর কড়া নিন্দা জানায়। তেল আবিব বলেছে, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধের মাঝে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্ত হামাসের জন্য পুরস্কার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

১০ম গ্রেডের দাবিতে ভৈরবে প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিলো স্পেন-নরওয়ে-আয়ারল্যান্ড

Update Time : ০৫:৫২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড। স্পেনের পক্ষে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ, আয়ারল্যান্ডের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ও নরওয়ের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

কাতারের সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা মঙ্গলবার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের পাশাপাশি বসবাস করা।

স্প্যানিশ মন্ত্রিসভায় এ বিষয়টি অনুমোদনের পর সানচেজ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ঘোষণা দেন।এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক ন্যায়বিচারের বিষয়’ বলেও মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এ স্বীকৃতি শান্তির জন্য অপরিহার্য।

আমাদের এ পদক্ষেপ ‘কারও বিরুদ্ধে নয়, বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। ’

তিনি বলেন, হামাসের ৭ অক্টোবরের কর্মকাণ্ডের কারণে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয়েছে। স্পেনের এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিরোধী হামাসকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

এর আগে ঘোষণার বিষয়ে নিশ্চিত করেন স্প্যানিশ সরকারের মুখপাত্র পিলার আলেগ্রিয়া। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের শান্তি অর্জনে সহায়তা করা।

এর আগে নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইড এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়ে ‘দিনটি বিশেষ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ নরওয়ে-ফিলিস্তিন সম্পর্কের জন্য বিশেষ দিন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সবচেয়ে উৎসাহী রক্ষকদের অন্যতম নরওয়ে।

আয়ারল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল মার্টিন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে বলেন, আয়ারল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাথে পূর্ণাঙ্গ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে।

আমাদের সরকারের এ সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেরও অনুমতি দেয়। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের ভিত্তিতে আয়ারল্যান্ডে ফিলিস্তিনি মিশনের মর্যাদা দূতাবাসে উন্নীত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র থেকে আয়ারল্যান্ডে একজন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হবে।

মার্টিন বলেছেন, ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি একটি প্রক্রিয়ার শেষ নয়; বরং শুরু। এটা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী পারস্পরিক উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে।

ঘোষণার আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস। তিনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এটি বিশ্বকে সংকেত দিচ্ছে যে, একটি দেশ হিসেবে আপনারাও এমন একটি বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ইউরোপের এ তিন দেশ গত কয়েকদিন আগেই ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেবে বলে আসছিল। এ নিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছিল ইসরায়েল। তিন দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরও ইসরায়েল এর কড়া নিন্দা জানায়। তেল আবিব বলেছে, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধের মাঝে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ডের এমন সিদ্ধান্ত হামাসের জন্য পুরস্কার।