ভৈরবের  ভাষা সৈনিক জহিরুল হককে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে  সম্মননা প্রদান। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৪১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৮ Time View

 ২১ ফেব্রুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবের স্থানীয় ভাষা সৈনিক জহিরুল হক (৯৭) কে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেছেন প্রেসক্লাব।

আজ শুক্রবার দুপুরে সাহসী ও প্রবীণ ভাষা সৈনিকের ভৈরবপুরস্থ (দক্ষিণপাড়া) বাসভবনে সম্মাননা স্মারক তুলেন প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে  ভৈরবের সাংবাদিক সমাজ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, টিভি জানার্লিস্ট এসোসিয়েশন সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন মোল্লা, ভৈরব প্রেসক্লাব সদস্য সচিব সোহেলুর রহমান, সাংবাদিক সত্যজিৎ দাস ধ্রুব, তুহিন মোল্লা, আদিলুর রহমান, এমএ হালিম, রাজীবুল হাসান, মিলাদ হোসেন অপু, আরিফুল ইসলাম মামুন, আফসার হোসেন তুর্যা, ইমন আহমেদ প্রমূখ। 

স্থানীয় ভাষা সৈনিক জহিরুল হক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি সচেতন ও ক্রীড়ার প্রতি জহিরুল হকের প্রবল আকর্ষণ ছিল। তিনি যখন ভৈরব কেবি হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র তখনই তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মওলানা ভাসানীর ভক্ত ছিলেন ও তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। সিলেট পাকিস্তান না ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে ১৯৪৮ সালের ওই গণভোটের আন্দোলনে তিনি কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে গণমুক্তি ফৌজ গঠিত হলে তিনি উক্ত সংগঠনের মাধ্যমে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শিবপুর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ভাসানী ন্যাপ ও পরবর্তীতে বিএনপির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ভৈরব পৌরসভায় দুইবার তিনি নির্বাচিত কাউন্সিলর ছাড়াও বহু সামাজিক আন্দোলন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অগ্রণী দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৯  সাল থেকেই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছে । এরপর জিন্নাহ সাহেব যখন ঢাকার সভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তখন ছাত্র-জনতার প্রতিবাদের ঢেউ ভৈরবেও এসে লাগে। এখানকার ছাত্ররাও তখন প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ৫২ সালে তিনি তখন ভৈরব কেবি হাই স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে পড়তেন। তখনই তিনি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। ঢাকার প্রতিটি কর্মসূচি ভৈরবে তারা পালন করেছেন। কলেজ ও স্কুলের ছাত্রদের ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিটি কর্মসূচিতেই ছাত্ররা অংশ নিত। মিছিলগুলো শহরের সড়কগুলো বিভিন্ন স্লোগানসহ প্রদক্ষিণ করে রেল স্টেশন ও ভৈরব রাজকাচারী প্রাঙ্গণে সভা করত। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তৎকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। 

এর আগে, ২০০৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ভৈরব প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানসহ জহিরুল হক ও আবদুল মতিন স্থানীয় দুই ভাষা সৈনিকদের সম্মানে সংবর্ধনা দেয়া হয়। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে  এক সঙ্গে তিন জমজ ছেলে সন্তান জন্ম নিল। খুশি দম্পতি তবে চিন্তিত তাদের ভরণপোষণ নিয়ে। 

ভৈরবের  ভাষা সৈনিক জহিরুল হককে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে  সম্মননা প্রদান। 

Update Time : ০২:৪১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 ২১ ফেব্রুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবের স্থানীয় ভাষা সৈনিক জহিরুল হক (৯৭) কে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেছেন প্রেসক্লাব।

আজ শুক্রবার দুপুরে সাহসী ও প্রবীণ ভাষা সৈনিকের ভৈরবপুরস্থ (দক্ষিণপাড়া) বাসভবনে সম্মাননা স্মারক তুলেন প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে  ভৈরবের সাংবাদিক সমাজ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, টিভি জানার্লিস্ট এসোসিয়েশন সভাপতি আসাদুজ্জামান ফারুক, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমন মোল্লা, ভৈরব প্রেসক্লাব সদস্য সচিব সোহেলুর রহমান, সাংবাদিক সত্যজিৎ দাস ধ্রুব, তুহিন মোল্লা, আদিলুর রহমান, এমএ হালিম, রাজীবুল হাসান, মিলাদ হোসেন অপু, আরিফুল ইসলাম মামুন, আফসার হোসেন তুর্যা, ইমন আহমেদ প্রমূখ। 

স্থানীয় ভাষা সৈনিক জহিরুল হক ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি সচেতন ও ক্রীড়ার প্রতি জহিরুল হকের প্রবল আকর্ষণ ছিল। তিনি যখন ভৈরব কেবি হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্র তখনই তিনি ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মওলানা ভাসানীর ভক্ত ছিলেন ও তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেছিলেন। সিলেট পাকিস্তান না ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে ১৯৪৮ সালের ওই গণভোটের আন্দোলনে তিনি কাজ করেছেন। ১৯৭১ সালে বিএনপির মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে গণমুক্তি ফৌজ গঠিত হলে তিনি উক্ত সংগঠনের মাধ্যমে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শিবপুর এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি ভাসানী ন্যাপ ও পরবর্তীতে বিএনপির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ভৈরব পৌরসভায় দুইবার তিনি নির্বাচিত কাউন্সিলর ছাড়াও বহু সামাজিক আন্দোলন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে অগ্রণী দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৯  সাল থেকেই ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছে । এরপর জিন্নাহ সাহেব যখন ঢাকার সভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা তখন ছাত্র-জনতার প্রতিবাদের ঢেউ ভৈরবেও এসে লাগে। এখানকার ছাত্ররাও তখন প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। ৫২ সালে তিনি তখন ভৈরব কেবি হাই স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে পড়তেন। তখনই তিনি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে কাজ করেছেন। ঢাকার প্রতিটি কর্মসূচি ভৈরবে তারা পালন করেছেন। কলেজ ও স্কুলের ছাত্রদের ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিটি কর্মসূচিতেই ছাত্ররা অংশ নিত। মিছিলগুলো শহরের সড়কগুলো বিভিন্ন স্লোগানসহ প্রদক্ষিণ করে রেল স্টেশন ও ভৈরব রাজকাচারী প্রাঙ্গণে সভা করত। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান তৎকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। 

এর আগে, ২০০৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ভৈরব প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানসহ জহিরুল হক ও আবদুল মতিন স্থানীয় দুই ভাষা সৈনিকদের সম্মানে সংবর্ধনা দেয়া হয়।