২৮ মে, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রচারনায় একে অপরের বিরুদ্ধে করছে সমালোচনা, বক্তৃতায় চলছে কাদাঁছুড়াছুড়ি। এতে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। আগামী ৫ জুন ভৈরবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ৪ জন এবং বিএনপির ১ জন। প্রার্থীরা হলো উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম সেন্টু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক অলিউর রহমান অলি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বুলবুল। এছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছে উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আল – মামুন। ইতিমধ্যই তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এলাকার ভোটারদের মতে এবারের নির্বাচনে মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সেন্টু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনসুরের মধ্য। ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অপর তিন প্রার্থীর জয় – পরাজয় নিয়ে ভোটারদের কোন মাথা ব্যথা নেই। কারন তারা তিনজন প্রচারনায় পিছিয়ে আছে বা বিজয়ের বিষয়ে নিশ্বিত নয়।
উপজেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম সেন্টুর পক্ষে নির্বাচনে প্রচারনায় নেমেছে দলের সহ- সভাপতি জাকির হোসেন কাজল, অহিদ মিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লিটন ও হারুনুর রশিদ এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হেকিম রায়হান, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জামাল, বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একাধিক সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ একাধিক সংখ্যক নেতৃবৃন্দ।
অপরদিকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুরের পক্ষে প্রচারনায় রয়েছেন ভৈরব পৌরসভার মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেফাতউল্লাহ, ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রিপন, হুমায়ূন কবির, শাহরিয়ার কবির, শফিকুল ইসলাম, সাফায়েতউল্লাহ, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মির্জা সুলাইমান, রফিকুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মোঃ আল- আমিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক মিয়া, কায়সার আহমেদ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোস্তাক আহমেদ বুলবুল ও অলিউর রহমান অলির সাথে দলের কোন নেতাকর্মী প্রচারনায় অংশ নিতে দেখা যাচ্ছেনা। তারা দুজন এককভাবে প্রচারনায় নেমে ভোট প্রার্থনা করছে। বিএনপির বিদ্রোহ প্রার্থী আল – মামুন এককভাবে প্রচারনা করলেও তার সাথে দলীয় কোন নেতাকর্মী অংশ নিচ্ছেনা।
জাহাংগীর আলম সেন্টু ও আবুল মনসুরের যার যার পক্ষের সমর্থক নেতৃবৃন্দ পথসভা, জনসভা, সমাবেশ, মিছিলে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষেধাকার ও বিদ্বেশমুলক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে প্রচারনায়। আবার বলছেন তারা নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন করবে, মানুষের সেবা করবে। তাদের দুজনের এসব বিদ্বেশমুলক বক্তব্যে দলের নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ ভোটারগন বিব্রত পরিস্থিতিতে রয়েছেন। ভোটারদের মতে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড এবারের নির্বাচনে ৪ প্রার্থীর মধ্য সমঝোতা করে দিয়ে একজন প্রার্থী করা উচিত ছিল। কিন্ত তা না করায় ভৈরবে দল এখন দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কাদাঁছুড়াছুড়ি বেড়ে গেছে নির্বাচনে। নির্বাচনের পর যিনিই চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন, দুটি পক্ষের মধ্য বিরোধ চরম আকার ধারন করতে পারে ভোটারদের ধারনা। এতে আগামীতে আ,লীগ দলের কর্মকান্ডে বিশাল ক্ষতির কারন হতে পারে, এমনটা ধারনা করছেন এলাকাবাসী।
এবিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আবুল মনসুর বলেন, বর্তমানে জাহাংগীর আলম সেন্টু দলের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন, তারপরও তার চেয়ারম্যান হতে হবে কেন। তার দুটো পদই লাগবে, আর আমরা দলের জন্য জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করে পদে থাকতে পারবনা এটা কেন হবে । জনগনের সমর্থনে আমি প্রার্থী হয়েছি। দলের বঞ্চিতরা আমার পাশে আছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবেনা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহাংগীর আলম সেন্টু বলেন, ভোটারগন ও জনতা চাইলে দুই পদে থাকতে সমস্যা কি। সাধারণ সম্পাদক পদটি সেবামূলক। এলাকার উন্নয়ন করার কোন সুযোগ নেই। আর চেয়ারম্যান হলে এলাকার মানুষের সেবাসহ সহজে উন্নয়ন করা সম্ভব। জনগন আমাকে চাই তা প্রমান হচ্ছে আমার সভা সমাবেশে। ব্যাপক সংখ্যক কর্মী আমার পক্ষে কাজ করছে। ভোটারদের অনুরোধ ও ভালবাসায় আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতিপক্ষের অপপ্রচারে কাজ হবেনা। তিনি বলেন নির্বাচনে ভোটারগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে আমার বিশ্বাস।