ভৈরবের অনুষ্ঠানে গণ-অভ্যুর্থনে ঢাকায় নিহত জোবায়েদের মা নিজে কাঁদলেন অন্যকে কাঁদালেন।। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • ৬০ Time View

২৯ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 গণ-অভ্যুর্থনে ঢাকায় গুলিতে নিহত জোবায়েদ এর মা হোসনে আরা বেগম ভৈরবের একটি অনুষ্ঠানে নিজে কাঁদলেন অন্যকে কাঁদালেন। অনুষ্ঠানে তার ছেলে নিহতের ঘটনার বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি অঝোরে কেঁদে কেঁদে ৪ আগস্ট ঘটনার দিন কিভাবে সে মারা গেল বর্ণনা দেন। এসময় ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিনসহ মঞ্চের অতিথিগনসহ অনুষ্ঠানে আগতদের সকলের চোখে পানি চলে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত, উপজেলা পরিষদ হলরুমে ” ২০২৪ সালে জুলাই- আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার  গণ- অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এক স্মরণসভা ” অনুষ্ঠিত হয়। এসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহম্মদ, থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া। এছাড়া শহিদ পরিবারের দুজন ও কয়েকজন আহতসহ সমাজের সুধীজন ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীগন  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভা অনুষ্ঠানে নরসিংদিতে ৪ আগস্ট গুলিতে নিহত ভৈরবের গোছামারা গ্রামের কবির মিয়ার স্ত্রী সামিয়া বেগম ও পৌর শহরের জগনাথপুর গ্রামের গুরুতর আহত মামুন বেদনাবেধোর বক্তব্য দেন। সামিয়া তার স্বামী নিহতের বর্ণনা দেয়। মামুন বলেছেন ছাত্র- জনতার আন্দোলনের দিন গত ১৯ জুলাই কিভাবে তার হাতটি কাটা গেল।

নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম  মঞ্চে বসে অঝোরে কেঁদে কেঁদে তার ছেলে ঘটনার দিন ৪ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় কিভাবে মৃত্যু হলো সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তার কান্না আজাহারিতে উপস্থিত অতিথিগনসহ অন্যরা কেঁদেছেন। তিনি বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে শনির আখড়া ভাড়া বাসায় থাকতাম।  আমার ছেলে জোবায়েদ ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়। বিকাল পর্যন্ত সে বাসায় না ফেরায় আমি চিন্তায় পড়ে যায়। সে যাত্রাবাড়ীর রাসেল মিয়ার ফার্নিচারের দোকানে কাজ করত। পরে খোঁজ- খবর নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ পায়। লোকজন বলেছে জোবায়েদ যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। লাশে দেখা যায় তার চোখে ও শরীরে একাধিক গুলির চিন্হ ছিল। তার মৃত্যুর পর ভৈরবে লাশ এনে দাফন করি। গত তিনমাস যাবত আমি ছেলের চিন্তায় ঘুমাতে পারিনা, খেতে পারিনা। আমার তরতজা ভাল ছেলেটা গুলিতে এভাবে মারা যাবে কোনদিন ভাবতে পারেনি। বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি চোখের জলে জ্ঞান হারানোর অবস্থা হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে বার বার শান্তনা দিয়েছেন। তার চোখের পানি, কান্না দেখে উপস্থিত সকলেই কেঁদেছেন। জোবায়েদের মৃত্যুটি ছিল হৃদয়বিদারক তার মায়ের বক্তব্যে তা বুঝা গেল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে  এক সঙ্গে তিন জমজ ছেলে সন্তান জন্ম নিল। খুশি দম্পতি তবে চিন্তিত তাদের ভরণপোষণ নিয়ে। 

ভৈরবের অনুষ্ঠানে গণ-অভ্যুর্থনে ঢাকায় নিহত জোবায়েদের মা নিজে কাঁদলেন অন্যকে কাঁদালেন।। 

Update Time : ১২:৫৪:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

২৯ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 গণ-অভ্যুর্থনে ঢাকায় গুলিতে নিহত জোবায়েদ এর মা হোসনে আরা বেগম ভৈরবের একটি অনুষ্ঠানে নিজে কাঁদলেন অন্যকে কাঁদালেন। অনুষ্ঠানে তার ছেলে নিহতের ঘটনার বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি অঝোরে কেঁদে কেঁদে ৪ আগস্ট ঘটনার দিন কিভাবে সে মারা গেল বর্ণনা দেন। এসময় ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিনসহ মঞ্চের অতিথিগনসহ অনুষ্ঠানে আগতদের সকলের চোখে পানি চলে আসে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত, উপজেলা পরিষদ হলরুমে ” ২০২৪ সালে জুলাই- আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার  গণ- অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এক স্মরণসভা ” অনুষ্ঠিত হয়। এসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহম্মদ, থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া। এছাড়া শহিদ পরিবারের দুজন ও কয়েকজন আহতসহ সমাজের সুধীজন ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীগন  অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভা অনুষ্ঠানে নরসিংদিতে ৪ আগস্ট গুলিতে নিহত ভৈরবের গোছামারা গ্রামের কবির মিয়ার স্ত্রী সামিয়া বেগম ও পৌর শহরের জগনাথপুর গ্রামের গুরুতর আহত মামুন বেদনাবেধোর বক্তব্য দেন। সামিয়া তার স্বামী নিহতের বর্ণনা দেয়। মামুন বলেছেন ছাত্র- জনতার আন্দোলনের দিন গত ১৯ জুলাই কিভাবে তার হাতটি কাটা গেল।

নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম  মঞ্চে বসে অঝোরে কেঁদে কেঁদে তার ছেলে ঘটনার দিন ৪ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় কিভাবে মৃত্যু হলো সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তার কান্না আজাহারিতে উপস্থিত অতিথিগনসহ অন্যরা কেঁদেছেন। তিনি বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে শনির আখড়া ভাড়া বাসায় থাকতাম।  আমার ছেলে জোবায়েদ ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হয়। বিকাল পর্যন্ত সে বাসায় না ফেরায় আমি চিন্তায় পড়ে যায়। সে যাত্রাবাড়ীর রাসেল মিয়ার ফার্নিচারের দোকানে কাজ করত। পরে খোঁজ- খবর নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ পায়। লোকজন বলেছে জোবায়েদ যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। লাশে দেখা যায় তার চোখে ও শরীরে একাধিক গুলির চিন্হ ছিল। তার মৃত্যুর পর ভৈরবে লাশ এনে দাফন করি। গত তিনমাস যাবত আমি ছেলের চিন্তায় ঘুমাতে পারিনা, খেতে পারিনা। আমার তরতজা ভাল ছেলেটা গুলিতে এভাবে মারা যাবে কোনদিন ভাবতে পারেনি। বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি চোখের জলে জ্ঞান হারানোর অবস্থা হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে বার বার শান্তনা দিয়েছেন। তার চোখের পানি, কান্না দেখে উপস্থিত সকলেই কেঁদেছেন। জোবায়েদের মৃত্যুটি ছিল হৃদয়বিদারক তার মায়ের বক্তব্যে তা বুঝা গেল।