ভৈরবে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। আহত ২০ জন।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • ১৯ Time View

২২ মার্চ, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

 ভৈরবে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের   ঘটনায় ২০  জন আহত হয়েছে। এ সময় বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত  পৌর শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুর এলাকায়  এ ঘটনা ঘটে।

এঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার সকাল থেকে আবারও দুটি পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।  খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল শুক্রবার রাতের ঘটনায় ১৫ জন ও আজ শনিবার ৫ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। 

এ ঘটনায় আহত আল আমিন, মিনারা বেগম, জিয়াসমিন আক্তার, মহিন মিয়া, শিপন মিয়া, মমতা বেগম ও অজুফা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

গুরুতর আহত অজুফা বেগমকে আজ শনিবার সকালে  কিশোরগঞ্জের  সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

জানা গেছে, গত বুধবার জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুরের ডেঙ্গাবাড়ির জীবন মিয়ার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেনেন একই এলাকার মাক্কুম মোল্লা ফ্যাক্টরির কর্মচারী জিহাদ মিয়া। পরদিন সন্ধ্যায় জীবন মিয়া টাকা না দিয়ে সেই ফোন জিহাদ মিয়ার কাছ থেকে ফেরত নেন। এলাকার  আগারবাড়ির শিপন মিয়া এর প্রতিবাদ করলে দুই পক্ষের মধ্য  কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকালে সালিশ বসানো হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ফের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় আগারবাড়ির সমর্থকরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিজেদের লোকজনকে জড়ো হতে বলে। মাইকের  ঘোষণা শুনে দুই পক্ষই দা, বল্লম, টেঁটা, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার রাতে  ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুই পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। উভয় পক্ষের ২০টি দোকান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। আজ শনিবার সকালে একই ঘটনায় দুই পক্ষ  আবারও মাইকে ঘোষনা দিয়ে  সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ৫ জন আহত হয়। দুদিনের ঘটনায় মোট ২০ জন আহত হয়। 

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফরহাদ মিয়া, কাল্লু মিয়া ও নাদিম মিয়া বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে দোকানের মালপত্র তুলেছি। আমরা ঝগড়ায় ছিলাম না। এর পরও দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। বাড়িঘরেও হামলা হয়েছে। আমরা  বিচার চাই।

আগারবাড়ির শিপন মিয়া বলেন, ডেঙ্গাবাড়ির জীবন চুরি করা ফোন জিহাদ নামে এক শ্রমিকের কাছে বিক্রি করে আবার ফেরত নেয়। প্রতিবাদ করলে হামলা করে। সকালে সালিশেও হামলা চালায় তারা। বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। শনিবার তারা আবারও হামলা করে। 

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ফুহাদ রুহানী জানান, একটি মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে দুদিন যাবত সংঘর্ষ হয়েছে।  সেনাসদস্যদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।  উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত  ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে মসজিদের মাইকে ঘোষনা দিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। আহত ২০ জন।

Update Time : ০১:৫৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

২২ মার্চ, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

 ভৈরবে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের   ঘটনায় ২০  জন আহত হয়েছে। এ সময় বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত  পৌর শহরের জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুর এলাকায়  এ ঘটনা ঘটে।

এঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ শনিবার সকাল থেকে আবারও দুটি পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।  খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গতকাল শুক্রবার রাতের ঘটনায় ১৫ জন ও আজ শনিবার ৫ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। 

এ ঘটনায় আহত আল আমিন, মিনারা বেগম, জিয়াসমিন আক্তার, মহিন মিয়া, শিপন মিয়া, মমতা বেগম ও অজুফা বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

গুরুতর আহত অজুফা বেগমকে আজ শনিবার সকালে  কিশোরগঞ্জের  সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

জানা গেছে, গত বুধবার জগন্নাথপুরের লক্ষ্মীপুরের ডেঙ্গাবাড়ির জীবন মিয়ার কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেনেন একই এলাকার মাক্কুম মোল্লা ফ্যাক্টরির কর্মচারী জিহাদ মিয়া। পরদিন সন্ধ্যায় জীবন মিয়া টাকা না দিয়ে সেই ফোন জিহাদ মিয়ার কাছ থেকে ফেরত নেন। এলাকার  আগারবাড়ির শিপন মিয়া এর প্রতিবাদ করলে দুই পক্ষের মধ্য  কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার সকালে সালিশ বসানো হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ফের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় আগারবাড়ির সমর্থকরা মাইকে ঘোষণা দিয়ে নিজেদের লোকজনকে জড়ো হতে বলে। মাইকের  ঘোষণা শুনে দুই পক্ষই দা, বল্লম, টেঁটা, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার রাতে  ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় দুই পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। উভয় পক্ষের ২০টি দোকান ও বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। আজ শনিবার সকালে একই ঘটনায় দুই পক্ষ  আবারও মাইকে ঘোষনা দিয়ে  সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ৫ জন আহত হয়। দুদিনের ঘটনায় মোট ২০ জন আহত হয়। 

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ফরহাদ মিয়া, কাল্লু মিয়া ও নাদিম মিয়া বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধারদেনা করে দোকানের মালপত্র তুলেছি। আমরা ঝগড়ায় ছিলাম না। এর পরও দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। বাড়িঘরেও হামলা হয়েছে। আমরা  বিচার চাই।

আগারবাড়ির শিপন মিয়া বলেন, ডেঙ্গাবাড়ির জীবন চুরি করা ফোন জিহাদ নামে এক শ্রমিকের কাছে বিক্রি করে আবার ফেরত নেয়। প্রতিবাদ করলে হামলা করে। সকালে সালিশেও হামলা চালায় তারা। বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। শনিবার তারা আবারও হামলা করে। 

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ফুহাদ রুহানী জানান, একটি মোবাইল কেনাকে কেন্দ্র করে দুদিন যাবত সংঘর্ষ হয়েছে।  সেনাসদস্যদের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে।  উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত  ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।