৬ সেপ্টেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
ভৈরবের মেঘনা নদীতে ড্রেজারে বালু উত্তোলন নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আশুগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফে মোহাম্মদ ছড়া’র গাড়ী চালক মমিন মিয়া বাদী হয়ে ড্রেজার মালিকের সহকর্মী ৭ জনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা করে (মামলা নং – ০১) । আসামীরা হলো মোঃ তারেক মিয়া(৫০), রাজু মিয়া (৪০), ইমন (৪২), লাদেন (২৮), মানিক (২৫), মাসুদ মোল্লা (৩৮), সোহান মিয়া (৩৬)। অপরদিকে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার মেসার্স নাগিব এন্টারপ্রাইজের মালিক তানভির আহমেদ নাগিব গত বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্যাট আদালতে আশুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন বলে তিনি জানান। এই ঘটনায় গত কয়েকদিন যাবত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আজ শনিবার সকাল ১১ টায় ভৈরব প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ইজারাদার তানভির আহমেদ নাগিব দ্বিতীয়বারের মত সংবাদ সন্মেলনে এক অভিযোগে বিষয়টি জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইজারাদারের পাটনার আরিফুল ইসলাম সুজন, হানিফ মিয়া, মামুন মিয়া, লিটন মিয়া প্রমূখ। এর আগে তারা গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সন্মেলন করেছিল। আজ সংবাদ সন্মেলনে স্থানীয় সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সন্মোলনে ইজারাদার তানভির আহমেদ নাগিব জানান, আমরা কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ১৪ মে মেঘনা নদীর ভৈরব অংশে মোট ১৬১০.২৫৮ একর নদী শ্রেনীর ভূমি ১৪৩২ বাংলা সনের জন্য ১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা ইজারা মূল্য দিয়ে টাকা পরিশোধ করে ৯ কোটি ১৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৫ ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য ইজারাপ্রাপ্ত হয়েছি। ইজারা প্রাপ্তির পর মেঘনা নদীর ভৈরব প্রান্ত থেকে বালু উত্তোলনে আশুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বার বার বাধাগ্রস্থ করে আমাদের ক্ষতিগ্রস্থ করছেন। ইউএনও’র দাবি নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে হলে তাকে প্রতিদিন একলাখ টাকা ঘূষ দিতে হবে। দাবির এতটাকা দেয়া সম্ভব নয় তিনি জানালে গত ২ সেপ্টেম্বর সকালে ইউএনও মেঘনা নদীতে এসে ইজারাদারের ৪ টি ড্রেজার ও ৫ টি বাল্কহেড নৌকা জব্দ করে। এদিন ইজারাদারের দুইজন কর্মচারীকে ইউএনও ভ্রাম্যমান আদালতে এক বছর করে কারাদন্ড প্রদান করে এবং ড্রেজারে গচ্ছিত বালু বিক্রির ১২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে এদিন রাতে ইউএনও ৭ জনকে আসামী করে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা করে। ইজারাদার তানভির আহমেদ বলেন, পরে আমরা বিষয়টি কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে অবগত করি। এছাড়া ঘটনায় আমরা কিশোরগঞ্জ আদালতে ইউএনও’র বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছি।
এবিষয়ে আশুগঞ্জের ইউএনও রাফে মোহাম্মদ ছড়া ইজারাদারের অভিযোগ খন্ডন করে যুগান্তরকে বলেন, তাদের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, অসত্য। তিনি বলেন ইজারাদারের লোকজন ভৈরব প্রান্তের বাইরে এসে আশুগঞ্জের মোজায় এসে প্রতিদিন একাধিক ড্রেজারে বালু উত্তোলন করার কারনে আশুগঞ্জে অবস্থিত বিদ্যুতের বিশাল টাওয়ারটি হুমকির মুখে পড়েছে। বালু উত্তোলনের কারনে টাওয়ারটি পড়ে গেলে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হলে সারাদেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তারা ভৈরব প্রান্তের বাইরে আশুগঞ্জ এলাকায় এসে বালু উত্তোলন করার কারনে আমি ড্রেজার ও বাল্কহেড জব্দ করে দুইজনকে কারাদন্ড প্রদান করি। ঘটনার সময় ইজারাদারের লোকজন আমার সাথে খারাপ আচরণ করে, আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের টাকার ব্যাগ লুট ও প্রতিদিন একলাখ টাকা দাবির কথা তিনি অস্বীকার করেন। তারা সরকারী কাজে বাধা প্রদানসহ আমাকে হুমকি দেয়ায় মামলা করা হয় বলে তিনি দাবি করেন।