ভৈরবে  দুপক্ষের সংঘর্ষ।। দোকানপাট ভাংচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ। আহত -১৫।।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৪৩ Time View

২৫ আগস্ট,  নিজস্ব  প্রতিনিধি

 ভৈরবে মধ্যরাতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে শহরের ভৈরবপুর  উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল রোববার (২৪ আগস্ট) রাত ১টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ককটেল বিস্ফোরণ, দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আহতরা হলো মহিউদ্দিন (৩০), রিয়াদ (১৮), রুমি (২৫), বাবু (২৭), সুমন (৪৫), আলভি (২২), ছাব্বির ( ২৩), ইয়ান (২৬), রাহাত (১৯)। আহতদের মধ্য গুরুতর আহত রিয়াদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। 

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১২ টার দিকে ভৈরব বাজার কলাপট্রিতে এশিয়া নামক আবাসিক হোটেলের ময়লা নিচে ফেলাকে কেন্দ্র করে ওমানের ভাইয়ের সাথে ঝগড়া হয়। এসময় হোটেলের ম্যানেজার মহিউদ্দিনকে মারধোর করে আহত করে ওমানের দলবল। ওমানের বাসা ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এবং আহত মহিউদ্দিনের বাসা ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া। এখবর রাত দেড়টায় যার যার এলাকায় পৌঁছলে ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এলাকার মসজিদে মাইক দিয়ে প্রচার করা হয় দক্ষিণ পাড়ার লোকজন উত্তরপাড়ার এলাকায় হামলা চালিয়েছে। মাইকের প্রচার শুনে লোকজন রাস্তায় নেমে আসে। এদিকে দক্ষিণ পাড়ার লোকজন মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন আহতের খবর শুনে উত্তরপাড়ার একটি মার্কেটে কয়েকটি দোকান ভাঙ্গচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে। এসময় উত্তর পাড়ার লোকজনও দক্ষিণ পাড়া এলাকায় কয়েকটি দোকান ভাঙ্গচুর করে। এসময় উভয় পক্ষ রামদা, লাঠি, ইটপাটকেল ব্যবহার করে।  এসংঘর্ষ রাত ৩ টা পর্যন্ত চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

পরে আজ সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘর্ষ থেমে থেমে চলতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রষের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। সোমবার   বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ)  মাহমুদ আলম, ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিন, থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)  খন্দকার ফূয়াদ রুহানীসহ পুলিশের দল,  র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে শান্ত করেন। এসময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম, এনসিপি’র স্থানীয় নেতা শরিফুল হক জয়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও গতকাল রোববার রাত ১০ টায় পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায়  দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৮/১০ জন আহত হয় এলাকার পাগলা বাড়ী ও পর্শ্বিম পাড়ার সাথে তুচ্ছ ঘটনায় প্রথমে ঝগড়া এবং পরে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১ টায় পরিস্থিতি শান্ত করে।

এবিষয় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আমরা বসে মীমাংসা করব। সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন এখন থেকে দুই পক্ষের কেউ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হলে অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবেনা। 

সোমবার বিকেল ৫ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) মাহমুদ আলম ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। তারা বলেন, আবার সংঘর্ষ বাঁধলে অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবেনা। ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকার নেতৃবৃন্দ বিষয়টি মীমাংসা করতে তিনি নির্দেশ দেন। তিনি বলেন রোববার রাতে চন্ডিবের এলাকায়ও তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ হয়েছে। এলাকাবাসী এসব বিষয়গুলি নিয়ে মীমাংসা করার পরামর্শ দেন তিনি। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা -২৫ পেছানো দাবি ডিলার এসোসিয়েশনের। যৌক্তিক কমিশন নির্ধারণ করার দাবি। 

ভৈরবে  দুপক্ষের সংঘর্ষ।। দোকানপাট ভাংচুর, লুট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ। আহত -১৫।।

Update Time : ০১:৫৬:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

২৫ আগস্ট,  নিজস্ব  প্রতিনিধি

 ভৈরবে মধ্যরাতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে শহরের ভৈরবপুর  উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল রোববার (২৪ আগস্ট) রাত ১টার দিকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ককটেল বিস্ফোরণ, দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট এবং একটি মার্কেটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আহতরা হলো মহিউদ্দিন (৩০), রিয়াদ (১৮), রুমি (২৫), বাবু (২৭), সুমন (৪৫), আলভি (২২), ছাব্বির ( ২৩), ইয়ান (২৬), রাহাত (১৯)। আহতদের মধ্য গুরুতর আহত রিয়াদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। 

স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১২ টার দিকে ভৈরব বাজার কলাপট্রিতে এশিয়া নামক আবাসিক হোটেলের ময়লা নিচে ফেলাকে কেন্দ্র করে ওমানের ভাইয়ের সাথে ঝগড়া হয়। এসময় হোটেলের ম্যানেজার মহিউদ্দিনকে মারধোর করে আহত করে ওমানের দলবল। ওমানের বাসা ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এবং আহত মহিউদ্দিনের বাসা ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া। এখবর রাত দেড়টায় যার যার এলাকায় পৌঁছলে ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এলাকার মসজিদে মাইক দিয়ে প্রচার করা হয় দক্ষিণ পাড়ার লোকজন উত্তরপাড়ার এলাকায় হামলা চালিয়েছে। মাইকের প্রচার শুনে লোকজন রাস্তায় নেমে আসে। এদিকে দক্ষিণ পাড়ার লোকজন মহিউদ্দিনসহ কয়েকজন আহতের খবর শুনে উত্তরপাড়ার একটি মার্কেটে কয়েকটি দোকান ভাঙ্গচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে। এসময় উত্তর পাড়ার লোকজনও দক্ষিণ পাড়া এলাকায় কয়েকটি দোকান ভাঙ্গচুর করে। এসময় উভয় পক্ষ রামদা, লাঠি, ইটপাটকেল ব্যবহার করে।  এসংঘর্ষ রাত ৩ টা পর্যন্ত চলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

পরে আজ সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুই পক্ষের সংঘর্ষ থেমে থেমে চলতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রষের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। সোমবার   বিকাল ৫ টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ)  মাহমুদ আলম, ভৈরব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিন, থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)  খন্দকার ফূয়াদ রুহানীসহ পুলিশের দল,  র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে শান্ত করেন। এসময় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম, এনসিপি’র স্থানীয় নেতা শরিফুল হক জয়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, গণমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও গতকাল রোববার রাত ১০ টায় পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায় তুচ্ছ ঘটনায়  দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৮/১০ জন আহত হয় এলাকার পাগলা বাড়ী ও পর্শ্বিম পাড়ার সাথে তুচ্ছ ঘটনায় প্রথমে ঝগড়া এবং পরে সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১ টায় পরিস্থিতি শান্ত করে।

এবিষয় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি আমরা বসে মীমাংসা করব। সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন এখন থেকে দুই পক্ষের কেউ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হলে অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবেনা। 

সোমবার বিকেল ৫ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) মাহমুদ আলম ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। তারা বলেন, আবার সংঘর্ষ বাঁধলে অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবেনা। ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় ঘটনাটি ঘটেছে। এলাকার নেতৃবৃন্দ বিষয়টি মীমাংসা করতে তিনি নির্দেশ দেন। তিনি বলেন রোববার রাতে চন্ডিবের এলাকায়ও তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ হয়েছে। এলাকাবাসী এসব বিষয়গুলি নিয়ে মীমাংসা করার পরামর্শ দেন তিনি।