ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নে জটিলতা।। মালিকদের অভিযোগ  দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে নবায়ন হচ্ছেনা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৫১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
  • ২৩৩ Time View

৩০ জুলাই, বিশেষ  প্রতিনিধি

ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সরকারী বিধি মোতাবেক   প্রতিষ্ঠানগুলির পরিচালনায় প্রতিবছর লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। লাইসেন্স নবায়নে একাধিক কাগজপত্র সংযুক্ত করে প্রতিবছর জেলার সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ঢাকার স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি ( হেলথ) এর কাছে আবেদন করতে হয়। তার মধ্য কয়েকটি কাগজপত্রের সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট জমা দিতে হয়। কিন্ত মাদকদ্রব্য অফিস  থেকে বলা হচ্ছে ক্লিনিক বা হাসপাতালের নবায়ন  লাইসেন্স দাখিল করলে তারা পারমিট দিবেন। অপরদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি ( হেলথ) অফিস থেকে বলা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট ছাড়া নবায়ন করা যাবেনা। অর্থাৎ দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে বেসরকারী  হাসপাতাল – ক্লিনিক মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলির কয়েক বছর যাবত  নবায়ন করতে পারছেনা। কোন কোন প্রতিষ্ঠান ৩/৪ বছর আগে  আবেদন করেও এখনও নবায়ন করতে পারেনি। ফলে নবায়ন ছাড়াই অবৈধভাবে  চলছে ভৈরবের একাধিক বেসরকারী ক্লিনিক – হাসপাতাল। ভৈরবের বেসরকারী হাসাপাতাল ক্লিনিক  মালিক সমিতির পক্ষ থেকে যুগান্তরের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন তারা। জানা গেছে ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের সংখ্যা প্রায় ৩০ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে,  তার মধ্য ৪/৫ টি হাসপাতাল মালিক নিজদের প্রভাব খাটিয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে পারলেও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলি এখনও নবায়ন নিয়ে জটিলতায় আছে।

ভৈরবের বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতাল মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন অভিযোগে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কয়েকটি কাগজপত্র লাগে। তার মধ্য পৌর ট্রেড লাইসেন্স ও বর্জব্যবস্থাপনা প্রত্যয়ন, পরিবেশ, ফায়ার, আয়কর সার্টিফিকেট, ভাড়াটিয়া দলিল  বা মালিকানা চুক্তিপত্র এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ পারমিট। সব কাগজপত্র পেলেও আমরা অনেকেই মাদকদ্রব্যে অফিসের পারমিট পাচ্ছিনা। তারা বলছে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন দেখালে তারা পারমিট দিবেন। আবার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে মাদকদ্রব্য অফিসের পারমিট ছাড়া লাইসেন্স নবায়ন করা হবেনা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবির বলেন আমরা দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে পড়েছি। স্থানীয় ২০/২৫ টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও  ৩/৪ বছর যাবত নবায়ন করতে পারছেনা। তবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রভাব খাটিয়ে নবায়ন করেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভৈরবের এক বেসরকারী হাসপাতাল মালিক অভিযোগ করে  বলেন, আমরা ৪ বছর যাবত আবেদন করেও লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছিনা। অথচ ৪/৫ টি হাসপাতাল মালিক কাগজপত্র সম্পন্ন ছাড়া নিজদের প্রভাব খাটিয়ে বা উৎকোচের বিনিময়ে লাইসেন্স নবায়ন করে ফেলেছেন। আমাদের সেই ক্ষমতা না থাকায় লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছিনা। 

এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ এনায়েত হোসেন আজ বুধবার সকালে  মোবাইলে জনপদ সংবাদ  প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ চিঠির মাধামে নির্দেশ দিয়েছেন বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের পর আমাদের অফিস থেকে পারমিট দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলির স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া আমরা পারমিট দিতে পারছিনা।

কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ অভিজিৎ শর্মা জনপদ সংবাদকে  মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে জটিলতা হচ্ছে আমরা স্বীকার করছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে পারেনা, এমনটা নির্দেশনা আছে । এই অবস্থা শুধু ভৈরবে নয় সারা দেশের নিয়ম। তবে এবিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছি। অতি সম্প্রতী একটি চিঠি আমরা পেয়েছি ঢাকা থেকে। চিঠিটি মাদকদ্রব্য অফিসকে দিয়ে বলা হয়েছে তারা যেন প্রতিষ্ঠানগুলির পারমিট দিয়ে দেন। তিনি বলেন আগামী কিছু দিনের মধ্য হয়তো সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সার ডিলার নিয়োগ ও বিতরণ নীতিমালা -২৫ পেছানো দাবি ডিলার এসোসিয়েশনের। যৌক্তিক কমিশন নির্ধারণ করার দাবি। 

ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নে জটিলতা।। মালিকদের অভিযোগ  দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে নবায়ন হচ্ছেনা

Update Time : ০৯:৫১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

৩০ জুলাই, বিশেষ  প্রতিনিধি

ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক ও হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সরকারী বিধি মোতাবেক   প্রতিষ্ঠানগুলির পরিচালনায় প্রতিবছর লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। লাইসেন্স নবায়নে একাধিক কাগজপত্র সংযুক্ত করে প্রতিবছর জেলার সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ঢাকার স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি ( হেলথ) এর কাছে আবেদন করতে হয়। তার মধ্য কয়েকটি কাগজপত্রের সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট জমা দিতে হয়। কিন্ত মাদকদ্রব্য অফিস  থেকে বলা হচ্ছে ক্লিনিক বা হাসপাতালের নবায়ন  লাইসেন্স দাখিল করলে তারা পারমিট দিবেন। অপরদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি ( হেলথ) অফিস থেকে বলা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট ছাড়া নবায়ন করা যাবেনা। অর্থাৎ দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে বেসরকারী  হাসপাতাল – ক্লিনিক মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলির কয়েক বছর যাবত  নবায়ন করতে পারছেনা। কোন কোন প্রতিষ্ঠান ৩/৪ বছর আগে  আবেদন করেও এখনও নবায়ন করতে পারেনি। ফলে নবায়ন ছাড়াই অবৈধভাবে  চলছে ভৈরবের একাধিক বেসরকারী ক্লিনিক – হাসপাতাল। ভৈরবের বেসরকারী হাসাপাতাল ক্লিনিক  মালিক সমিতির পক্ষ থেকে যুগান্তরের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেছেন তারা। জানা গেছে ভৈরবে বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের সংখ্যা প্রায় ৩০ টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে,  তার মধ্য ৪/৫ টি হাসপাতাল মালিক নিজদের প্রভাব খাটিয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে পারলেও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলি এখনও নবায়ন নিয়ে জটিলতায় আছে।

ভৈরবের বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতাল মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মোশারফ হোসেন অভিযোগে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় কয়েকটি কাগজপত্র লাগে। তার মধ্য পৌর ট্রেড লাইসেন্স ও বর্জব্যবস্থাপনা প্রত্যয়ন, পরিবেশ, ফায়ার, আয়কর সার্টিফিকেট, ভাড়াটিয়া দলিল  বা মালিকানা চুক্তিপত্র এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ পারমিট। সব কাগজপত্র পেলেও আমরা অনেকেই মাদকদ্রব্যে অফিসের পারমিট পাচ্ছিনা। তারা বলছে হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন দেখালে তারা পারমিট দিবেন। আবার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে মাদকদ্রব্য অফিসের পারমিট ছাড়া লাইসেন্স নবায়ন করা হবেনা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবির বলেন আমরা দুই কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে পড়েছি। স্থানীয় ২০/২৫ টি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও  ৩/৪ বছর যাবত নবায়ন করতে পারছেনা। তবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রভাব খাটিয়ে নবায়ন করেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভৈরবের এক বেসরকারী হাসপাতাল মালিক অভিযোগ করে  বলেন, আমরা ৪ বছর যাবত আবেদন করেও লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছিনা। অথচ ৪/৫ টি হাসপাতাল মালিক কাগজপত্র সম্পন্ন ছাড়া নিজদের প্রভাব খাটিয়ে বা উৎকোচের বিনিময়ে লাইসেন্স নবায়ন করে ফেলেছেন। আমাদের সেই ক্ষমতা না থাকায় লাইসেন্স নবায়ন করতে পারছিনা। 

এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ এনায়েত হোসেন আজ বুধবার সকালে  মোবাইলে জনপদ সংবাদ  প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ চিঠির মাধামে নির্দেশ দিয়েছেন বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের পর আমাদের অফিস থেকে পারমিট দিতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলির স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স নবায়ন ছাড়া আমরা পারমিট দিতে পারছিনা।

কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ অভিজিৎ শর্মা জনপদ সংবাদকে  মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি নিয়ে জটিলতা হচ্ছে আমরা স্বীকার করছি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের পারমিট ছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগ বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে পারেনা, এমনটা নির্দেশনা আছে । এই অবস্থা শুধু ভৈরবে নয় সারা দেশের নিয়ম। তবে এবিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নজরে দিয়েছি। অতি সম্প্রতী একটি চিঠি আমরা পেয়েছি ঢাকা থেকে। চিঠিটি মাদকদ্রব্য অফিসকে দিয়ে বলা হয়েছে তারা যেন প্রতিষ্ঠানগুলির পারমিট দিয়ে দেন। তিনি বলেন আগামী কিছু দিনের মধ্য হয়তো সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে।