ভৈরবের জামালপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড কলেজ ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • ১০৮ Time View

২৪ জুন, নিজস্ব  প্রতিনিধি

 ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ভবন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পুরা কাজ সম্পূর্ণ না করেই বিল ভাউচারে আগাম স্বাক্ষর নিয়ে সম্পূর্ন  টাকা উত্তোলনের চেক রেডি করেছে প্রকৌশলী । এতে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ  স্থানীয়রা জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজ ২০২৪ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করে। কিন্তু নির্মাণ কাজে  নিম্নমানের বালি, রড, সিমেন্ট, এবং সেগুন কাঠের পরিবর্তে মেহগনি কাঠ ও নিম্নমানের থাই গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। ভবনটির টেকসইতা নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীরা। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের (এডহক কমিটি) সদস্য শাহআলম মিয়া বলেন, “ঠিকাদার ও প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন নির্মাণকাজ শেষ না করেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিমের কাছ থেকে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর নিয়ে নিয়েছেন। এটি একটি বড় ধরণের অনিয়ম এবং এতে প্রধান শিক্ষকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা মনে করি।”

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল জানান, “এর আগেও প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিমের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এবার ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে কাজ শেষ না করার আগেই বিল ভাউচারে তিনি আগাম স্বাক্ষর করেছেন যা নিয়মের মধ্য পড়েনা। 

স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিম বলেন, “আমি কনস্ট্রাকশনের কাজ বুঝি না। প্রকৌশলী রেজাউল হোসেনের অনুরোধে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেছি। তিনি বলেছেন জুনের মধ্য বিলে স্বাক্ষর না করলে টাকা উত্তোলনে সমস্যা হবে তার। মানবিক দিক বিবেচনা করে স্বাক্ষর দিয়েছি।   তবে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, মেহগনি পালার পরিবর্তে ভবিষ্যতে সেগুন কাঠের পালা স্থাপন করা হবে। সাবেক সভাপতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,  আমাকে রাজনৈতিক কারণে ইতিপূর্বে  মিথ্যা অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল।”

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন বলেন, নিম্নমানের  সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়। যেসব জায়গায় মেহগনি কাঠ ব্যবহার হয়েছে, তা পরিবর্তন করে সেগুন কাঠ দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও এখনো চেক প্রদান করা হয়নি। জুন মাস শেষের দিকে বিবেচনায় চেকটি রেডি করা হয়।  কাজ সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়ার দুই মাস পর চেক প্রদান করা হবে বলে তিনি দাবি করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে কলেজ কর্তৃপক্ষের  গাফিলতিতে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি শিক্ষার্থী   মারজিয়া।

ভৈরবের জামালপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড কলেজ ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ। 

Update Time : ০২:২২:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

২৪ জুন, নিজস্ব  প্রতিনিধি

 ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার ভবন নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পুরা কাজ সম্পূর্ণ না করেই বিল ভাউচারে আগাম স্বাক্ষর নিয়ে সম্পূর্ন  টাকা উত্তোলনের চেক রেডি করেছে প্রকৌশলী । এতে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ  স্থানীয়রা জানান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈকত এন্টারপ্রাইজ ২০২৪ সালে ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু করে। কিন্তু নির্মাণ কাজে  নিম্নমানের বালি, রড, সিমেন্ট, এবং সেগুন কাঠের পরিবর্তে মেহগনি কাঠ ও নিম্নমানের থাই গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। ভবনটির টেকসইতা নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্প বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীরা। 

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের (এডহক কমিটি) সদস্য শাহআলম মিয়া বলেন, “ঠিকাদার ও প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন নির্মাণকাজ শেষ না করেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিমের কাছ থেকে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর নিয়ে নিয়েছেন। এটি একটি বড় ধরণের অনিয়ম এবং এতে প্রধান শিক্ষকের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা মনে করি।”

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল জানান, “এর আগেও প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিমের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এবার ভবন নির্মাণে ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে কাজ শেষ না করার আগেই বিল ভাউচারে তিনি আগাম স্বাক্ষর করেছেন যা নিয়মের মধ্য পড়েনা। 

স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিম বলেন, “আমি কনস্ট্রাকশনের কাজ বুঝি না। প্রকৌশলী রেজাউল হোসেনের অনুরোধে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেছি। তিনি বলেছেন জুনের মধ্য বিলে স্বাক্ষর না করলে টাকা উত্তোলনে সমস্যা হবে তার। মানবিক দিক বিবেচনা করে স্বাক্ষর দিয়েছি।   তবে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, মেহগনি পালার পরিবর্তে ভবিষ্যতে সেগুন কাঠের পালা স্থাপন করা হবে। সাবেক সভাপতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,  আমাকে রাজনৈতিক কারণে ইতিপূর্বে  মিথ্যা অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল।”

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী রেজাউল হোসেন বলেন, নিম্নমানের  সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ সঠিক নয়। যেসব জায়গায় মেহগনি কাঠ ব্যবহার হয়েছে, তা পরিবর্তন করে সেগুন কাঠ দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর নেওয়া হলেও এখনো চেক প্রদান করা হয়নি। জুন মাস শেষের দিকে বিবেচনায় চেকটি রেডি করা হয়।  কাজ সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দেওয়ার দুই মাস পর চেক প্রদান করা হবে বলে তিনি দাবি করেন।