ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিসে জেলা প্রশাসকের সাইনবোর্ড সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৫৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • ৩১৩ Time View

১৬ মে, নিজস্ব  প্রতিনিধি

ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিসে হযরত আবুবকর ছিদ্দিক ( রাঃ) জামে মসজিদ ঘোষনা দিয়ে মুসুল্লিরা একটি ব্যানার লাগাই গত মঙ্গলবার। এরপর ভৈরব বাজারের ডাউল ও হলুদ পট্রি এলাকার কিছু ব্যবসায়ী মুসুল্লি গত  দুইদিন নামাজ পড়ে অফিসের একটি কক্ষে। এর আগে গত সোমবার সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের জায়গাটি সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ দল ক্ষমতায় এলে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সায়দুল্লাহ মিয়া তার পদবি ব্যবহার করে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে জায়গাটি লীজ নেয় বলে জানা গেছে। এরপর থেকে সায়দুল্লাহ মিয়া নিয়মিত ভূমি অফিসে লীজের ভাড়া প্রদান করে যাচ্ছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে এদিন দুর্বত্তরা আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেয় এবং অফিসের আসবাপত্র, দরজা জানালা লুট করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে গত ৮ মাস যাবত অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। পরে গত মঙ্গলবার বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীরা অফিসটি মসজিদ ঘোষনা দিয়ে অফিসের একটি রুমে নামাজ পড়তে শুরু করে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক এখবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ অফিসে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। উক্ত সাইনবোর্ডে লেখা ছিল “নিম্ন তফছিল বর্নিত ভূমি সরকারী খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি যাহা জেলা প্রশাসক কিশোরগঞ্জ এর নিয়ন্ত্রণাধীন। উক্ত ভূমিতে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ। মৌজা – ভৈরব, এসএ ও আরওআর -০১, দাগ নং এসএ -৯৯৩৪, আর এস ৭৮১৫, ৭৮১৬, ৭৮১৭, শ্রেনী অকৃষি, পরিমান – ০.২১৯ শতক।

এবিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি এই প্রতিনিধিকে  জানান, অফিসটি একটি সরকারী ১ নং  খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি। এই অফিসটি অনেক আগে থেকে সায়দুল্লাহ মিয়া নামে এক ব্যক্তির  নামে লীজ প্রদান করা হয়। তিনি নিয়মিত সরকারী খাজনা  পরিশোধ করছেন। আমি জানতে পারি তিনি সম্পত্তি লীজ নিয়ে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতন ঘটলে অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এরপর কে বা কারা গত মঙ্গলবার অফিসে মসজিদের ব্যানার লাগিয়ে বেআইনিভাবে দখল করতে চাই। সরকারী সম্পত্তিতে কেউ মসজিদ করতে চাইলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উপজেলা  ভূমি  অফিস থেকে বৈধভাবে ( যদি জেলা প্রশাসক লীজ দেয়ার বিধান থাকে বা সম্মতি দেন)   লীজ নিতে হবে। এমন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের  জেলা প্রশাসক মহোদয় খবরটি শুনে ওই অফিসে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ করেছেন। আমরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গতকাল সাইনবোর্ড লাগিয়েছি অফিসে। তিনি বলেন,  আজকালের মধ্য আমরা  অফিসের গেইট ও প্রবেশদ্বারে বেড়া বা কাটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিব। এই অফিসে বেআইনিভাবে কেউ মসজিদ করার সুযোগ নেই। এখন থেকে সর্বসাধারণের অফিসে প্রবেশ বন্ধ থাকবে।  পরবর্তী সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিসে জেলা প্রশাসকের সাইনবোর্ড সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।

Update Time : ০৭:৫৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

১৬ মে, নিজস্ব  প্রতিনিধি

ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত অফিসে হযরত আবুবকর ছিদ্দিক ( রাঃ) জামে মসজিদ ঘোষনা দিয়ে মুসুল্লিরা একটি ব্যানার লাগাই গত মঙ্গলবার। এরপর ভৈরব বাজারের ডাউল ও হলুদ পট্রি এলাকার কিছু ব্যবসায়ী মুসুল্লি গত  দুইদিন নামাজ পড়ে অফিসের একটি কক্ষে। এর আগে গত সোমবার সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের জায়গাটি সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ দল ক্ষমতায় এলে তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সায়দুল্লাহ মিয়া তার পদবি ব্যবহার করে স্থানীয় ভূমি অফিস থেকে জায়গাটি লীজ নেয় বলে জানা গেছে। এরপর থেকে সায়দুল্লাহ মিয়া নিয়মিত ভূমি অফিসে লীজের ভাড়া প্রদান করে যাচ্ছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে এদিন দুর্বত্তরা আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন দেয় এবং অফিসের আসবাপত্র, দরজা জানালা লুট করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে গত ৮ মাস যাবত অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। পরে গত মঙ্গলবার বাজারের কতিপয় ব্যবসায়ীরা অফিসটি মসজিদ ঘোষনা দিয়ে অফিসের একটি রুমে নামাজ পড়তে শুরু করে। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক এখবর পেয়ে গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা ভূমি অফিসের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ অফিসে একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। উক্ত সাইনবোর্ডে লেখা ছিল “নিম্ন তফছিল বর্নিত ভূমি সরকারী খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি যাহা জেলা প্রশাসক কিশোরগঞ্জ এর নিয়ন্ত্রণাধীন। উক্ত ভূমিতে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ। মৌজা – ভৈরব, এসএ ও আরওআর -০১, দাগ নং এসএ -৯৯৩৪, আর এস ৭৮১৫, ৭৮১৬, ৭৮১৭, শ্রেনী অকৃষি, পরিমান – ০.২১৯ শতক।

এবিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি এই প্রতিনিধিকে  জানান, অফিসটি একটি সরকারী ১ নং  খাস খতিয়ানভূক্ত সম্পত্তি। এই অফিসটি অনেক আগে থেকে সায়দুল্লাহ মিয়া নামে এক ব্যক্তির  নামে লীজ প্রদান করা হয়। তিনি নিয়মিত সরকারী খাজনা  পরিশোধ করছেন। আমি জানতে পারি তিনি সম্পত্তি লীজ নিয়ে দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। ৫ আগস্ট বিগত সরকারের পতন ঘটলে অফিসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এরপর কে বা কারা গত মঙ্গলবার অফিসে মসজিদের ব্যানার লাগিয়ে বেআইনিভাবে দখল করতে চাই। সরকারী সম্পত্তিতে কেউ মসজিদ করতে চাইলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে উপজেলা  ভূমি  অফিস থেকে বৈধভাবে ( যদি জেলা প্রশাসক লীজ দেয়ার বিধান থাকে বা সম্মতি দেন)   লীজ নিতে হবে। এমন অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জের  জেলা প্রশাসক মহোদয় খবরটি শুনে ওই অফিসে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ করেছেন। আমরা জেলা প্রশাসকের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গতকাল সাইনবোর্ড লাগিয়েছি অফিসে। তিনি বলেন,  আজকালের মধ্য আমরা  অফিসের গেইট ও প্রবেশদ্বারে বেড়া বা কাটাতারের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিব। এই অফিসে বেআইনিভাবে কেউ মসজিদ করার সুযোগ নেই। এখন থেকে সর্বসাধারণের অফিসে প্রবেশ বন্ধ থাকবে।  পরবর্তী সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান।