ভৈরবে মৌটুপি গ্রামে ৫৫ বছরে ১৮ খুন, শতাধিক সংঘর্ষ – মামলা । দুই  বংশের আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতার  নেপথ্যে দুই চেয়ারম্যান। অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪৮:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৩ Time View

১৭ এপ্রিল, বিশেষ  প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে ৫৫ বছরে ১৮ টি খুন, শতাধিক মামলা ও আহত হয়েছে সহস্রাধিক লোক। গ্রামের দুটি বংশের আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতাকে কেন্দ্র করে বার বার ঝগড়া সংঘর্ষ লেগেই আছে। এসব বিরোধের নেপথ্যের নায়ক গ্রামের দুইজন ইউপি চেয়ারম্যান। একজন হলো বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সাফায়েত উল্লাহ, অপরজন হলো সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা মোঃ তোফাজ্জল হক। তারা দুজনই তাদের ইউনিয়ন সাদেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান। বর্তমান চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ সরকার বংশের ও সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক কর্তা বংশের। উভয় বংশে পরিবারগুলির লোকসংখ্যা ৭/৮  শ করে।

গত মঙ্গলবার দুটি পক্ষ নতুন করে এলাকায় সংঘর্ষ বাঁধলে উভয় পক্ষের আহত হয় কমপক্ষে ৫০ জন। এদিন গুরুতর  আহতদের মধ্য ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহতরা হলো পাভেল, মিলন, তানিম, আলী আহমেদ, মাসুকুর, আঙ্গুর, বুলবুল, রুবেল পান্ডা, তৌহিদ। তাদের মধ্য রুবেল পান্ডার অবস্থা গুরুতর।

জানা গেছে, উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামটি দাঙ্গাবাজ হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। এই গ্রামের মানুষ আইসশৃংখলা বাহিনী, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মুরুব্বিদের কারো ডাক দোহাই মানেনা। এমনকি পুলিশ মামলার আসামী গ্রামে ধরতে গেলে আসামী ছিনিয়ে রেখে পুলিশকে আটক করে রাখার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। গ্রামে রয়েছে দুটি বড় বড় বংশ। সরকার বংশ কর্তা বংশ নামে পরিচিত তারা। সরকার বংশের নেতৃত্ব দেন বর্তমান চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ ও কর্তা বংশের নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক। গত ৫৫ বছর যাবত তারা গ্রামের আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উভয় বংশের ১৮ জন খুন হয়েছে। আহত হয় সহস্রাধিক লোক। কমপক্ষে শতবার সংঘর্ষে গ্রামের বাড়ীঘর লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা ঘটেছে। সাদেকপুর ইউনিয়নে বার বার মৌটুমি গ্রামের দুই বংশের লোক চেয়ারম্যান হয়েছে। সাফায়েত উল্লাহর বাবা আবুবকর সিদ্দিক তিনবার, সাফায়েত দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান হয়। তোফাজ্জল হক একবার ও তার চাচা একবার চেয়ারম্যান হয়। কয়েকমাস আগে সর্বশেষ সরকার বংশের কাইয়ূম খুন হয়। এর আগে কর্তা বংশের নাদিম গত বছর খুন হয়। তার আগে বর্তমান চেয়ারম্যানের দুই ভাই ওবায়েদ ও হেদায়েদ কর্তা বংশের লোকদের হাতে খুন হয়। একই বংশের ইকবাল দুই বছর আগে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়। খুন সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমানে অর্ধশত মামলা কিশোরগঞ্জ আদালতে চলমান আছে। উল্লেখ করার মত বিষয় হলো দুইজন চেয়ারম্যান সাফায়েত ও তোফাজ্জল হক কেউ গ্রামে থাকেনা। তারা দুজন ভৈরব শহরে বাসা করে বসবাস করে গ্রামে দুই বংশের বিরোধ লাগিয়ে রাখে। আধিপত্য বিস্তার, চেয়ারম্যান হওয়ার গুটি চালে পড়ে আছে দুই বংশের লোকজন। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেও তাদের বিরোধ মীমাংসা করতে পারেনি। বিশেষ করে দুইজন চেয়ারম্যান মীমাংসায় কখনও সম্মতি দেননা। তারা মামলাবাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কারন মামলা করলে দুই চেয়ারম্যানের টাকার বানিজ্য জমে উঠে। কোন পক্ষ কোন ঘটনায় থানায়  মামলা করার আগে গ্রামের লোকজনকে মামলার আসামীর ভয়ে দেখিয়ে তারা লাখ লাখ টাকা বানিজ্য করে, এমন অভিযোগ গ্রামবাসীর। আবার মামলা হলে চার্জশীট থেকে নাম কেটে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও অনেক টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

মৌটুপি গ্রামের রফিক মিয়া বলেন আমরা অন্য বংশের লোক হয়েও বাঁচতে পারিনা। কোননা কোন বংশকে সমর্থন দিতে হয়।

একই গ্রামের বৃদ্ধ হাফিজ মিয়া বলেন, গত ৫৫ বছরে দুই বংশের শত্রুতায় দেড় ডজন খুন হয়েছে। দুই চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠালেই এই গ্রামে আর সংঘর্ষ, খুন হবেনা। গ্রামের আরজু মিয়া বলেন, গত কয়েক বছরে একাধিকবার সংঘর্ষে আমরা নিস্বঃ হয়ে গেছি। আমাদের বাড়ীঘর লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করার পর পথে বসেছি। বাড়ীঘর ফেলে পরিবার নিয়ে অন্য গ্রামে থাকি।

এবিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকার বংশের নেতা সাফায়েত উল্লাহ বলেন, কর্তা বংশের তোফাজ্জল হক সবসময় বাড়াবাড়ি করে ঝগড়া সংঘর্ষ বিবাদ লাগিয়ে রাখে। তার কারনে বার বার সংঘর্ষ খুন হচ্ছে। তারা আমার দুই ভাইকে হত্যা করেছে। গত বছর আমার ও আমার বংশের শতাধিক বাড়ী লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। গত পরশু মঙ্গলবার আমার ভাই নাহিদকে আটক করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এদিন সংঘর্ষে আমার বংশের ৩০ জন আহত হয়। 

এব্যাপারে বিএনপি নেতা, সাবেক চেয়ারম্যান ও সরকার বংশের নেতৃত্বদানকারী তোফাজ্জল হক বলেন, আমি নয় গ্রামের আধিপত্ব বিস্তার, শত্রুতা সৃষ্টি করে চেয়ারম্যান সাফায়েত গত ২০ বছর যাবত বিরোধ সংঘর্ষ লাগিয়ে রাখছে। আমার চাচা নাদিমকে গত বছর তারা খুন করে। তাদের বংশের কাইয়ূম খুনের মামলায় আমাদের  বংশের  ৮০ জন আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত মঙ্গলবার বাড়ীতে গেলে তারা আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আমাদের ২০ জন আহত হয়ে ঢাকা, কিশোরগঞ্জের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরকার বংশের লোকদের ভয়ে আমাদের কর্তা বংশের ৫০ টি পরিবার পলাতক জীবনযাপন করছে এক বছর যাবত। এসবের জন্য তিনি সাফায়েতকে দায়ী করেন।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)  খন্দকার ফূয়াদ রুহানী এবিষয়ে জানান, আমিতো কয়েকমাস আগে থানায় যোগদান করেছি। এরই মধ্য মৌটুপি গ্রামে দুইপক্ষ কয়েকবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গত মঙ্গলবার দুটি পক্ষ সংঘর্ষ বাঁধলে পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর সহায়তায়  নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। ঝগড়াটে গ্রামের মানুষ। তারা কারো দোহাই মানেনা বলে শুনেছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে তারা মীমাংসা না করলে পুলিশ মীমাংসা করতে পারবেনা। তবে আইন ভঙ্গ করে মারামারি, সংঘর্ষ করলে পুলিশ কাউকে ছাড় দিবেনা বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে মৌটুপি গ্রামে ৫৫ বছরে ১৮ খুন, শতাধিক সংঘর্ষ – মামলা । দুই  বংশের আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতার  নেপথ্যে দুই চেয়ারম্যান। অভিযোগ এলাকাবাসীর। 

Update Time : ০৫:৪৮:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

১৭ এপ্রিল, বিশেষ  প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে ৫৫ বছরে ১৮ টি খুন, শতাধিক মামলা ও আহত হয়েছে সহস্রাধিক লোক। গ্রামের দুটি বংশের আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতাকে কেন্দ্র করে বার বার ঝগড়া সংঘর্ষ লেগেই আছে। এসব বিরোধের নেপথ্যের নায়ক গ্রামের দুইজন ইউপি চেয়ারম্যান। একজন হলো বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সাফায়েত উল্লাহ, অপরজন হলো সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা মোঃ তোফাজ্জল হক। তারা দুজনই তাদের ইউনিয়ন সাদেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান। বর্তমান চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ সরকার বংশের ও সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক কর্তা বংশের। উভয় বংশে পরিবারগুলির লোকসংখ্যা ৭/৮  শ করে।

গত মঙ্গলবার দুটি পক্ষ নতুন করে এলাকায় সংঘর্ষ বাঁধলে উভয় পক্ষের আহত হয় কমপক্ষে ৫০ জন। এদিন গুরুতর  আহতদের মধ্য ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। আহতরা হলো পাভেল, মিলন, তানিম, আলী আহমেদ, মাসুকুর, আঙ্গুর, বুলবুল, রুবেল পান্ডা, তৌহিদ। তাদের মধ্য রুবেল পান্ডার অবস্থা গুরুতর।

জানা গেছে, উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামটি দাঙ্গাবাজ হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। এই গ্রামের মানুষ আইসশৃংখলা বাহিনী, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, মুরুব্বিদের কারো ডাক দোহাই মানেনা। এমনকি পুলিশ মামলার আসামী গ্রামে ধরতে গেলে আসামী ছিনিয়ে রেখে পুলিশকে আটক করে রাখার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। গ্রামে রয়েছে দুটি বড় বড় বংশ। সরকার বংশ কর্তা বংশ নামে পরিচিত তারা। সরকার বংশের নেতৃত্ব দেন বর্তমান চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ ও কর্তা বংশের নেতৃত্ব দেন সাবেক চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক। গত ৫৫ বছর যাবত তারা গ্রামের আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উভয় বংশের ১৮ জন খুন হয়েছে। আহত হয় সহস্রাধিক লোক। কমপক্ষে শতবার সংঘর্ষে গ্রামের বাড়ীঘর লুটপাট, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের মত ঘটনা ঘটেছে। সাদেকপুর ইউনিয়নে বার বার মৌটুমি গ্রামের দুই বংশের লোক চেয়ারম্যান হয়েছে। সাফায়েত উল্লাহর বাবা আবুবকর সিদ্দিক তিনবার, সাফায়েত দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান হয়। তোফাজ্জল হক একবার ও তার চাচা একবার চেয়ারম্যান হয়। কয়েকমাস আগে সর্বশেষ সরকার বংশের কাইয়ূম খুন হয়। এর আগে কর্তা বংশের নাদিম গত বছর খুন হয়। তার আগে বর্তমান চেয়ারম্যানের দুই ভাই ওবায়েদ ও হেদায়েদ কর্তা বংশের লোকদের হাতে খুন হয়। একই বংশের ইকবাল দুই বছর আগে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়। খুন সংঘর্ষের ঘটনায় বর্তমানে অর্ধশত মামলা কিশোরগঞ্জ আদালতে চলমান আছে। উল্লেখ করার মত বিষয় হলো দুইজন চেয়ারম্যান সাফায়েত ও তোফাজ্জল হক কেউ গ্রামে থাকেনা। তারা দুজন ভৈরব শহরে বাসা করে বসবাস করে গ্রামে দুই বংশের বিরোধ লাগিয়ে রাখে। আধিপত্য বিস্তার, চেয়ারম্যান হওয়ার গুটি চালে পড়ে আছে দুই বংশের লোকজন। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চেষ্টা করেও তাদের বিরোধ মীমাংসা করতে পারেনি। বিশেষ করে দুইজন চেয়ারম্যান মীমাংসায় কখনও সম্মতি দেননা। তারা মামলাবাজ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। কারন মামলা করলে দুই চেয়ারম্যানের টাকার বানিজ্য জমে উঠে। কোন পক্ষ কোন ঘটনায় থানায়  মামলা করার আগে গ্রামের লোকজনকে মামলার আসামীর ভয়ে দেখিয়ে তারা লাখ লাখ টাকা বানিজ্য করে, এমন অভিযোগ গ্রামবাসীর। আবার মামলা হলে চার্জশীট থেকে নাম কেটে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও অনেক টাকা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।

মৌটুপি গ্রামের রফিক মিয়া বলেন আমরা অন্য বংশের লোক হয়েও বাঁচতে পারিনা। কোননা কোন বংশকে সমর্থন দিতে হয়।

একই গ্রামের বৃদ্ধ হাফিজ মিয়া বলেন, গত ৫৫ বছরে দুই বংশের শত্রুতায় দেড় ডজন খুন হয়েছে। দুই চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠালেই এই গ্রামে আর সংঘর্ষ, খুন হবেনা। গ্রামের আরজু মিয়া বলেন, গত কয়েক বছরে একাধিকবার সংঘর্ষে আমরা নিস্বঃ হয়ে গেছি। আমাদের বাড়ীঘর লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করার পর পথে বসেছি। বাড়ীঘর ফেলে পরিবার নিয়ে অন্য গ্রামে থাকি।

এবিষয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকার বংশের নেতা সাফায়েত উল্লাহ বলেন, কর্তা বংশের তোফাজ্জল হক সবসময় বাড়াবাড়ি করে ঝগড়া সংঘর্ষ বিবাদ লাগিয়ে রাখে। তার কারনে বার বার সংঘর্ষ খুন হচ্ছে। তারা আমার দুই ভাইকে হত্যা করেছে। গত বছর আমার ও আমার বংশের শতাধিক বাড়ী লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। গত পরশু মঙ্গলবার আমার ভাই নাহিদকে আটক করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এদিন সংঘর্ষে আমার বংশের ৩০ জন আহত হয়। 

এব্যাপারে বিএনপি নেতা, সাবেক চেয়ারম্যান ও সরকার বংশের নেতৃত্বদানকারী তোফাজ্জল হক বলেন, আমি নয় গ্রামের আধিপত্ব বিস্তার, শত্রুতা সৃষ্টি করে চেয়ারম্যান সাফায়েত গত ২০ বছর যাবত বিরোধ সংঘর্ষ লাগিয়ে রাখছে। আমার চাচা নাদিমকে গত বছর তারা খুন করে। তাদের বংশের কাইয়ূম খুনের মামলায় আমাদের  বংশের  ৮০ জন আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত মঙ্গলবার বাড়ীতে গেলে তারা আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আমাদের ২০ জন আহত হয়ে ঢাকা, কিশোরগঞ্জের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সরকার বংশের লোকদের ভয়ে আমাদের কর্তা বংশের ৫০ টি পরিবার পলাতক জীবনযাপন করছে এক বছর যাবত। এসবের জন্য তিনি সাফায়েতকে দায়ী করেন।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি)  খন্দকার ফূয়াদ রুহানী এবিষয়ে জানান, আমিতো কয়েকমাস আগে থানায় যোগদান করেছি। এরই মধ্য মৌটুপি গ্রামে দুইপক্ষ কয়েকবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। গত মঙ্গলবার দুটি পক্ষ সংঘর্ষ বাঁধলে পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর সহায়তায়  নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। ঝগড়াটে গ্রামের মানুষ। তারা কারো দোহাই মানেনা বলে শুনেছি। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে তারা মীমাংসা না করলে পুলিশ মীমাংসা করতে পারবেনা। তবে আইন ভঙ্গ করে মারামারি, সংঘর্ষ করলে পুলিশ কাউকে ছাড় দিবেনা বলে তিনি জানান।