১৩ এপ্রিল, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে নতুন বছরে ধান আমদানী শুরু হয়েছে। হাওরের বিভিন্ন উপজেলা এলাকায় কৃষকরা বোরো ধান কাটার পর বিক্রির জন্য ট্রলারে বন্দরনগরী ভৈরব বাজারে নিয়ে আসছে। আজ রোববার বছরের শেষ দিন (৩০ চৈত্র) বাজারের নদীর পাড় এলাকায় একাধিক ট্রলারভর্তি ধান হাওর থেকে ভৈরবে নিয়ে এসেছে কৃষক ও বেপারীরা। এসব ধান বাজারের আরৎগুলিতে আমদানী করা হচ্ছে। আবার নদীর পাড়ে স্তুপ করে মজুত রাখা হচ্ছে ধান। তবে নতুন ধানের দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশ। পহেলা বৈশাখ সোমবার নতুন ধান বিক্রির আশায় তারা ট্রলারযোগে এসেছে। রোববার ভৈরব বাজারে নতুন মোটা ধান বিক্রি হয় প্রতিমন ৮০০ টাকা থেকে ৮৮০ টাকা দরে। তবে চিকন ধান বিক্রি হয় প্রতিমন ১০৫০ টাকা দরে। এর একমাস আগেও পুরান ধান প্রতিমন বিক্রি হয়েছে ১৪০০/১৫০০ টাকা দরে। নতুন ধান আমদানী হওয়ায় ধানের দাম এক লাফে মনপ্রতি ৫০০ টাকা কমে গেছে। আরৎদারগন বলছে প্রতি বছর বৈশাখ মাসে নতুন ধান আমদানী হলে দাম কমে যায়।

জানা গেছে, হাওরের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। নদীপথে ট্রলারে আনা সহজ ও পরিবহন খরচ কম লাগে বলে কৃষক ও বেপারীরা নতুন ধান কাটার পরই ভৈরব বাজারে নিয়ে আসে। এখানে একাধিক আরৎ আছে। আশুগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্রগ্রামের রাইস মিল মালিকরা নতুন ধান কিনতে ভৈরব বাজারে আসে। স্থানীয় রাইসমিল মালিকরাও ধান কিনছে। এখনও আমদানী পুরোদমে শুরু হয়নি। জৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত ধান কাটা থাকবে। স্থানীয়ভাবে এখনও ধান কাটা শুরু হয়নি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মন ধান হাওর থেকে আসবে ভৈরবে।
ভৈরবের আরৎদার মাহবুব মিয়া বলেন, গত দুইতিন যাবত নতুন ধান আমদানী হলেও এখনও পুরোপুরি আমদানী শুরু হয়নি। হাওরে পুরোধমে ধান কাটা শুরু হবে বৈশাখের প্রথম সপ্তাহ থেকে। এখন কৃষকরা সামান্য পরিমান ধান কেটে কাচা ধান নিয়ে আসছে। কাচা ধান শুকানোর পর ওজন কমে যায়। রাইস মিলে ধান ভাঙ্গালে চালের পরিমান কম হয়। তাই ধানের দাম এখন কম। জৈষ্ঠমাসে শুকনা ধান আমদানী হলে আর সরকার ধান চাল কেনা শুরু করলে দাম কিছুটা বাড়বে। আরেক আরৎদার আলী হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় আমদানী কম, কাচা ধান না শুকিয়ে কৃষকরা বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে। ফলে তারা সঠিক দাম পাচ্ছেনা।
হাওরের ইটনা উপজেলা থেকে ভৈরবে আসা কৃষক আমজাদ আলী বলেন, আমি ১০০ মন নতুন ধান এনে ৮৫০ টাকা মন দরে বিক্রি করেছি। এতে আমি হতাশ। কারন একমন ধান উৎপাদনে এখন ৯০০ টাকা খরচ হয়। আবদুর রশিদ বেপারি বলেন, আমি হাওরের নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলা থেকে ২০০ মন ধান ৮০০ টাকা দরে কিনে ভৈরবে এনে ৮৩০ টাকা দরে বিক্রি করে লোকসান হয়েছে।
ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম জানান, এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়নি। হাওরের কাচা ধান বাজারে দাম কমই থাকবে। সরকারীভাবে ধানচাল কেনা শুরু হলে দাম বেড়ে যাবে। প্রতিবছর বৈশাখ মাসে ধানের দাম কিছুটা কম থাকে। তিনি বলেন কৃষকরা ধান শুকিয়ে রেখে দুইমাস পর বিক্রি করলে তারা ন্যায্য মূল্য ঠিকই পাবে।