ভৈরবে মসজিদ কমিটি নিয়ে রাতে দুইপক্ষের  সংঘর্ষ।। আহত ২৫ জন। বাড়ীঘর দোকানপাট ভাঙচুর। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭৯ Time View

৯ এপ্রিল, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে মসজিদ কমিটি নিয়ে মঙ্গলবার রাতে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত হয় ২৫ জন। এসময় কয়েকটি বাড়ীঘর দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে শহরের চন্ডিবের এলাকায়। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। এরা হলো চাঁদ মোল্লা, জুয়েল মিয়া ও রাফি। সংঘর্ষের সময় যারা আহত হয় তারা হলো সোলাইমান ( ৩০), সাকিব (২৩), রাব্বি (২০), ইমন মিয়া (৩৫), মুছা মিয়া (২৬), রাতুল (১৮), শ্রাবন (২৪), অলি মিয়া (৪০), ইয়াছিন (২২), সামি (১৪), সোহাগ (১৯), আল- আমিন (৩২), সাজ্জাদ (২৯), সিয়াম (২৩), রায়হান (৩৪), বাদশা (৩১), প্রিয়াংকা (১২), জনি (৩৮)। আহতদের মধ্য সোলাইমানকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও অলিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। অন্যান্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চন্ডিবের মীর বাড়ী ও কাজি বাড়ীর মধ্য মীর বাড়ীর একটি মসজিদ রয়েছে। উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন মোল্লা বাড়ীর মিজান মোল্লা। ৫ বছর পর  গত সোমবার নতুন কমিটি গঠন করতে বসেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগন। এসময় কমিটি গঠন নিয়ে হট্রগোল তর্কবিতর্ক শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্য। পরে তাদের মধ্য ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে কয়েকজনের বাড়ীঘর ভাঙচুর করে এক পক্ষ। তারপর মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষ মীমাংসায় বসে। এরপর তারা উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আবারও বিকেলে বসেন। এসময় আবারও বিষয়টি মীমাংসা করতে না পেরে সন্ধ্যায় ঝগড়া শুরু হয়। এরপর রাত ৯ টায় দুইপক্ষ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এই সংঘর্ষ মঙ্গলবার রাত ১২ টা পর্যন্ত চলে। এতে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয় এবং বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।

মীর বাড়ীর জাকির বলেন, আমাদের বাড়ীর মসজিদে মোল্লা বাড়ীর লোক সভাপতি থাকবে কেন। তারা কাজি বাড়ীর লোক এক হয়ে আমাদের মসজিদের সভাপতি হতে চাই। যা আমরা মানতে রাজী নয়।

এবিষয়ে কাজি বাড়ীর সাকিব বলেন, মসজিদটি মীর বাড়ীর হলেও কাজি বাড়ীর কমাটিকে ওয়াকফা করে দেয়া হয়। এখন মীর বাড়ীর লোকজন নিজদের মত কমিটি করতে চাই। আমরা সমন্বয় করে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দিতে চেয়েছিলাম। কিন্ত তারা না মেনে সংঘর্ষে নামে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবদুল করিম বলেন, মঙ্গলবার রাতে ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহত  দুজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। 

এবিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) খন্দকার ফূয়াদ রুহানী জানান, মঙ্গলবার রাতে   ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে নতুন বছরে  ধান আমদানী শুরু। হাওরে  কৃষকের কাটা নতুন  ধান  ট্রলারে আসছে বন্দরে।। দাম কমে হতাশ।।

ভৈরবে মসজিদ কমিটি নিয়ে রাতে দুইপক্ষের  সংঘর্ষ।। আহত ২৫ জন। বাড়ীঘর দোকানপাট ভাঙচুর। 

Update Time : ০৩:২৭:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

৯ এপ্রিল, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে মসজিদ কমিটি নিয়ে মঙ্গলবার রাতে দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহত হয় ২৫ জন। এসময় কয়েকটি বাড়ীঘর দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। ঘটনাটি ঘটে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে শহরের চন্ডিবের এলাকায়। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। এরা হলো চাঁদ মোল্লা, জুয়েল মিয়া ও রাফি। সংঘর্ষের সময় যারা আহত হয় তারা হলো সোলাইমান ( ৩০), সাকিব (২৩), রাব্বি (২০), ইমন মিয়া (৩৫), মুছা মিয়া (২৬), রাতুল (১৮), শ্রাবন (২৪), অলি মিয়া (৪০), ইয়াছিন (২২), সামি (১৪), সোহাগ (১৯), আল- আমিন (৩২), সাজ্জাদ (২৯), সিয়াম (২৩), রায়হান (৩৪), বাদশা (৩১), প্রিয়াংকা (১২), জনি (৩৮)। আহতদের মধ্য সোলাইমানকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও অলিকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। অন্যান্যরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চন্ডিবের মীর বাড়ী ও কাজি বাড়ীর মধ্য মীর বাড়ীর একটি মসজিদ রয়েছে। উক্ত মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন মোল্লা বাড়ীর মিজান মোল্লা। ৫ বছর পর  গত সোমবার নতুন কমিটি গঠন করতে বসেন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগন। এসময় কমিটি গঠন নিয়ে হট্রগোল তর্কবিতর্ক শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্য। পরে তাদের মধ্য ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে কয়েকজনের বাড়ীঘর ভাঙচুর করে এক পক্ষ। তারপর মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষ মীমাংসায় বসে। এরপর তারা উভয়পক্ষ বিষয়টি নিয়ে আবারও বিকেলে বসেন। এসময় আবারও বিষয়টি মীমাংসা করতে না পেরে সন্ধ্যায় ঝগড়া শুরু হয়। এরপর রাত ৯ টায় দুইপক্ষ আবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। এই সংঘর্ষ মঙ্গলবার রাত ১২ টা পর্যন্ত চলে। এতে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয় এবং বেশ কয়েকটি বাড়ীঘর, দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়।

মীর বাড়ীর জাকির বলেন, আমাদের বাড়ীর মসজিদে মোল্লা বাড়ীর লোক সভাপতি থাকবে কেন। তারা কাজি বাড়ীর লোক এক হয়ে আমাদের মসজিদের সভাপতি হতে চাই। যা আমরা মানতে রাজী নয়।

এবিষয়ে কাজি বাড়ীর সাকিব বলেন, মসজিদটি মীর বাড়ীর হলেও কাজি বাড়ীর কমাটিকে ওয়াকফা করে দেয়া হয়। এখন মীর বাড়ীর লোকজন নিজদের মত কমিটি করতে চাই। আমরা সমন্বয় করে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দিতে চেয়েছিলাম। কিন্ত তারা না মেনে সংঘর্ষে নামে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবদুল করিম বলেন, মঙ্গলবার রাতে ১১ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহত  দুজনকে রেফার্ড করা হয়েছে। 

এবিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) খন্দকার ফূয়াদ রুহানী জানান, মঙ্গলবার রাতে   ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নিব।