২৫ মার্চ, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করায় স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে গলায় ওড়না পিছিয়ে তাকে হত্যা করল স্বামী। এই ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জের তালশহর এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে ইমরান মিয়া (২২)কে সহ তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূ পৌর শহরের পঞ্চবটি এলাকার ভাড়াটিয়া মাহবুব আলমের মেয়ে আখি আক্তার (১৯) । তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল থানার পুরোয়া চৌরাস্তা এলাকায়।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে শহরের পঞ্চবটি এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে ভৈরব শহরের পঞ্চবটি এলাকার ভাড়াটিয়া আবুল কাসেমের ছেলে ইমরান মিয়ার সাথে একই মাহবুব আলমের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে আখিঁ আক্তারের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে আখিঁর বাবার বাড়ির লোকজনের সাথে কোন যোগাযোগ নেই স্বামীর । দুজনের বিয়ের এক বছর তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে পঞ্চবটি এলাকায় আখিঁ বেগম তার মামার বাসায় মায়ের সাথে দেখা করতে যায়। খবর পেয়ে মামার বাসা থেকে তার স্বামী তাকে মারধোর করে গলায় ওড়না পিছিয়ে টেনে হিচড়ে তার বাসায় নিয়ে যায়। এসময় আখিঁ বেগম গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নিহতের মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একই এলাকার বখাটে ইমরান তাকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করে। তাদের বিয়ের পর থেকে আমাদেরকে নানা ভাবে অত্যাচার করতো। তার ভয়ে আমরা পরিবার নিয়ে পঞ্চবটি এলাকা থেকে বাসা ছেড়ে নিজ গ্রামের বাড়ি চলে যায়। আজ সকালে ট্রেনযোগে ভৈরব এসে আমার ভাইয়ের বাসায় মেয়ের সাথে দেখা করতে যায়। কেন আমার মেয়ে দেখা করতে আসল সে কারণে আমার সামনে আখিঁকে অনেক মারধোর করার পর, এসময় গলায় ওড়না পিছিয়ে তাকে মেরে ফেলে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।
একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, ইমরান এলাকার খুব দাপটশালী। তার ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। সকালের দিকে আমার সামনে ঘটনাটি ঘটে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুযাদ রুহানী জানান, আখি আক্তার নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের স্বামী ইমরানসহ তার বাবাকে আটক করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।