২৮ ফেব্রুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে ২০ টাকার লটারি টিকেটে যেমন ব্যবসা সফল তেমনি বাণিজ্য মেলাও হয়ে উঠেছে জমজমাট। মাসব্যাপী মেলায় আজ শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ দিন। মেলাকে ঘিরে উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও লটারি ক্রয় বিক্রয় ও শেষ রাতে ড্র উদযাপনে মানুষের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
আজ বিকালে সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায় লটারি টিকেট কিনতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। ২০টিরও বেশি টিকেট বিক্রির কাউন্টার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতাগন। ক্রেতাদের মধ্যে দিনমজুর ও অসহায় গরিব ও কিশোরদেরই সংখ্যা বেশি। তবে কম নেই ধনীদের সংখ্যাও। নিজেদের ভাগ্য পরিক্ষায় কেউ নিচ্ছেন পাঁচটি টিকেট আবার কেউ নিচ্ছেন ২৫ টি টিকেট। এদিকে শহর জুড়ে মাইকিংয়ের মাধ্যমেও মোটরসাইকেল সাজিয়ে ঘুরে ঘুরে টিকেট বিক্রি করতে দেখা যায়।
এসময় কথা হয় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে।
ক্রেতারা বলছেন, লটারি হলো ভাগ্য পরীক্ষা। ২০ টাকার টিকেটে ভাগ্য পরীক্ষা করতেই টিকেট ক্রয় করছেন। এছাড়া টিকেট বিক্রিও লটারিতে কোন রকম গাফিলতি বা বেঈমানি নেই। লটারিতে পুরস্কার পাওয়ার ভরসা থেকেই টিকেট কিনছেন তারা।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী নোয়াজ মিয়া বলেন, আমি ২৫টি টিকেট কিনেছি। প্রতিদিন কেউ না কেউ প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, ফ্রিজ ও ষাঁড় গরুসহ বিভিন্ন পুরস্কার পাচ্ছে। তাই ভাগ্য পরীক্ষা করতে টিকেট কিনেছি।
এ বিষয়ে মাছুম ও জেবুন্নেছা দম্পতি বলেছেন, আমরা প্রথম দিকে মেলায় ঘুরতে আসতাম। এক জায়গায় প্রতিদিন আসা যাওয়া ভাল লাগতো না। এখন লটারি কেটে মেলায় আসি। লটারি দিয়েই মেলাটা জমে উঠেছে।
এ বিষয়ে বিক্রেতা আকাশ ও আতিক বলেন, আমরা মেলা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ১ হাজার করে টিকেট নিয়ে এসেছি। আমাদের শতাধিক বিক্রেতা রয়েছে। তবে সব টিকেট সবাই বিক্রি করতে পারে না।
বিক্রেতা রিপন বলেন, আমি ১ হাজার টিকেট এনেছি। ৫শ টিকেট ইতিমধ্যে বিক্রি করেছি। ড্র হওয়ার আগে সব টিকেট বিক্রি হতে পারে। সারাদিন টিকেট বিক্রি করে ৩/৪ শ টাকা পায় বলে জানান তিনি।
এদিকে টিকেট নিয়ে স্থানীয় সুশীল সমাজের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছে মেলাটিকে জূয়ার আসরে পরিণত করা হয়েছে। মেলা ঘিরে শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব না দিয়ে জূয়াকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হলো।
এ বিষয়ে ভৈরব বাণিজ্য মেলার ম্যানেজার সুমন মিয়া বলেন, ১২ দিন যাবত ২০ টাকা করে লটারির টিকেট বিক্রি হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ ও গরুসহ বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার দেয়া হয়েছে। আজ মেলার শেষ দিনে ৪টি মোটরসাইকেল, ১ ভরি স্বর্ণের কানের দুলসহ ৭১টি পুরস্কার রয়েছে। মেলাটিকে জমিয়ে রাখতেই লটারি বিক্রির কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে৷ তবে কোন ব্যবসায়ীক সুবিধা নিতে নয় দীর্ঘদিন পর ভৈরবে বাণিজ্য মেলা হয়েছে। মেলাটি যেন প্রতি বছর চালিয়ে নেয়া যায় সে জন্য এই লটারির আয়োজন।