২৪ জানুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে স্বদেশ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির জরায়ূ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রসূতির নাম শাবনুর আক্তার (২২)। কিশোরগঞ্জের মিটামইন উপজেলার আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল গ্রামের মোঃ নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাবনুর। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্বদেশ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে রাত ১০ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেহেদী ওই হাসপাতালে গিয়ে ঘটনা পরিদর্শন ও রোগীর পরীক্ষা- নিরীক্ষা করেন। এসময় রোগী অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালে আসে। বর্তমানে প্রসূতি রোগী ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
প্রসূতি নারীর বড় ভাই সোহেল মাহমুদ এর সাথে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় হাসপাতালে এই প্রতিনিধির কথা হয়। এসময় তিনি বলেন আমার ছোটবোন শাবনুর আক্তার প্রসূতি হিসেবে প্রসব বেদনা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় স্বদেশ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এসময় তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সন্ধ্যায় তাকে সিজার করলে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম নেয়। তারপর হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট থেকে জানতে পারি আমার বোনের জরায়ূ কেটে ফেলা হয়। তার বোনের সিজার অপারেশন করেছে ডাক্তার মিশুতি রানী ঘোষ। এরপর ঘটনাটি আমি পুলিশকে অবহিত করি। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে আমার বোনকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। এখন চিকিৎসা চলছে।
স্বদেশ হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান এবিষয়ে জানান, প্রসূতির সিজার করার পর জরায়ূ সেলাই করার সময় বার বার ফুলে গেলে সেলাই করা যাচ্ছিলনা। এতে তার রক্তক্ষরণ চলছিল কিন্ত বন্ধ করা যাচ্ছিলা। সিজার অপারেশনকারী মহিলা ডাক্তার মিশুতি রানী ঘোষ বলেন, অপারেশন শেষে জরায়ূর মুখ সেলাই করার সময় বার বার ফুলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে রোগীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে তাকে বাঁচাতেই জরায়ূ কেটে ফেলতে হয়। এটা ভুল চিকিৎসা নয় বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার বুলবুল আহম্মদ জানান, খবর পেয়ে আমি আমার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মেহেদিকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। ঘটনাস্থলে এই ডাক্তার রোগী দেখে তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করার পরামর্শ দেন। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে তিনি আজ শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক ( তদন্ত) মোঃ শাহিন মিয়া জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল হাসপাতালে যায় রাত সাড়ে ৯ টায়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার এসে রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ করেন। রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিবে।