ভৈরবের ১৫ জন যুবককে  ইউরোপে নেওয়ার কথা বলে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা নিয়ে উধাও  প্রতারক চক্র।। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১০৫ Time View

৮ জানুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবের ১৫ জন যুবককে  ইউরোপের দেশে পাঠানোর কথা বলে ১ কোটি ২৮ লাখ নিয়ে উধাও হয়েছে এক  ট্রাভেলস মালিক। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে যুবকদের অভিযোগ। 

আজ বুধবার দুপুর ১২ টায় প্রতারিত হওয়া কয়েকজন যুবক ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে এক সংবাদ সন্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সন্মেলনে তারা  প্রশাসনের হস্তক্ষেপ  কামনা করে ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এজেন্সির প্রতারক চক্রের  বিরুদ্ধে   বিচারের দাবিসহ তাদের পাসপোর্ট ও  টাকা ফেরত পাওয়ার  দাবি জানান। 

 সংবাদ সন্মেলনে তারা অভিযোগ করেন,  ঢাকার গুলশানে অবস্থিত ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার এর মালিক এম.এস. আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন, ম্যানেজার ইউনুস মিয়া  কানাডা, পতুর্গাল ও সার্বিয়া পাঠানোর কথা বলে ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের ১৫ জনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা  হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায় তারা। ট্রাভেলস মালিক কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নের সামসুল হকের ছেলে এম, এস আজিজুল হক। 

  অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে  শ্রীনগর উত্তরপাড়া এলাকার তৌফিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সালে আগস্ট মাসে আমার ভাগিনা ইতালি প্রবাসী আসরাফুল আলমের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এর মালিক এম, এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন হকের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথে কথা হলে ভুক্তভোগীদের প্রথমে ইউরোপের দেশের জন্য ওর্য়াক পারমিট জব অফার লেটার ভিসা প্রদান করেন। আমার ভাগিনা ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের রুস্তম আলী ও মো. ইব্রাহীম মিয়ার কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নিয়ে পাসপোর্ট দিয়ে ভারতীয় ভিসা সংযোজন করে। পরে আমার ভাগিনার কাছ থেকে কানাডা নেয়ার কথা বলে আরো ১০ লাখ টাকা নেন। টাকাগুলো নিয়ে গত বছর ২০২৪ সালের  ১২ মার্চ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৭ জনকে ভারত ও নেপাল নিয়ে যায়। ভিসা জালিয়াতির কারণে ভারত থেকে তাদেরকে গত বছর  ২৮ জুন বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় । এছাড়াও একই গ্রামের আরও কয়েকজনের কাছ থেকে প্রতারকরা   আরো ৩৮ লাখ টাকা নেন। প্রতারকচক্র তাদের কাছ থেকে  পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ মোট ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে   ভুক্তভোগীদের পক্ষে  মামুনুর রহমান বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও আদিবাসী আইনে একটি মামলা দায়ের করে ( মামলা নং সি,আর-৩৫৪০/২৪)।  বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী রুস্তম মিয়া বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে প্রতারক চক্র । তারপর  আমাকেসহ অন্যদেরকে ইন্ডিয়া নিয়ে ৩ মাস রেখে দেশে ফেরত পাঠায়। 

ভুক্তভোগী ইব্রাহীম মিয়া বলেন, আমিসহ আরো দুইজনে মিলে ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। উসমান মিয়া বলেন, আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দালালকে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। 

এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা সরকারের কাছে প্রতারক চক্রের বিচারসহ টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত চাই। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ট্রাভেলস মালিক এমএস আাজিজুল হকের মোবাইলে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার  স্ত্রী সাফরিন হক এর সাথে মোবাইলে  যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামী ট্রাভেলস এজেন্সি পরিচালনা করেন । তিনি  বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা নিয়েছেন শুনেছি, তবে সকল ঘটনা আমি অবগত নয়।  মামলার বিষয়টি আমার স্বামী  অবগত হয়েছেন।  ভুক্তভোগীদের বিষয়টি তাদের সাথে আলোচনা করে  আমার স্বামী  সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবের ১৫ জন যুবককে  ইউরোপে নেওয়ার কথা বলে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা নিয়ে উধাও  প্রতারক চক্র।। 

Update Time : ০২:০৫:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

৮ জানুয়ারি, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবের ১৫ জন যুবককে  ইউরোপের দেশে পাঠানোর কথা বলে ১ কোটি ২৮ লাখ নিয়ে উধাও হয়েছে এক  ট্রাভেলস মালিক। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলে যুবকদের অভিযোগ। 

আজ বুধবার দুপুর ১২ টায় প্রতারিত হওয়া কয়েকজন যুবক ও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলার শ্রীনগর গ্রামে এক সংবাদ সন্মেলন করে এই অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সন্মেলনে তারা  প্রশাসনের হস্তক্ষেপ  কামনা করে ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এজেন্সির প্রতারক চক্রের  বিরুদ্ধে   বিচারের দাবিসহ তাদের পাসপোর্ট ও  টাকা ফেরত পাওয়ার  দাবি জানান। 

 সংবাদ সন্মেলনে তারা অভিযোগ করেন,  ঢাকার গুলশানে অবস্থিত ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার এর মালিক এম.এস. আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন, ম্যানেজার ইউনুস মিয়া  কানাডা, পতুর্গাল ও সার্বিয়া পাঠানোর কথা বলে ভৈরবের শ্রীনগর গ্রামের ১৫ জনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা  হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায় তারা। ট্রাভেলস মালিক কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলা খুনিয়া পালং ইউনিয়নের সামসুল হকের ছেলে এম, এস আজিজুল হক। 

  অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে  শ্রীনগর উত্তরপাড়া এলাকার তৌফিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সালে আগস্ট মাসে আমার ভাগিনা ইতালি প্রবাসী আসরাফুল আলমের বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার নামের ট্রাভেলস এর মালিক এম, এস আজিজুল হক ও তার স্ত্রী সাফরিন হকের সাথে পরিচয় হয়। তাদের সাথে কথা হলে ভুক্তভোগীদের প্রথমে ইউরোপের দেশের জন্য ওর্য়াক পারমিট জব অফার লেটার ভিসা প্রদান করেন। আমার ভাগিনা ছাড়াও শ্রীনগর গ্রামের রুস্তম আলী ও মো. ইব্রাহীম মিয়ার কাছ থেকে ৮০ লাখ টাকা নিয়ে পাসপোর্ট দিয়ে ভারতীয় ভিসা সংযোজন করে। পরে আমার ভাগিনার কাছ থেকে কানাডা নেয়ার কথা বলে আরো ১০ লাখ টাকা নেন। টাকাগুলো নিয়ে গত বছর ২০২৪ সালের  ১২ মার্চ ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৭ জনকে ভারত ও নেপাল নিয়ে যায়। ভিসা জালিয়াতির কারণে ভারত থেকে তাদেরকে গত বছর  ২৮ জুন বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় । এছাড়াও একই গ্রামের আরও কয়েকজনের কাছ থেকে প্রতারকরা   আরো ৩৮ লাখ টাকা নেন। প্রতারকচক্র তাদের কাছ থেকে  পাসপোর্ট ও ভিসা ফি বাবদ মোট ১ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে   ভুক্তভোগীদের পক্ষে  মামুনুর রহমান বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঢাকায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও আদিবাসী আইনে একটি মামলা দায়ের করে ( মামলা নং সি,আর-৩৫৪০/২৪)।  বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে।

আরেক ভুক্তভোগী রুস্তম মিয়া বলেন, আমার কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে প্রতারক চক্র । তারপর  আমাকেসহ অন্যদেরকে ইন্ডিয়া নিয়ে ৩ মাস রেখে দেশে ফেরত পাঠায়। 

ভুক্তভোগী ইব্রাহীম মিয়া বলেন, আমিসহ আরো দুইজনে মিলে ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। উসমান মিয়া বলেন, আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দালালকে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি। 

এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা সরকারের কাছে প্রতারক চক্রের বিচারসহ টাকা ও পাসপোর্ট ফেরত চাই। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ট্রাভেলস মালিক এমএস আাজিজুল হকের মোবাইলে ফোন করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার  স্ত্রী সাফরিন হক এর সাথে মোবাইলে  যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার স্বামী ট্রাভেলস এজেন্সি পরিচালনা করেন । তিনি  বিদেশ পাঠানোর জন্য টাকা নিয়েছেন শুনেছি, তবে সকল ঘটনা আমি অবগত নয়।  মামলার বিষয়টি আমার স্বামী  অবগত হয়েছেন।  ভুক্তভোগীদের বিষয়টি তাদের সাথে আলোচনা করে  আমার স্বামী  সমাধানের জন্য চেষ্টা করছে।