ভৈরবে পুলিশ সার্কেলের অফিসের সামনে থেকে দিনেদুপুরে  কয়লা ব্যবসায়ীর পৌনে দুই লাখ টাকা ছিনতাই। মানুষ আতংকে আছে। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৫০:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১০৮ Time View

৭ জানুয়ারি, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে পুলিশ সার্কেলের অফিসের সামনের রাস্তা থেকে দিনেদুপুরে নেসার আহমেদ নামের এক কয়লা ব্যবসায়ীর ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাইকারীরা ছুরির ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নেয়। এই ব্যবসায়ীর বাড়ী সুনামগন্জের তাহিরপুর উপজেলা এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টার দিকে শহরের নাটাল মোড় এলাকার পুলিশের সার্কেল অফিসের সামনে। গতকাল সোমবার ভোরে একই এলাকায় ভিকচান মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা ও তিনটি বোয়াল মাছ ছিনতাই হয়। তার আগের দিন রোববার রাতে ওই এলাকায় কয়েকজন ছিনতাইকারী ৫ জন পথচারীকে আটক করে কয়েক হাজার টাকা ও পাঁচটি মূল্যবান মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় এক সাংবাদিকের বোন চট্রগ্রাম থেকে ভোররাত ৪ টায় ভৈরব  রেলস্টেশনে নেমে বাসায় যাওয়ার সময় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। এসময় ছিনতাইকারীরা তার ৫ ভরি স্বর্নলংকার ও একটি দামি মোবাইল নিয়ে যায়। গত একমাসে ভৈরব শহরে কমপক্ষে অর্ধশত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পৌর শহরের নাটাল মোড়, রেলস্টেশন রোড, দড়ি চন্ডিবের, স্টেডিয়ামের সামনে, ভৈরবপুর গার্লস স্কুলের সামনে, নদীর পাড়, আইস কোং মোড়, ঘোড়াকান্দা, নিউটাউন, পঞ্চবটি,  সম্ভুপুর, ভৈরব – কিশোরগন্জ আঞ্চলিক সড়কে প্রায়দিন এসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শহরে প্রতিদিন চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় মাদক সেবনকারী, সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাং সদস্যরা এসব ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। পুলিশ বলছে শহরের আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে তারা কাজ করছে, তবে শহরের সকল রোড নিরাপত্তা দেয়ার মত পুলিশের সংখ্যা নেই বলে পুলিশ জানায়। 

কয়লা ব্যবসায়ী নেসার আহমেদ বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় আমি বাসস্ট্যান্ড থেকে ফেরিঘাট রিক্সাযোগে যাওয়ার সময় তিনজন ছিনতাইকারী আমার রিক্সার গতিরোধ করে ছুরির ভয় দেখিয়ে আমার টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিল। ভৈরবের ফেরিঘাট থেকে  কয়লা কিনতে এটাকা ব্যাগে ছিল। ঘটনাটি আমি কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রশিদ মিয়া বলেন, শহরের পাওয়ার হাউজ, নাটাল মোড় এখন ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্য। প্রতিদিন এখানে ছিনতাই হলেও পুলিশের ভূমিকা নিরব। বর্তমানে শহরের মানুষ চলাফেরায় আতংকে রয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মানুষ আতংকিত অবস্থায় থাকে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, নাটাল মোড়ে প্রায়দিন ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার ইফরান, বাঘা ওরফে সাগর, রুমান নামের একটি কিশোর গ্যাং ছিনতাই করার অভিযোগ আছে।

ভৈরব থানার নবযোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, আমি মাত্র ৬ দিন আগে থানায় যোগদান করেছি। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক বন্ধ করাসহ আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে আমি কাজ করব। তিনি বলেন, আজ সকালে টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি তবে ভূক্তভূগি এখন থানায় এসে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নিব। থানায় যোগদানের পর আমি জানতে পারি ভৈরবে প্রতিমাসেই কয়েকজন ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়া হয়। কিন্ত তারা সহজেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন শহরের প্রতিটি রোড নিরাপত্তা দেয়ার মত পুলিশের সংখ্যা থানায় নেই, তাই স্থানীয় জনগনকে সচেতন হতে হবে, সোচ্ছার হতে হবে। এরপরও আইনশৃংখলা রক্ষায়  শহরে পুলিশের টহল জোড়দার করা হবে বলে তিনি জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে পুলিশ সার্কেলের অফিসের সামনে থেকে দিনেদুপুরে  কয়লা ব্যবসায়ীর পৌনে দুই লাখ টাকা ছিনতাই। মানুষ আতংকে আছে। 

Update Time : ০২:৫০:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

৭ জানুয়ারি, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে পুলিশ সার্কেলের অফিসের সামনের রাস্তা থেকে দিনেদুপুরে নেসার আহমেদ নামের এক কয়লা ব্যবসায়ীর ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনতাইকারীরা ছুরির ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নেয়। এই ব্যবসায়ীর বাড়ী সুনামগন্জের তাহিরপুর উপজেলা এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টার দিকে শহরের নাটাল মোড় এলাকার পুলিশের সার্কেল অফিসের সামনে। গতকাল সোমবার ভোরে একই এলাকায় ভিকচান মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা ও তিনটি বোয়াল মাছ ছিনতাই হয়। তার আগের দিন রোববার রাতে ওই এলাকায় কয়েকজন ছিনতাইকারী ৫ জন পথচারীকে আটক করে কয়েক হাজার টাকা ও পাঁচটি মূল্যবান মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় এক সাংবাদিকের বোন চট্রগ্রাম থেকে ভোররাত ৪ টায় ভৈরব  রেলস্টেশনে নেমে বাসায় যাওয়ার সময় শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে। এসময় ছিনতাইকারীরা তার ৫ ভরি স্বর্নলংকার ও একটি দামি মোবাইল নিয়ে যায়। গত একমাসে ভৈরব শহরে কমপক্ষে অর্ধশত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পৌর শহরের নাটাল মোড়, রেলস্টেশন রোড, দড়ি চন্ডিবের, স্টেডিয়ামের সামনে, ভৈরবপুর গার্লস স্কুলের সামনে, নদীর পাড়, আইস কোং মোড়, ঘোড়াকান্দা, নিউটাউন, পঞ্চবটি,  সম্ভুপুর, ভৈরব – কিশোরগন্জ আঞ্চলিক সড়কে প্রায়দিন এসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শহরে প্রতিদিন চুরি, ডাকাতির ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় মাদক সেবনকারী, সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাং সদস্যরা এসব ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। পুলিশ বলছে শহরের আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে তারা কাজ করছে, তবে শহরের সকল রোড নিরাপত্তা দেয়ার মত পুলিশের সংখ্যা নেই বলে পুলিশ জানায়। 

কয়লা ব্যবসায়ী নেসার আহমেদ বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ৭ টায় আমি বাসস্ট্যান্ড থেকে ফেরিঘাট রিক্সাযোগে যাওয়ার সময় তিনজন ছিনতাইকারী আমার রিক্সার গতিরোধ করে ছুরির ভয় দেখিয়ে আমার টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাগে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিল। ভৈরবের ফেরিঘাট থেকে  কয়লা কিনতে এটাকা ব্যাগে ছিল। ঘটনাটি আমি কয়লা ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রশিদ মিয়া বলেন, শহরের পাওয়ার হাউজ, নাটাল মোড় এখন ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্য। প্রতিদিন এখানে ছিনতাই হলেও পুলিশের ভূমিকা নিরব। বর্তমানে শহরের মানুষ চলাফেরায় আতংকে রয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর মানুষ আতংকিত অবস্থায় থাকে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, নাটাল মোড়ে প্রায়দিন ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার ইফরান, বাঘা ওরফে সাগর, রুমান নামের একটি কিশোর গ্যাং ছিনতাই করার অভিযোগ আছে।

ভৈরব থানার নবযোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, আমি মাত্র ৬ দিন আগে থানায় যোগদান করেছি। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক বন্ধ করাসহ আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে আমি কাজ করব। তিনি বলেন, আজ সকালে টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি তবে ভূক্তভূগি এখন থানায় এসে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নিব। থানায় যোগদানের পর আমি জানতে পারি ভৈরবে প্রতিমাসেই কয়েকজন ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আদালতে চালান দেয়া হয়। কিন্ত তারা সহজেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন শহরের প্রতিটি রোড নিরাপত্তা দেয়ার মত পুলিশের সংখ্যা থানায় নেই, তাই স্থানীয় জনগনকে সচেতন হতে হবে, সোচ্ছার হতে হবে। এরপরও আইনশৃংখলা রক্ষায়  শহরে পুলিশের টহল জোড়দার করা হবে বলে তিনি জানান।