৩১ ডিসেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে প্রতিবেশি ভাড়াটিয়ার বাসার ওয়াররড্রপে মিললো নিখোঁজ সাহাল (০৩) নামের এক শিশুর মরদেহ। নিহত শিশু ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ এলাকার কাতার প্রবাসী সানাউল্লাহ বাবুর ছেলে।
আজ মঙ্গলবার শেষ রাতে শহরের পঞ্চবটি এলাকার নতুন রাস্তা সংলগ্ন বলাকা স্কুলের পিছনের দিল মোহাম্মদের বাসায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। সানাউল্লাহ বাবু পঞ্চবটি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত।
এই ঘটনায় বাসার অপর ভাড়াটিয়া আশুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হাছান মিয়া (৩৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া নিহত শিশুর মা মোমেনা বেগমকে জিঙ্গাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা শিশুর মায়ের সাথে ভাড়াটিয়া যুবকের পরকীয়া সম্পর্কের জেরে হত্যার ঘটনাটি ঘটতে পারে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার মাগরিবের নামাযের সময় মায়ের সাথে তার ছেলে সন্তান সাহাল একসাথে ছিল । নামায শেষে বাসায় বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর তার শিশু সন্তানকে খোঁজে পাচ্ছিলনা মা। পরবর্তীতে আশেপাশে খোঁজাখুজি করে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান না পেয়ে রাতেই থানায় এবিষয়ে জিডি করেন শিশুর মা। অভিযোগ পাওয়ার পর ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শাহিন এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান করতে যায়। তারপর প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া হাছান মিয়ার রুমের তালা ভেঙে রুম তল্লাশী করে বাসায় থাকা ওয়ারড্রপের ভিতরে শিশুর মুখে কসটিপ পেছানো নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
শিশুর খালা রহিমা বেগম বলেন, মাগরিবের নামাযের সময় তার মায়ের সাথে ছিল শিশু সাহাল । নামাযের পর পর বাসায় বিদ্যুত চলে যায়। তারপর থেকে আমার বোনের একমাত্র ছেলেকে খোঁজে পাচ্ছিলনা ।
বাসার মালিক দিল মোহাম্মদের স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, গতকাল রাত ১১ টার দিকে আমার বাসার ভাড়াটিয়া হাছান মিয়া ফোন করে আমাকে জানান সন্ধ্যার পর থেকে মোমেনা বেগেমের ছেলেকে খোঁজে পাচ্ছে না। পরবর্তীতে জানতে পারি হাছানের বাসায় শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শাহিন মিয়া বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু আলামতের ভিত্তিতে পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়া হাছানকে সন্দেহ হয়। পরে তাকে ফোন করা হলে সে উপস্থিত হয়নি। এরপর তার রুমের তালা ভেঙ্গে রুম তল্লাশি করে ওয়ারড্রপের ভিতর শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পায় পুলিশ। এসময় শিশুর মুখে টেপ লাগানো ছিল। তারপর সোমবার রাতেই কৌশলে ভাড়াটিয়া হাছানসহ শিশুর মাকে প্রথমে আটক করে থানায় নিয়ে আসি। আজ মঙ্গলবার হাছান মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশের কাছে শিশু হত্যার কথা স্বীকার করে। শিশুটির মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনাটি দুজনের পরকিয়ার কারন কিনা তা তদন্ত করছে পুলিশ। তিনি বলেন হাছানকে গ্রেফতার দেখানো হলেও মাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পরে। আজ মঙ্গলবার সকালে শিশুর ময়না তদন্ত করতে লাশ কিশোরগন্জ পাঠানো হয়। এব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্ততি চলছে বলে জানান তিনি।