ভৈরবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন স্থগিতের দাবিতে ৫/৬ হাজার লোকের  সমাবেশ মানববন্ধন। স্বারকলিপি প্রদান।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৪৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৮১ Time View

২৮ ডিসেম্বর, নিজস্ব  প্রতিনিধ

ভৈরবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন স্থগিতের দাবিতে বিশাল এক সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়। ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যেগে আজ শনিবার সকাল ১১ টায় স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের পৌর পার্কের সামনে এই সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রায় ৫/৬ হাজার লোক ও বিদ্যুত গ্রাহক  অংশ নেয়। তাদের দাবি বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন বা সংযোগ স্থগিত রাখতে হবে।

সমাবেশে তারা বলেন, জনস্বার্থে বিদ্যুতের পোস্ট পেইড মিটার বাদ দিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগানোর পাঁয়তারা চলছে যা সাধারণ জনগন, শিল্প – কারখানা, মিল ফ্যাক্টোরির বিরাট ভোগান্তির কারন হবে। বর্তমানে মিটারগুলি সচল থাকা সত্বেও কেন অসৎ উদ্যেশে এই প্রকল্প চালু করা হয় তাদের প্রশ্ন। বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পটি বিগত স্বৈরাচার সরকারের লুটপাট, দুর্নীতির প্রকল্প। সাধারণ জনগন বা গ্রাহকগন বকেয়া বিলের জন্য বা নতুন লাইন সংযোগ আনতে গেলে বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ বল প্রয়োগ বা বিধিমালার ভয় দেখিয়ে প্রিপেইড মিটার দিয়ে দেয়। এতে হঠাৎ বিদ্যুত চলে গেলে, বেশী লোড পড়লে বা ভোল্টেজ উঠানামা করলে প্রিপেইড মিটার অটোলক হয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গিয়ে গ্রাহকের দুর্ভোগ বেড়ে যায়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভৈরব চেম্বারের পরিচালকবৃন্দসহ স্থানীয় শিল্প কারখানার মালিক ও গ্রাহকগন। পরে ভৈরব চেম্বারের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্র অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। স্বারকলিপির অনুলিপি দেয়া হয় বিদ্যুত বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাগনসহ ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে।

এবিষয়ে ভৈরব চেম্বারের সহ- সভাপতি বলেন, ভৈরবের মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে জনস্বার্থে আমাদের উদ্যেগে আজ সমাবেশ মানববন্ধন করেছি। প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পটি গত স্বৈরাচার সরকারের একটি দুর্নীতি – লুটপাট প্রকল্প। বর্তমানে গ্রাহকদের ডিজিটাল মিটার থাকা সত্বেও প্রিপেইড মিটারের প্রয়োজন নেই। কোন গ্রাহক ভৈরবে বিদ্যুত চুরি করেনা এবং নিয়মিত মাসিক বিল পরিশোধ করছে। কাজেই ভৈরববাসী প্রিপেইড মিটার চাইনা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে স্বারকলিপির কপি এখনও আমি হাতে পায়নি। কপি পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব।

ভৈরব বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, আমি আজ ছুটিতে আছি। তবে সমাবেশ – মানববন্ধন হয়েছে জেনেছি। তাদের স্বারকলিপি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিব। তিনি বলেন প্রিপেইড মিটার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত উর্ধতন কর্তৃপক্ষের, তাই আমি প্রকল্প বন্ধ করতে পারবনা। তাছাড়া পুরাতন গ্রাহকগন পোস্টপেইড মিটারে চলছে, শুধু নতুন সংযোগ নিলে প্রিপেইড মিটার দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ভৈরবে সব মিলে গ্রাহক সংখ্যা ৫৫ হাজার। তার মধ্য প্রিপেইড মিটারে চলে মাত্র ৫ হাজার গ্রাহক। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ অনেক স্থানে প্রিপেইড মিটারে লাইন চলছে। তাদের সমস্যা হয়েছে এমন অভিযোগ নেই। এখানে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে কেন। ঘটনাটি নিয়ে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিলে প্রকল্পটি বন্ধ হতে পারে। আর যদি সিদ্ধান্ত না দেয় তবে প্রিপেইড প্রকল্প বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন স্থগিতের দাবিতে ৫/৬ হাজার লোকের  সমাবেশ মানববন্ধন। স্বারকলিপি প্রদান।

Update Time : ১২:৪৫:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

২৮ ডিসেম্বর, নিজস্ব  প্রতিনিধ

ভৈরবে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন স্থগিতের দাবিতে বিশাল এক সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়। ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র উদ্যেগে আজ শনিবার সকাল ১১ টায় স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের পৌর পার্কের সামনে এই সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রায় ৫/৬ হাজার লোক ও বিদ্যুত গ্রাহক  অংশ নেয়। তাদের দাবি বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার স্থাপন বা সংযোগ স্থগিত রাখতে হবে।

সমাবেশে তারা বলেন, জনস্বার্থে বিদ্যুতের পোস্ট পেইড মিটার বাদ দিয়ে প্রিপেইড মিটার লাগানোর পাঁয়তারা চলছে যা সাধারণ জনগন, শিল্প – কারখানা, মিল ফ্যাক্টোরির বিরাট ভোগান্তির কারন হবে। বর্তমানে মিটারগুলি সচল থাকা সত্বেও কেন অসৎ উদ্যেশে এই প্রকল্প চালু করা হয় তাদের প্রশ্ন। বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পটি বিগত স্বৈরাচার সরকারের লুটপাট, দুর্নীতির প্রকল্প। সাধারণ জনগন বা গ্রাহকগন বকেয়া বিলের জন্য বা নতুন লাইন সংযোগ আনতে গেলে বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ বল প্রয়োগ বা বিধিমালার ভয় দেখিয়ে প্রিপেইড মিটার দিয়ে দেয়। এতে হঠাৎ বিদ্যুত চলে গেলে, বেশী লোড পড়লে বা ভোল্টেজ উঠানামা করলে প্রিপেইড মিটার অটোলক হয়ে বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে গিয়ে গ্রাহকের দুর্ভোগ বেড়ে যায়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভৈরব চেম্বারের পরিচালকবৃন্দসহ স্থানীয় শিল্প কারখানার মালিক ও গ্রাহকগন। পরে ভৈরব চেম্বারের পক্ষ থেকে স্থানীয় বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্র অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। স্বারকলিপির অনুলিপি দেয়া হয় বিদ্যুত বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাগনসহ ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে।

এবিষয়ে ভৈরব চেম্বারের সহ- সভাপতি বলেন, ভৈরবের মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে জনস্বার্থে আমাদের উদ্যেগে আজ সমাবেশ মানববন্ধন করেছি। প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পটি গত স্বৈরাচার সরকারের একটি দুর্নীতি – লুটপাট প্রকল্প। বর্তমানে গ্রাহকদের ডিজিটাল মিটার থাকা সত্বেও প্রিপেইড মিটারের প্রয়োজন নেই। কোন গ্রাহক ভৈরবে বিদ্যুত চুরি করেনা এবং নিয়মিত মাসিক বিল পরিশোধ করছে। কাজেই ভৈরববাসী প্রিপেইড মিটার চাইনা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে স্বারকলিপির কপি এখনও আমি হাতে পায়নি। কপি পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিব।

ভৈরব বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, আমি আজ ছুটিতে আছি। তবে সমাবেশ – মানববন্ধন হয়েছে জেনেছি। তাদের স্বারকলিপি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিব। তিনি বলেন প্রিপেইড মিটার স্থাপন করার সিদ্ধান্ত উর্ধতন কর্তৃপক্ষের, তাই আমি প্রকল্প বন্ধ করতে পারবনা। তাছাড়া পুরাতন গ্রাহকগন পোস্টপেইড মিটারে চলছে, শুধু নতুন সংযোগ নিলে প্রিপেইড মিটার দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ভৈরবে সব মিলে গ্রাহক সংখ্যা ৫৫ হাজার। তার মধ্য প্রিপেইড মিটারে চলে মাত্র ৫ হাজার গ্রাহক। দেশের রাজধানী ঢাকাসহ অনেক স্থানে প্রিপেইড মিটারে লাইন চলছে। তাদের সমস্যা হয়েছে এমন অভিযোগ নেই। এখানে সমস্যার কথা বলা হচ্ছে কেন। ঘটনাটি নিয়ে আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিলে প্রকল্পটি বন্ধ হতে পারে। আর যদি সিদ্ধান্ত না দেয় তবে প্রিপেইড প্রকল্প বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নেই।