ভৈরবে রেলওয়ে হাইস্কুলের  প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ।। তদন্ত কমিটি গঠন।।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২৩৭ Time View

১১ ডিসেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবে রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেন ও সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের নেতা  মির্জা সুলায়মানের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর এলাকাবাসী করা লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেনের এক বছরের কর্মকালে ডজন খানের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি  ও ক্ষমতার অপব্যবহারের চিত্র তুলে ধরা হয়। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ১,৪৩,৭৬,৬১৫/- টাকা বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে উত্তোলন করা হয়, যা ম্যানেজিং কমিটির সভায় অনুমোদন করা হয়নি।

অভিযোগে বলা হয়,   সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে খেয়াল খুশি মতো ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ব্যয় দেখিয়েছেন। ব্যয় করার ক্ষেত্রে কোন ক্রয় কমিটিও করা হয়নি। তাছাড়া দরপত্র আহ্বান না করে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করে বিপুল পরিমানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা  মির্জা সুলায়মান কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ের নামে জেলা পরিষদ থেকে একাধিক প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন। জেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন কাজ অনুমোদন হলেও সভাপতি মির্জা সুলায়মান নিজ প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মভাবে  ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ কিনে এনে তা বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে খরচ করে লাগামহীন দুর্নীতি অনিয়ম  করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।  জেলা পরিষদের এরকম শুধুমাত্র একটি প্রকল্পের কাজে ৬০ লক্ষ টাকার বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযোগ হচ্ছে, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের সকল নথি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে গায়েব করেছেন। তাছাড়া মাস্টার রোল না করে শ্রমিকের মজুরী বিলের নামে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা, তাহসিন এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানকে চার লক্ষধিক টাকা, খান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপকে আট লক্ষাধিক টাকাসহ সভাপতির ছেলে ইমনকে ইলেকট্রিক বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার শবনম শারমিন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি আজ বুধবার এলাকাবাসীর অভিযোগটি পেয়েছি। এবিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এছাড়া বিদ্যালয়টি আমি নিজে পরিদর্শন করব। তদন্তে অনিয়ম দুর্নীতি প্রমান হলে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করব। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেনের আনীত অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ অসত্য, মিথ্যা, বানোয়াট। বিদ্যালয়ে কাজ করানোসহ অন্যান্য কাজ নিয়ম মোতাবেক করানো হয়েছে। খরচের ভাউচারসহ অন্যান্য কাজের রেজিষ্টার অডিট করা হয়েছে। অডিটের সদস্যগনের  কোন আপত্তি নেই। সাবেক সভাপতি দায়িত্বে থেকে সবকিছু তদারকি করেছেন এবং রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন। কাজেই অভিযোগটি মিথ্যা বানোয়াট। যা পুনরায় তদন্ত করলে প্রমান পাবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মির্জা মোঃ সুলাইমানের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি ভৈরবের বাসায় নেই। বাসা থেকে বলা হয় তিনি ঢাকায় আছেন।  একারনে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে রেলওয়ে হাইস্কুলের  প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ।। তদন্ত কমিটি গঠন।।

Update Time : ০১:৪১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

১১ ডিসেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 ভৈরবে রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেন ও সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগের নেতা  মির্জা সুলায়মানের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর এলাকাবাসী করা লিখিত অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেনের এক বছরের কর্মকালে ডজন খানের আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি  ও ক্ষমতার অপব্যবহারের চিত্র তুলে ধরা হয়। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে ১,৪৩,৭৬,৬১৫/- টাকা বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে উত্তোলন করা হয়, যা ম্যানেজিং কমিটির সভায় অনুমোদন করা হয়নি।

অভিযোগে বলা হয়,   সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মিলে খেয়াল খুশি মতো ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ব্যয় দেখিয়েছেন। ব্যয় করার ক্ষেত্রে কোন ক্রয় কমিটিও করা হয়নি। তাছাড়া দরপত্র আহ্বান না করে বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করে বিপুল পরিমানের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা  মির্জা সুলায়মান কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ের নামে জেলা পরিষদ থেকে একাধিক প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছেন। জেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন কাজ অনুমোদন হলেও সভাপতি মির্জা সুলায়মান নিজ প্রভাব খাটিয়ে অনিয়মভাবে  ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজ কিনে এনে তা বিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে খরচ করে লাগামহীন দুর্নীতি অনিয়ম  করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।  জেলা পরিষদের এরকম শুধুমাত্র একটি প্রকল্পের কাজে ৬০ লক্ষ টাকার বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযোগ হচ্ছে, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের সকল নথি প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি মিলে গায়েব করেছেন। তাছাড়া মাস্টার রোল না করে শ্রমিকের মজুরী বিলের নামে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা, তাহসিন এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানকে চার লক্ষধিক টাকা, খান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপকে আট লক্ষাধিক টাকাসহ সভাপতির ছেলে ইমনকে ইলেকট্রিক বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী অফিসার শবনম শারমিন অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি আজ বুধবার এলাকাবাসীর অভিযোগটি পেয়েছি। এবিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এছাড়া বিদ্যালয়টি আমি নিজে পরিদর্শন করব। তদন্তে অনিয়ম দুর্নীতি প্রমান হলে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করব। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোক্তার হোসেনের আনীত অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ অসত্য, মিথ্যা, বানোয়াট। বিদ্যালয়ে কাজ করানোসহ অন্যান্য কাজ নিয়ম মোতাবেক করানো হয়েছে। খরচের ভাউচারসহ অন্যান্য কাজের রেজিষ্টার অডিট করা হয়েছে। অডিটের সদস্যগনের  কোন আপত্তি নেই। সাবেক সভাপতি দায়িত্বে থেকে সবকিছু তদারকি করেছেন এবং রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন। কাজেই অভিযোগটি মিথ্যা বানোয়াট। যা পুনরায় তদন্ত করলে প্রমান পাবে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মির্জা মোঃ সুলাইমানের সাথে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি ভৈরবের বাসায় নেই। বাসা থেকে বলা হয় তিনি ঢাকায় আছেন।  একারনে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।