২ ডিসেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে ইসকনের প্রার্থনালয় নামহট্র সংঘে হামলা ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ আরও তিনজনকে রোববার শহর এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করে। তারা গতকাল রোববার সন্ধ্যায় কিশোরগন্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্যাট আদালতে হামলা ভাংচুরের ঘটনাটি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে স্বীকার করে। রোববার বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে রাত ৭ টা পর্যন্ত বিচারক কিশোরদত্ত তিনজনের জবানবন্দি গ্রহন করেন। গ্রেফতার কৃতরা হলো ভৈরব রানীন বাজার এলাকার জামাল মিয়ার ছেলে রাফসান জানি ( ১৬), শহরের কমলপুর এলাকার মোঃ এনামুল হকের ছেলে উমায়েদ আহমেদ (১৫) ও একই এলাকার মিজান মিয়ার ছেলে মোবারক মিয়া (১৬)। রোববার রাতে তাদের জবানবন্দি শেষে তিনজনের বয়স কম হওয়ায় আদালতের বিচারক তাদেরকে গাজীপুর কিশোর সংশোধনী কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেন। পুলিশ গ্রেফতার ও সংশোধনী কেন্দ্রে পাঠানোর কথা স্বীকার করেন।
এর আগের দিন শনিবার ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। এরা হলো ছাত্রলীগ কর্মী সানজিত (২২), হাসিবুল হাসান প্রান্ত (২৮) ও তার ভাই হাসিবুল হাসান শান্ত (২২। ঘটনায় গত দুদিনে পুলিশ ৬ জনকে গ্রেফতার করে। শনিবার গ্রেফতারকৃত তিনজনকে কিশোরগন্জ কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারকৃত তিন কিশোর রোববার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বলেন, ঘটনার দিন শুক্রবার তাদের সঙ্গী আবির, আরাফাত ও জাফরিন তাদেরকে বলে ভৈরব রানীর বাজারে অবস্থিত ইসকনের প্রার্থনালয় নামহট্র সংঘতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করতে হবে। ইসকন পরিচালিত নামহট্র সংঘ ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে তারা তাদেরকে নির্দেশ দেয় । সঙ্গীদের কথায় তারাসহ ১৫/২০ জন যুবক কিশোর সেখানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ঘটনায় প্রশাসনসহ এলাকায় তোলপাড় হয়।
গত শুক্রবার বিকেলে ইসকন পরিচালিত প্রার্থনালয় নামহট্র সংঘটি দুর্বত্তরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাট করে। খবর পেয়ে পুলিশ, র্যাব, সেনাসদস্যগন ঘটনাস্থলে এদিন ছুটে আসেন। পরদিন শনিবার সকালে কিশোরগন্জে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার দিন রাতেই ঘটনায় নামহট্র সংঘের ভক্ত প্রনয় কর্মকার বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ভৈরব বাজারের পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মামুন জানান, ঘটনায় সিসি ফুটেজ দেখে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তার মধ্য রোববার তিন কিশোর ঘটনা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। তারাসহ ১৫/২০ জন তিন অপরাধীর নির্দেশে ঘটনাটি ঘটায় আদালতে তারা স্বীকার করে। তাদের বয়স কম হওয়ায় তিনজনকে গাজীপুর কিশোর সংশোধনী কেন্দ্র পাঠিয়েছে আদালত।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া জানান, ঘটনায় রোববার মূল তিন অপরাধীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারা আদালতে ঘটনার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছে। বাকী অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।