২৯ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে স্বামী – স্ত্রীসহ দুই সন্তানের লাশ উদ্ধারের পর লাশের ময়না তদন্ত শেষে গত বুধবার রাতে ৪ জনের দাহ সম্পন্ন করা হয় তাদের গ্রামের বাড়ী নরসিংদির রায়পুরা থানার আনোয়ারাবাদ গ্রামে। ঘটনায় গত বুধবার সকালে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহত জনি চন্দ্র বিশ্বাসের মা শিখারানী বিশ্বাস। ৪ জনের মৃত্যু ছাড়াও নিষ্ঠুর বাবা জনি তার স্ত্রীর গর্ভের অনাগত সন্তানকে পৃথিবীতে আসতে দিলনা। স্ত্রী নিপা বর্মন ৫ মাসের গর্ভবতি ছিল বলে তার পরিবার সূত্র জানিয়েছে। বুধবার তারা ৪ জনের লাশ গ্রামের বাড়ীতে নিলে এক হৃদবিদারক মর্মান্তিক ঘটনার সৃষ্টি হয়। জনির ছোট ভাই পলাশ বর্মন জানান, লাশগুলি দেখে আমাদের আত্মীয়- স্বজন, প্রতিবেশী ও গ্রামবামী স্তব্দ হয়ে যায়। লাশ দেখতে শত শত মানুষ ভীড় করে। চারটি লাশ দাহ করতে বুধবার রাত তিনটা বাজে। আমার ভাই ও তার স্ত্রী দুই সন্তানের মৃত্যু বেদনাদায়ক। ঘটনার পর আমাদের পরিবারের সদস্যগন তিনদিন যাবত শোকে কাতর হয়ে আছি। তিনি বলেন আমার দিদি ৫ মাসের গর্ভবতি ছিল। তার অনাগত সন্তানকেও পৃথিবীতে আসতে দিলনা আমার ভাই। কেন এমন মর্মান্তিক হৃদবিদারক নিষ্ঠুর ঘটনাটি করলেন ভাই তা আমরা বুঝতে পারছিনা। তিনি বলেন আমার ভাইয়ের সংসার অসুখী ছিলনা।
গত মঙ্গলবার ভৈরবের রানীর বাজার এলাকার একটি সাততলা ভবনের বাসা থেকে পুলিশ তারা ৪ জনের লাশ উদ্ধার করে। এরা হলো জনি চন্দ্র বিশ্বাস(৩০), তার স্ত্রী নিপা বিশ্বাস (২৬), ছেলে ধ্রুব বিশ্বাস (৮) ও মেয়ে কথা বিশ্বাস (৬)। স্ত্রী ও দুই সন্তান খাটের বিছানায় পড়ে ছিল ও স্বামী গলায় ফাঁস নিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলছিল। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারনা জনি বিশ্বাস প্রথমে স্ত্রীকে হত্যার পর দুই সন্তানকে হত্যা করে। পরে সে নিজে আত্মহত্যা করে। গত সোমবার রাতের কোন এক সময় ঘটনাটি ঘটে। জনি বিশ্বাস ভৈরব বাজারে একটি ওয়ার্কশপে হেডমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করত। তাদের বাড়ী নরসিংদির রায়পুরার আনোয়ারাবাদ গ্রামে। রানীর বাজারে ভাড়া বাসায় থাকত জনি তার পরিবার নিয়ে। কি কারনে স্বামী জনি এঘটনাটি ঘটালো কেউ বলতে পারছেনা। তবে পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে কাজ করছে।
অনাগত গর্ভের সন্তান ধরা হলে ৫ টি হত্যা হয়। জনি বর্মন তার পরিবারের সদস্যদেরসহ অনাগত সন্তানকেও হত্যা করল।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া আজ শুক্রবার দুপুরে জানান, লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করার পর লাশগুলি বুধবার সন্ধ্যায় তার পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ী নিয়ে গেছে। ঘটনায় জনির মা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নিব, তবে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পুলিশসহ ক্রাইম সিন, সিআইডি, পিবিআই, ডিবি একযোগে কাজ করছে।