ভৈরবে জুলাই- আগস্টে ছাত্র – জনতার গণ-অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা। কাঁদলেন নিহত জোবায়েদের মা।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • ১২৬ Time View

২৮ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবে জুলাই-আগস্ট ছাত্র- জনতার গণ-অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এই স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন। অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা  সহকারী  কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহম্মদ, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া, শহিদ পরিবারের নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম  ও নিহত কবির মিয়ার স্ত্রী সামিয়া বেগম।

 অনুষ্ঠানে জুলাই মাসে আহত মামুন, আগস্টে আহত জাহিদ হোসেন হৃদয়, মেহেদি হাসান জিন্না,  ছাত্র অর্ন ও ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত জোবায়েদের মা এবং নরসিংদিতে গুলিতে নিহত কবিরের স্ত্রী  বক্তব্য রাখেন। 

আহত মামুন বলেন, ছাত্র- জনতার আন্দোলনের সময় দুর্বত্তরা আমার এক হাত কেটে পঙ্গু করে দিয়েছে আমাকে। নিহত কবিরের স্ত্রী সামিয়া বেগম বলেন আমার স্বামী আগস্ট মাসে  নরসিংদিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমি এখন সন্তানদের নিয়ে  দিশেহারা।

নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম বলেন, আমি  ঢাকার শনির আখড়ার বাসায় স্বামী সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। ঘটনার দিন ৪ আগস্ট আমার ছেলে জোবায়েদ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে খবর পায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় সে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। তারপর রাত ১১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ পায়। আমার উপার্জনশীল ছেলেকে হারিয়ে আমি এখন পাগল হয়ে গেছি। আমি এখন কি করব বুঝতে পারছিনা।  বক্তব্যের সময় তিনি বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে শান্তনা দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন তার বক্তব্য বলেন, যুগে যুগে এদেশে স্বৈরাচার আন্দোলন হয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্র- জনতার ভূমিকা থাকে। এবারে আন্দোলনটি এমনি ছিল। জুলাই – আগস্টের আন্দোলনে সারাদেশে অসংখ্য মানুষ মারা গেছে, আহত হয়েছে হাজারও মানুষ। আমি জেনেছি ভৈরবেও এবারের আন্দোলনে কয়েকশ মানুষ  আহত হয়েছে এবং ঢাকা – নরসিংদিতে ভৈরবের জোবায়েদ ও কবির গুলিতে নিহত হয়। দুজনের নিহত ঘটনায় আমরা ব্যথিত দুঃখিত। জোবায়ের মা আজকের অনুষ্ঠানে কেঁদে কেঁদে বক্তব্যে তার ছেলের মৃত্যুর করুন কাহিনী বলেছেন। তার বক্তব্য শুনে আমার চোখে পানি এসেছে।  ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন নতুন সরকার ক্ষমতায় আছে। তিনি বলেন আসুন আমরা সকলে মিলে দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে জুলাই- আগস্টে ছাত্র – জনতার গণ-অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা। কাঁদলেন নিহত জোবায়েদের মা।

Update Time : ০৮:২৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

২৮ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবে জুলাই-আগস্ট ছাত্র- জনতার গণ-অভ্যুর্থনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এই স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন। অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা  সহকারী  কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বুলবুল আহম্মদ, ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া, শহিদ পরিবারের নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম  ও নিহত কবির মিয়ার স্ত্রী সামিয়া বেগম।

 অনুষ্ঠানে জুলাই মাসে আহত মামুন, আগস্টে আহত জাহিদ হোসেন হৃদয়, মেহেদি হাসান জিন্না,  ছাত্র অর্ন ও ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত জোবায়েদের মা এবং নরসিংদিতে গুলিতে নিহত কবিরের স্ত্রী  বক্তব্য রাখেন। 

আহত মামুন বলেন, ছাত্র- জনতার আন্দোলনের সময় দুর্বত্তরা আমার এক হাত কেটে পঙ্গু করে দিয়েছে আমাকে। নিহত কবিরের স্ত্রী সামিয়া বেগম বলেন আমার স্বামী আগস্ট মাসে  নরসিংদিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। আমি এখন সন্তানদের নিয়ে  দিশেহারা।

নিহত জোবায়েদের মা হোসনে আরা বেগম বলেন, আমি  ঢাকার শনির আখড়ার বাসায় স্বামী সন্তানদের নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতাম। ঘটনার দিন ৪ আগস্ট আমার ছেলে জোবায়েদ সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে খবর পায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় সে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। তারপর রাত ১১ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ পায়। আমার উপার্জনশীল ছেলেকে হারিয়ে আমি এখন পাগল হয়ে গেছি। আমি এখন কি করব বুঝতে পারছিনা।  বক্তব্যের সময় তিনি বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে শান্তনা দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন তার বক্তব্য বলেন, যুগে যুগে এদেশে স্বৈরাচার আন্দোলন হয়েছে। প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্র- জনতার ভূমিকা থাকে। এবারে আন্দোলনটি এমনি ছিল। জুলাই – আগস্টের আন্দোলনে সারাদেশে অসংখ্য মানুষ মারা গেছে, আহত হয়েছে হাজারও মানুষ। আমি জেনেছি ভৈরবেও এবারের আন্দোলনে কয়েকশ মানুষ  আহত হয়েছে এবং ঢাকা – নরসিংদিতে ভৈরবের জোবায়েদ ও কবির গুলিতে নিহত হয়। দুজনের নিহত ঘটনায় আমরা ব্যথিত দুঃখিত। জোবায়ের মা আজকের অনুষ্ঠানে কেঁদে কেঁদে বক্তব্যে তার ছেলের মৃত্যুর করুন কাহিনী বলেছেন। তার বক্তব্য শুনে আমার চোখে পানি এসেছে।  ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন নতুন সরকার ক্ষমতায় আছে। তিনি বলেন আসুন আমরা সকলে মিলে দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলি।