১৯ নভেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধ
মিথ্যা মামলা করার অভিযোগে ভৈরবের সাবেক যুবলীগ নেতা ও মামলার বাদি মোঃ মনির হোসেনকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে ভুক্তভূগিরা। ভৈরব উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আবদুল মান্নান মিয়ার ছেলে বাদি মনির। গত ১ সেপ্টেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় জোবায়েদ (১৬) নামের এক কিশোরকে অপহরণ করে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ এনে ভৈরবের ৯১ জনকে আসামী করে মামলাটি করে। এই মিথ্যা মামলায় ভৈরবের সিনিয়র তিনজন সাংবাদিক ও ৫ জন প্রবাসীকেও আসামী করে। এছাড়া সাধারণ নিরীহ, অসুস্থ লোককেও মিথ্যা আসামী করা হয়। নিহত জোবায়েদের বাড়ী ভৈরবের গকুল নগর গ্রামে। সেসহ তার পরিবার ঢাকার শনির আখড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকত। জোবায়েদ ঢাকায় ফার্নিচার দোকানের কর্মচারী ছিল। গত ৪ আগস্ট সকালে জোবায়েদ তার ঢাকার বাসা থেকে সকালে বের হয়ে দুপুরে বাসায় ফেরার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। এটা তার বাবা মায়ের দাবি। অথচ বাদি মনির হোসেন মামলায় অভিযোগ করেন তাকে ভৈরব বাসস্ট্যান্ড থেকে অপহরণ করে আসামীরা হত্যা করেছে। এখানে মজার বিষয় হলো বাদি নিহতের কোন আত্মীয় স্বজন বা প্রতিবেশী নয়। বাদিকে নিহতের পরিবার চেনেনা বলে নিহতের বাবা নাজির হোসেন বলেছেন।
জানা গেছে ভৈরবের একটি কুচক্রি মহলের প্ররোচনায় মনির হোসেন টাকার বানিজ্য করতে মিথ্যা মামলাটি করেছে বলে প্রচার আছে। আসামীদের দাবি পুরা মামলাটি ভূয়া, মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক। তারা সবাই এই মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি চান।
স্থানীয় সাংবাদিক কাজী মাছুম বলেন, আমি সাংবাদিকতা করি, আমাকে মিথ্যা মামলায় কেন আসামী করল। বাদি একজন প্রতারক। মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ বানিজ্যের নেশায় সে মামলাটি করেছে। একই কথা বলেছেন আরেক সাংবাদিক অপু। তারা বলেন, মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত করে যদি মিথ্যা প্রমান হয় তবে বাদীকে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতার করতে হবে।
ভৈরব চেম্বারের সাবেক সভাপতি আলহাজ্জ মোঃ হুমায়ূন কবির বলেন, এই মামলায় আমাকে আসামী করা হয়। অথচ ঘটনার দিন ৪ আগস্ট আমি বিদেশে ছিলাম। একই কথা বলেছেন মিনা ইসলাম। তিনি তিন বছর যাবত আমেরিকা প্রবাসী। তারা বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন। প্রয়োজনে তারা বাদির বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।
এবিষয়ে মামলার বাদি মোঃ মনির হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জনস্বার্থে আমি মামলাটি করেছি। নিহতের পরিবার আমার কোন স্বজন নয় তিনি স্বীকার করেছেন। স্থানীয় রাজনীতির বিষয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে আমি মামলা করি। তবে ঘটনার সাথে কোন আসামী জড়িত না থাকলে পুলিশ ওইসব আসামীকে চার্জশীট থেকে অবশ্যই বাদ দিবে। সব আসামীকে তিনি চেনেননা বলে জানান। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে মামলায় ৯১ জনকে আসামী করেছেন বলে তার দাবি।
যাত্রাবাড়ী থানার উপ- পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হাসান ফোনে জনপদ সংবাদ প্রতিনিধিকে জানান, মামলাটি আমি তদন্ত করছি। বাদী, নিহতের পরিবার, স্বাক্ষীদের সাথে আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলব, জিজ্ঞাসাবাদ করব। এছাড়া ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর সবকিছু নিয়ে বিশ্লেষন করার পর আইনগত ব্যবস্থা নিব।