ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১ জন।। আহত -৫০  জন।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • ২০০ Time View

৩১ অক্টোবর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাইয়ূম মিয়া নামের এক ব্যক্তি নিহত হয় এবং আহত হয়  ৫০ জন। মৌটুপি গ্রামের রমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে নিহত কাইয়ূম। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে  আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন শৃংখলা বাহিনীর পুলিশ ও যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।  আহতদের মধ্য যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলো শান্ত, লিটন, সায়েম, মোস্তাক, ফাইজুল, রাবেয়া বেগম, মিলন, সালাম, সোয়েব, কাদির, মাইনুদ্দিন, সেলিম, বানেছা খাতুন, রফিকুল, হাছান, আরজ আলী প্রমূখ। আহতদের মধ্য ৮/১০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাজিতপুর জুহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয় ও বাকী আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, মৌটুপি গ্রামে সরকার বাড়ীর বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা  মোঃ সাফায়েত উল্লাহ ও কর্তা বাড়ীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং বিএনপি নেতা মোঃ তোফাজ্জল হক গ্রুপের মধ্য দীর্ঘ ৫২ বছর যাবত আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রায় এক ডজন খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ঈদের পরদিন তোফাজ্জল হকের গোস্টির নাদিম কর্তা  সরকার বাড়ীর লোকজনের হাতে খুন হয়। অপরদিকে এই ঘটনার কয়েকদিন পর কর্তা বাড়ীর লোকজনের হাতে সরকার বাড়ীর ইকবাল খুন হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের কয়েকশ বাড়ীঘর ভাংচুর লুটপাট হয়েছে। দুটি খুনের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০০ আসামী করে  পাল্টাপাল্টি মামলা হয় থানায়। এরই মধ্য কর্তা বাড়ীর  নাদিম হত্যা মামলার আসামীরা আদালত থোকে জামিন পেয়ে বাড়ীতে চলে আসলেও সরকার বাড়ীর  ইকবাল হত্যা মামলার আসামীরা জামিন না নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ীতে আসলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র রামদা, লাঠি, বল্লম, তীরসহ ইটপাটকেল নিয়ে মাঠে নেমে পড়লে আজ কাইয়ূম মিয়া বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় উভয় পক্ষের অন্তত  ৫০  জন আহত হয়।

এবিষয়ে সরকার বাড়ীর বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সাফায়েত উল্লাহ বলেন, কর্তা বাড়ীর নাদিম মারা গেলে আমাদের গোস্টির কমপক্ষে দুইশ বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট, আগুন লাগানো হয়। ৫২ বছর যাবত তোফাজ্জল হক তার বংশের  লোকজন নিয়ে আমাদেরকে অত্যাচার নির্যাতন করছে, আমার দুই ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আজও আমার বংশের কাইয়ূমকে তারা হত্যা করল। 

অপরদিকে প্রতিপক্ষের কর্তা বাড়ীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন আজ আমার বংশের লোকজন পলাতক জীবন থেকে বাড়ীতে গেলে সরকার বাড়ীর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন আমরা অত্যাচার নির্যাতন করিনা বরং সরকার বাড়ীর লোকজনের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে আছি। তারা এপর্যন্ত  আমার বংশের ৪ জনকে খুন করেছে।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীসহ পুলিশ র‍্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য চেষ্টা করছে। তিনি বলেন মৌটুপি গ্রামের দুটি বংশের ঝগড়া বিবাদ দীর্ঘদিনের। তাদের এসব ঘটনায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। এগ্রামের মানুষের বর্বরতা নিষ্ঠুর কর্মকান্ড অমানুষের মত। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ চেষ্টা করছে। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে  এক সঙ্গে তিন জমজ ছেলে সন্তান জন্ম নিল। খুশি দম্পতি তবে চিন্তিত তাদের ভরণপোষণ নিয়ে। 

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১ জন।। আহত -৫০  জন।

Update Time : ১০:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

৩১ অক্টোবর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাইয়ূম মিয়া নামের এক ব্যক্তি নিহত হয় এবং আহত হয়  ৫০ জন। মৌটুপি গ্রামের রমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে নিহত কাইয়ূম। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপি গ্রামে  আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন শৃংখলা বাহিনীর পুলিশ ও যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।  আহতদের মধ্য যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলো শান্ত, লিটন, সায়েম, মোস্তাক, ফাইজুল, রাবেয়া বেগম, মিলন, সালাম, সোয়েব, কাদির, মাইনুদ্দিন, সেলিম, বানেছা খাতুন, রফিকুল, হাছান, আরজ আলী প্রমূখ। আহতদের মধ্য ৮/১০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাজিতপুর জুহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয় ও বাকী আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, মৌটুপি গ্রামে সরকার বাড়ীর বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ নেতা  মোঃ সাফায়েত উল্লাহ ও কর্তা বাড়ীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এবং বিএনপি নেতা মোঃ তোফাজ্জল হক গ্রুপের মধ্য দীর্ঘ ৫২ বছর যাবত আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রায় এক ডজন খুনের ঘটনা ঘটেছে। গত ঈদের পরদিন তোফাজ্জল হকের গোস্টির নাদিম কর্তা  সরকার বাড়ীর লোকজনের হাতে খুন হয়। অপরদিকে এই ঘটনার কয়েকদিন পর কর্তা বাড়ীর লোকজনের হাতে সরকার বাড়ীর ইকবাল খুন হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের কয়েকশ বাড়ীঘর ভাংচুর লুটপাট হয়েছে। দুটি খুনের ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০০ আসামী করে  পাল্টাপাল্টি মামলা হয় থানায়। এরই মধ্য কর্তা বাড়ীর  নাদিম হত্যা মামলার আসামীরা আদালত থোকে জামিন পেয়ে বাড়ীতে চলে আসলেও সরকার বাড়ীর  ইকবাল হত্যা মামলার আসামীরা জামিন না নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়ীতে আসলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র রামদা, লাঠি, বল্লম, তীরসহ ইটপাটকেল নিয়ে মাঠে নেমে পড়লে আজ কাইয়ূম মিয়া বল্লমের আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় উভয় পক্ষের অন্তত  ৫০  জন আহত হয়।

এবিষয়ে সরকার বাড়ীর বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ সাফায়েত উল্লাহ বলেন, কর্তা বাড়ীর নাদিম মারা গেলে আমাদের গোস্টির কমপক্ষে দুইশ বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট, আগুন লাগানো হয়। ৫২ বছর যাবত তোফাজ্জল হক তার বংশের  লোকজন নিয়ে আমাদেরকে অত্যাচার নির্যাতন করছে, আমার দুই ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আজও আমার বংশের কাইয়ূমকে তারা হত্যা করল। 

অপরদিকে প্রতিপক্ষের কর্তা বাড়ীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হক বলেন আজ আমার বংশের লোকজন পলাতক জীবন থেকে বাড়ীতে গেলে সরকার বাড়ীর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন আমরা অত্যাচার নির্যাতন করিনা বরং সরকার বাড়ীর লোকজনের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে আছি। তারা এপর্যন্ত  আমার বংশের ৪ জনকে খুন করেছে।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীসহ পুলিশ র‍্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য চেষ্টা করছে। তিনি বলেন মৌটুপি গ্রামের দুটি বংশের ঝগড়া বিবাদ দীর্ঘদিনের। তাদের এসব ঘটনায় একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। এগ্রামের মানুষের বর্বরতা নিষ্ঠুর কর্মকান্ড অমানুষের মত। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ চেষ্টা করছে।