ভৈরবে বিয়ের দাবিতে ২ সপ্তাহ যাবত প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছে  প্রেমিকা।  এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি।। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:২৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৪৪ Time View

৩০ অক্টোবর, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে বিয়ের দাবিতে ২ সপ্তাহ যাবত প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান করছে প্রেমিকা। তার বাবা-মা অনেক চেষ্টার পরও মেয়েকে বাড়ীতে ফেরাতে না পেরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘূরছে। ঘটনাটি এলাকায় বেশ  চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে  পৌর শহরের চণ্ডিবের উত্তর কান্দা পাড়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে। প্রেমিক নাদিম মিয়া (২৬) ওই এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। প্রেমিকা আফরিন বেগম (১৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শহরের মাইজপাড়া এলাকার আলমগীর মিয়ার মেয়ে। এদিকে প্রেমিকা আসার খবরে প্রেমিক নাদিম ২ সপ্তাহ যাবত  লাপাত্তা হয়ে আছে। বন্ধ করে রেখেছে তার মোবাইল।

মেয়ের এমন কান্ডে প্রেমিকার বাবা ও মা   আজ বুধবার ( ৩০ অক্টোবর)  দুপুরে ভৈরবে এসে   উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত)  রিদুওয়ান আহমেদ রাফির কাছে ছুটে যান। 

এবিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। প্রথম দিকে প্রেমিকের পরিবার বিয়ের আশ্বাস দিলেও এখন করছে নানা  তালবাহানা। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন  যাবত নাদিমের সাথে অফরিনের প্রেমের সম্পর্ক। প্রথম দিকে মুঠোফোনে তাদের যোগাযোগ ছিল। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা একে অপরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতো। গত  ১৫ দিন যাবত নাদিমের সাথে আফরিন কোন রকম যোগাযোগ করতে না পেরে ১৭ অক্টোবর প্রেমিকের বাড়ি ভৈরবে  চলে আসে। অবস্থান নেয়  প্রেমিকের চাচার ঘরে। আজ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২ সপ্তাহ যাবত ওই বাড়িতে সে অবস্থান করছে। আফরিনের  এক কথা বিয়ে না করা পর্যন্ত তার বাড়ী ছেড়ে যাবেনা।   

এ বিষয়ের স্থানীয়রা জানান, একটি অবিবাহিত মেয়ে দীর্ঘ দুই সপ্তাহ যাবত এলাকায় আছে। এটা কোনো স্বাভাবিক বিষয় না৷ আমরা সামাজিক ভাবে এটি সমাধান করতে পারিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও দুই পক্ষের পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথম দিকে ছেলের বাবা রাজি থাকলেও এখন প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় স্থানীয়দেরও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হোক। আমাদের এলাকার মানসম্মান যেন নষ্ট না হয়। 

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস  মিয়া জানান, ইউএনও ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসার পর আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল তদারকি করতে। গত  ২২ অক্টোবর রাতে এসে ইউএনও  পরদিন ২৩ অক্টোবর দুপুর  ১২ টার মধ্যে বিয়ে দিয়ে দিতে বলে যান। আমি স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে যায়। প্রথম দিকে ছেলে পরিবারের সম্মতি থাকলেও এখন হঠাৎ করে পল্টি দিয়েছে। বরং  আমাকে হুমকি ধামকিও দিচ্ছে। আমি নিজেই আতঙ্কে রয়েছি। 

এদিকে সরেজমিনে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায় ছেলের  বাবা শাহজাহান মিয়াকে। প্রথমে সাংবাদিকদের দেখে অসাধাচরণ করেন তিনি। কথা বলতে রাজি হননি। পরে সাংবাদিকের তিনি জানান, আমার সাথে দুই মাস যাবত ছেলের কোন রকম যোগাযোগ নেই। মেয়েটি পরিকল্পিত ভাবে় আমাদের বাড়িতে এসেছে। মেয়ের পরিবার আমার কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেছে। স্থানীয় কিছু প্রতারক  আমার জমি কেড়ে নিতে মেয়েটিকে লেলিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলে যদি কোন অপরাধ করে থাকে,  তাকে খোঁজে বের করে বিয়ে করিয়ে দিন। আমার জমি নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা চলছে। একটি চক্র সমাজে আমাকে অসম্মান করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। 

এ বিষয়ে মেয়েটি বাবা আলমগীর মিয়া বলেন, আমি নিরুপায়। কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না৷ ছেলের পরিবার আজকে কালকে বলে আমাকে ঘুরাচ্ছে। আমি কোনো সমাধান না পেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তাতেও কোন কাজ হয়নি৷ এখন আবার ছেলের বাবা আমাকে নানান ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।  

এ বিষয়ে নাদিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিদুওয়ান আহমেদ রাফি বলেন, আমি দুই পরিবারের সাথেই কথা বলে সমাধানের কথা বলে দিয়েছিলাম। এখনো তারা কোন সমাধান করতে পারেনি ৷ মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিল। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মেয়ের পরিবারকে আমি আজ  জানিয়ে দিয়েছি। কারন জোর করে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করার ইখতিয়ার নেই আমার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে  এক সঙ্গে তিন জমজ ছেলে সন্তান জন্ম নিল। খুশি দম্পতি তবে চিন্তিত তাদের ভরণপোষণ নিয়ে। 

ভৈরবে বিয়ের দাবিতে ২ সপ্তাহ যাবত প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছে  প্রেমিকা।  এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি।। 

Update Time : ০২:২৯:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

৩০ অক্টোবর, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে বিয়ের দাবিতে ২ সপ্তাহ যাবত প্রেমিকের বাড়ীতে অবস্থান করছে প্রেমিকা। তার বাবা-মা অনেক চেষ্টার পরও মেয়েকে বাড়ীতে ফেরাতে না পেরে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘূরছে। ঘটনাটি এলাকায় বেশ  চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে  পৌর শহরের চণ্ডিবের উত্তর কান্দা পাড়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে। প্রেমিক নাদিম মিয়া (২৬) ওই এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে। প্রেমিকা আফরিন বেগম (১৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শহরের মাইজপাড়া এলাকার আলমগীর মিয়ার মেয়ে। এদিকে প্রেমিকা আসার খবরে প্রেমিক নাদিম ২ সপ্তাহ যাবত  লাপাত্তা হয়ে আছে। বন্ধ করে রেখেছে তার মোবাইল।

মেয়ের এমন কান্ডে প্রেমিকার বাবা ও মা   আজ বুধবার ( ৩০ অক্টোবর)  দুপুরে ভৈরবে এসে   উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত)  রিদুওয়ান আহমেদ রাফির কাছে ছুটে যান। 

এবিষয়ে স্থানীয়দের মাঝে চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা। প্রথম দিকে প্রেমিকের পরিবার বিয়ের আশ্বাস দিলেও এখন করছে নানা  তালবাহানা। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন  যাবত নাদিমের সাথে অফরিনের প্রেমের সম্পর্ক। প্রথম দিকে মুঠোফোনে তাদের যোগাযোগ ছিল। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা একে অপরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতো। গত  ১৫ দিন যাবত নাদিমের সাথে আফরিন কোন রকম যোগাযোগ করতে না পেরে ১৭ অক্টোবর প্রেমিকের বাড়ি ভৈরবে  চলে আসে। অবস্থান নেয়  প্রেমিকের চাচার ঘরে। আজ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২ সপ্তাহ যাবত ওই বাড়িতে সে অবস্থান করছে। আফরিনের  এক কথা বিয়ে না করা পর্যন্ত তার বাড়ী ছেড়ে যাবেনা।   

এ বিষয়ের স্থানীয়রা জানান, একটি অবিবাহিত মেয়ে দীর্ঘ দুই সপ্তাহ যাবত এলাকায় আছে। এটা কোনো স্বাভাবিক বিষয় না৷ আমরা সামাজিক ভাবে এটি সমাধান করতে পারিনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাবাহিনীর সদস্যরাও দুই পক্ষের পরিবারের সাথে কথা বলে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রথম দিকে ছেলের বাবা রাজি থাকলেও এখন প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় স্থানীয়দেরও হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমরা চাই প্রশাসনের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হোক। আমাদের এলাকার মানসম্মান যেন নষ্ট না হয়। 

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস  মিয়া জানান, ইউএনও ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসার পর আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল তদারকি করতে। গত  ২২ অক্টোবর রাতে এসে ইউএনও  পরদিন ২৩ অক্টোবর দুপুর  ১২ টার মধ্যে বিয়ে দিয়ে দিতে বলে যান। আমি স্থানীয়দের সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করতে যায়। প্রথম দিকে ছেলে পরিবারের সম্মতি থাকলেও এখন হঠাৎ করে পল্টি দিয়েছে। বরং  আমাকে হুমকি ধামকিও দিচ্ছে। আমি নিজেই আতঙ্কে রয়েছি। 

এদিকে সরেজমিনে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায় ছেলের  বাবা শাহজাহান মিয়াকে। প্রথমে সাংবাদিকদের দেখে অসাধাচরণ করেন তিনি। কথা বলতে রাজি হননি। পরে সাংবাদিকের তিনি জানান, আমার সাথে দুই মাস যাবত ছেলের কোন রকম যোগাযোগ নেই। মেয়েটি পরিকল্পিত ভাবে় আমাদের বাড়িতে এসেছে। মেয়ের পরিবার আমার কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেছে। স্থানীয় কিছু প্রতারক  আমার জমি কেড়ে নিতে মেয়েটিকে লেলিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলে যদি কোন অপরাধ করে থাকে,  তাকে খোঁজে বের করে বিয়ে করিয়ে দিন। আমার জমি নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা চলছে। একটি চক্র সমাজে আমাকে অসম্মান করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। 

এ বিষয়ে মেয়েটি বাবা আলমগীর মিয়া বলেন, আমি নিরুপায়। কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না৷ ছেলের পরিবার আজকে কালকে বলে আমাকে ঘুরাচ্ছে। আমি কোনো সমাধান না পেয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। তাতেও কোন কাজ হয়নি৷ এখন আবার ছেলের বাবা আমাকে নানান ভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে।  

এ বিষয়ে নাদিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিদুওয়ান আহমেদ রাফি বলেন, আমি দুই পরিবারের সাথেই কথা বলে সমাধানের কথা বলে দিয়েছিলাম। এখনো তারা কোন সমাধান করতে পারেনি ৷ মেয়েটির বাবা আমার কাছে এসেছিল। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মেয়ের পরিবারকে আমি আজ  জানিয়ে দিয়েছি। কারন জোর করে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করার ইখতিয়ার নেই আমার।