ভৈরবে নির্মাণের ৭ বছর পরও  হয়নি তিন সেতুর  সংযোগ সড়ক।। জনদুর্ভোগ চরমে।।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৪৪:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৩ Time View

২৯ অক্টোবর, নিজস্ব  প্রতিনিধি।। 

 ভৈরবে শিমুলকান্দি ও শ্রীনগর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগের সুবিধার জন্য সাত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল তিনটি সেতু। দীর্ঘ বছর পেরিয়ে গেলেও তৈরি হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগে আছে  ছয় গ্রামের দশ হাজার বাসিন্দা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার রামশংকরপুর এলাকার দায়রা খাল – দড়িচন্ডিবের এলাকার টেকের খাল  শ্রীনগর ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার ইদগাহ খালের ওপর নির্মিত তিন সেতু। সেতুগুলোতে সংযোগ সড়ক না থাকায় গ্রামবাসীর কোনো উপকারেই আসছে না । বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে যায় সেতুগুলোর দুই পাশের বেশ কিছু অংশ। শুকনো মৌসুমে সেতুতে উঠতে লাগে মই, এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 

 জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্টের কর্মসূচির আওতায়  ভৈরব উপজেলার রামশংকরপুর দায়রার খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ১০৬ টাকা এবং দড়িচন্ডিবের টেকের খালের উপর ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩০ লাখ ৯০ হাজার ২০ টাকা ও  শ্রীনগর ইউনিয়নের নুরপুর এলাকায় ইদগাহ খালের ওপর  একটি সেতু নির্মাণ করা হয়  যার ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা  কিন্তু কয়েক বছরের বর্ষা মৌসুমে সেতুগুলোর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার ফলে নির্মিত এ সেতু গুলো ব্যবহার হতে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামবাসী। শুকনা মৌসুমে ধানক্ষেতের আইল দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষাকালে এ সুযোগও থাকে না, এতে মালামাল পরিবহনে গুনতে হয় বাড়তি টাকা। এই পাড়ের মানুষকে ওপারে যেতে হলে ঘুরতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রামবাসী।

গোছামারা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবদীন  বলেন, সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি নষ্ট হচ্ছে । এতে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। দুইটা ব্রিজ  প্রায় সাত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ সংযোগ সড়কের অভাবে কোনো সুফল পাচ্ছি না।

কৃষক  নুরু  মিয়া বলেন, সাত বছর আগে সেতু নির্মাণ হলেও কোনো কাজে আসেনি । আগেই ভালো ছিলাম নৌকায় পার হতাম। এখন সেতু হয়েও বর্ষার সময়ে নৌকায় পার হতে হয়। শুধু নামেই সেতু আছে কাজে নেই। এই ধরনের সেতু লোক দেখানো ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারের টাকা অপচয় মাত্র। 

রামশংকরপুর এলাকার শিক্ষার্থী মুন্না বেগম   বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় ধানক্ষেত দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে বৃষ্টির দিনে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় ক্ষেতের আইল দিয়ে চলতে গিয়ে পানিতে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়। দ্রুত সংযোগ সড়ক তৈরির দাবি জানাই।

শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রিপন জানান, দুই গ্রামের খাল পারাপারের জন্য দুটি সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পর মাটির রাস্তা ছিল তবে বর্তমানে রাস্তার দুই পাশের মাটি সরে যাওয়ায় সেতু দুটি গ্রামবাসী ব্যবহার করতে পারছে না। যার কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  তবে রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ পেলে সেতুর রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

ভৈরব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত এই প্রতিনিধিকে  বলেন, সেতুর দুই পাশের রাস্তায় অবশ্যই মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে,  সেতুগুলো ব্যবহারে  কীভাবে সচল করা যায় এরই মধ্যে দুপাশে মাটি ভরাট করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করার জন্য উদ্যোগ নেয়া  হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে নির্মাণের ৭ বছর পরও  হয়নি তিন সেতুর  সংযোগ সড়ক।। জনদুর্ভোগ চরমে।।

Update Time : ০৯:৪৪:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

২৯ অক্টোবর, নিজস্ব  প্রতিনিধি।। 

 ভৈরবে শিমুলকান্দি ও শ্রীনগর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগের সুবিধার জন্য সাত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল তিনটি সেতু। দীর্ঘ বছর পেরিয়ে গেলেও তৈরি হয়নি কোনো সংযোগ সড়ক। এতে চরম দুর্ভোগে আছে  ছয় গ্রামের দশ হাজার বাসিন্দা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার রামশংকরপুর এলাকার দায়রা খাল – দড়িচন্ডিবের এলাকার টেকের খাল  শ্রীনগর ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার ইদগাহ খালের ওপর নির্মিত তিন সেতু। সেতুগুলোতে সংযোগ সড়ক না থাকায় গ্রামবাসীর কোনো উপকারেই আসছে না । বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে যায় সেতুগুলোর দুই পাশের বেশ কিছু অংশ। শুকনো মৌসুমে সেতুতে উঠতে লাগে মই, এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 

 জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্টের কর্মসূচির আওতায়  ভৈরব উপজেলার রামশংকরপুর দায়রার খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ১০৬ টাকা এবং দড়িচন্ডিবের টেকের খালের উপর ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৩০ লাখ ৯০ হাজার ২০ টাকা ও  শ্রীনগর ইউনিয়নের নুরপুর এলাকায় ইদগাহ খালের ওপর  একটি সেতু নির্মাণ করা হয়  যার ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা  কিন্তু কয়েক বছরের বর্ষা মৌসুমে সেতুগুলোর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যার ফলে নির্মিত এ সেতু গুলো ব্যবহার হতে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামবাসী। শুকনা মৌসুমে ধানক্ষেতের আইল দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষাকালে এ সুযোগও থাকে না, এতে মালামাল পরিবহনে গুনতে হয় বাড়তি টাকা। এই পাড়ের মানুষকে ওপারে যেতে হলে ঘুরতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রামবাসী।

গোছামারা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবদীন  বলেন, সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি নষ্ট হচ্ছে । এতে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। দুইটা ব্রিজ  প্রায় সাত বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ সংযোগ সড়কের অভাবে কোনো সুফল পাচ্ছি না।

কৃষক  নুরু  মিয়া বলেন, সাত বছর আগে সেতু নির্মাণ হলেও কোনো কাজে আসেনি । আগেই ভালো ছিলাম নৌকায় পার হতাম। এখন সেতু হয়েও বর্ষার সময়ে নৌকায় পার হতে হয়। শুধু নামেই সেতু আছে কাজে নেই। এই ধরনের সেতু লোক দেখানো ছাড়া আর কিছু নয়। সরকারের টাকা অপচয় মাত্র। 

রামশংকরপুর এলাকার শিক্ষার্থী মুন্না বেগম   বলেন, সংযোগ সড়ক না থাকায় ধানক্ষেত দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে বৃষ্টির দিনে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় ক্ষেতের আইল দিয়ে চলতে গিয়ে পানিতে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়। দ্রুত সংযোগ সড়ক তৈরির দাবি জানাই।

শিমুলকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রিপন জানান, দুই গ্রামের খাল পারাপারের জন্য দুটি সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পর মাটির রাস্তা ছিল তবে বর্তমানে রাস্তার দুই পাশের মাটি সরে যাওয়ায় সেতু দুটি গ্রামবাসী ব্যবহার করতে পারছে না। যার কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  তবে রাস্তা নির্মাণের জন্য সরকারি বরাদ্দ পেলে সেতুর রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

ভৈরব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত এই প্রতিনিধিকে  বলেন, সেতুর দুই পাশের রাস্তায় অবশ্যই মাটি ভরাট করে দেওয়া হবে,  সেতুগুলো ব্যবহারে  কীভাবে সচল করা যায় এরই মধ্যে দুপাশে মাটি ভরাট করে জনসাধারণের চলাচলের উপযোগী করার জন্য উদ্যোগ নেয়া  হয়েছে।