১৮ অক্টোবর, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরব উপজেলার ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন মাতৃকালীন ছয়মাসের ছুটিতে থাকায় উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি’র হাতে ১০ দায়িত্ব পড়েছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার সরকার পতনের কারনে তার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর ভৈরবের ইউএনও গর্ভকালীন অবস্থায় মাতৃকালীন ছয়মাসের ছুটি নেন। তার ছুটির কারনে রেদুয়ান আহমেদ রাফি, ইউএনও হিসেবে চলতি দায়িত্ব পান। কর্তৃপক্ষ তাকে চলতি দায়িত্ব পালন করতে চিঠি দেন। এতগুলি দায়িত্ব পেয়ে সব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান। এদিকে একারনে জনগনের ভোগান্তি বেড়ে গেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি তার নিজ দায়িত্ব ভূমি অফিস ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, মাসিক আইন শৃংখলা সভা, জেলার বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহন, ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে মাঝেমধ্য সভা করা, সেনাবাহিনীর সাথে মাঝেমধ্য সভা ও মতবিনিময় করা, উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং মাসিক সভা করাসহ ইত্যাদি কাজে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব কাজ করতে গিয়ে তার মুল কাজ ভূমি অফিসের খারিজসহ অন্যান্য কাজে মনযোগ দিতে না পারায় এলাকার লোকজন ভোগান্তি পড়েছে। বর্তমান দায়িত্ব পাওয়া সকল কাজের জন্য সবসময় সবদিন সময় দিতে পারছেননা বলে তিনি জানান। পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের পদটি সরকার বাতিল করায় নাগরিকগন নাগরিক ও ওয়ারিশান সনদ নিতে গিয়ে মেয়রের স্বাক্ষর লাগে। এতে প্রতিদিন তাকে পাওয়া যায়না। উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের অনেক কাজে সিদ্ধান্ত দিতে গিয়ে তার স্বাক্ষর লাগে কিন্ত সময়মত তাকে পাওয়া যায়না। আবার ভ্রাম্যমান আদালত করলে সারাদিন চলে যায়। কোন কোন দিন সভা করলে সময় চলে যায়। প্রতিদিন বিভিন্ন অফিসে গিয়ে তার সময় দিতে হয় কাজে। এসব ১০ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন।
কিশোরগন্জ জেলার মধ্য ভৈরব উপজেলাটি অতি গুরুত্বপূর্ন একটি উপজেলা। এই উজেলায় ছয়মাস ইউএনও না থাকলে জনগনের ভোগান্তি বাড়বে এটা স্বাভাবিক। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার পদটি বর্তমানে শূন্য থাকায় ভৈরবে নতুন ইউএনও পদায়ন করা যাচ্ছেনা। ইউএনও দায়িত্বে থাকলে তার উপর দায়িত্বের এত চাপ থাকতনা। অপরদিকে জনভোগান্তি কম হত।
পৌর নাগরিক রশিদ মিয়া ও জাকির হোসেন বলেন, পৌরসভায় মেয়র না থাকায় আমরা নাগরিক সনদ ও ওয়ারিশান সনদ নিতে গিয়ে একদিনের কাজ চারদিনে করতে হয়েছে।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি জানান, পরিস্থিতির কারনে এসকল সব দায়িত্ব আমার কাঁদে পড়েছে। এখন প্রতিদিন কাজ করতে করতে আমি ক্লান্ত, তবে চাকরী যেহেতু করছি সাময়িক সময়ের জন্য কাজ করতে হচ্ছে।
এবিষয়ে কিশোরগন্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি অবগত আছি। ভৈরবের ইউএনও মাতৃকালীন ৬ মাসের ছুটিতে থাকায় এসি ল্যান্ডকে চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়। দেশের প্রেক্ষাপটে নতুন ইউএনও পদায়ন করা সময়ের ব্যাপার। জনস্বার্থে কাজতো চলমান রাখতে হবে। জনগনের কিছু ভোগান্তি হলেও কাজ হচ্ছে। এসমস্যাটি সাময়িক, সমস্যা দূর হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।