২৯ সেপ্টেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবের সাদেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল ড্রেস না পরায় দশম শ্রেনীর নুর নবী নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড় মারলেন শ্রেণী শিক্ষক ইকবাল হোসেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।
আহত ওই ছাত্র উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ির ছালেক সরকারের ছেলে।
আজ রোববার দুপুরের দিকে উপজেলার সাদেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ক্লাস চলাকালীন সময়ে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, স্কুল চলাকালীন সময়ে দুপুর ১২ টার দিকে দশম শ্রেনীতে ক্লাস নিতে বড় বড় কয়েকটি বাঁশের (কঞ্চি) বেত নিয়ে প্রবেশ করেন শ্রেণী শিক্ষক ইকবাল হোসেন। ক্লাসে প্রবেশ করেই উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি ক্লাসে গিয়ে বলতে থাকেন মাথা গরম আছে তোরা বেশি কথা বলিস না। তারপরই শিক্ষার্থী নুর নবীর স্কুল ড্রেস না পরায় বেধড় মারধোর করে গুরুতর আহত করেন। শিক্ষকের বেতের আঘাতে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। এসময় আরো ৫-৭ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল ড্রেস পরে না আসার কারণে বেধড় মারধোর করেন। পরবর্তীতে এই ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফেলে শ্রেণী ইকবাল হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আহত দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুর নবী বলেন, কয়েকটি বাঁশের বেত নিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করেই স্যার আমাদের বলেন বেশী কথা বললে একেকটারে মাইরা ফেলুম। স্কুল ড্রেস না পরায় ক্লাসে প্রবেশ করায় তাকে বেত দিয়ে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন ওই শিক্ষক। পরে চিৎকার করেও শিক্ষকের অমানবিক নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি ওই ছাত্র।
আহত শিক্ষার্থীর মা রিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইকবাল হোসেন আমার ছেলে নুর নবীকে পিটিয়ে আহত করেছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। পরে আহত অবস্থায় নুর নবীকে সহপাঠীরা ও এলাকার কয়েকজন মিলে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তার পরিবার।
অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক ইকবাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম ছান্দানী’র কাছে মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, আমরা সকল শিক্ষকই বিদ্যালয়েই ছিলাম আসলে ছাত্রকে এভাবে বেধড় মারধোর সে ঠিক করেনি, তবে আমি শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলাম পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি।
আগামীকাল সোমবার স্থানীয় কয়েকজন মুরুব্বি ও স্কুলের অভিভাবক সদস্যদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত রেদুওয়ান আহমেদ রাফি বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই তবে এ বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিভাবকরা আমার কাছে এবিষয়ে অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।