ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে  একজন নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।। প্রতিপক্ষরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ২৮৮ Time View

১৫ সেপ্টেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে কর্তাবাড়ী ও সরকারবাড়ী বংশের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ইকবাল (২৯) নামের একজন নিহত ও উভয়পক্ষের অর্ধশত আহত হয়। গত শুক্রবার বিকেলে এঘটনা ঘটলেও এখন নিহতের পক্ষ থেকে কোন মামলা হয়নি। পুলিশ বলছে নিহতের পরিবারের কোন লোকজন মামলা দিতে আসেনি। এই গ্রামে দুটি বংশের বিরোধ ৫৬ বছর যাবত। শুক্রবার ইকবাল নিহত হলে প্রতিপক্ষ কর্তাবাড়ীর বংশের অধিকাংশ  লোকজন বাড়ীঘর ফেলে পুলিশের ভয়ে  পালিয়ে গেছে।  এবিরোধ ও শত্রুতায় এপর্যন্ত ১০/১২ জন খুন হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে একাধিক। মামলায় আসামীর সংখ্যা শত শত। দুধর্ষ এই গ্রামে তাদের এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে দুই চেয়ারম্যান দুই পক্ষের নেতৃত্ব দেয়। তার মধ্য বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা  সাফায়েত উল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা  তোফাজ্জল হক। এদুজন নেতা একাধিক হত্যা মামলার আসামী। গত ঈদের পরদিন কর্তাবাড়ী বংশের নাদিম নামের একজন খুন হয়েছে সরকার বাড়ীর লোকজনের হাতে। এঘটনায় ৮৩ জনকে আসামী করে মামলা হলে আদালত থেকে জামিন পায় ৬৯ জন। এর আগে গত ৫৬ বছরে ১০/১২ খুন হয়েছে গ্রামে। 

 গত শুক্রবার সরকার বাড়ীর ইকবাল খুন হয় কর্তাবাড়ীর লোকজনের হাতে। তখন সরকার বাড়ীর লোকজন কর্তা বাড়ীর বেশকিছু ঘরবাড়ী ভাঙচুর লুটপাট করে। তারা ঝগড়া সংঘর্ষ লাগলেই দা, লাঠি, বল্লম, ইটপাটকেল নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে। গত শুক্রবারের ঘটনায় নিহত ইকবালের মরদেহ গতকাল শনিবার ময়না তদন্তের পর তাকে এদিন নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামটি দুই বংশের লোকজনের কাছে বন্দি। দুটি পক্ষের নেতা দুইজন চেয়ারম্যান। তারা দুজনের শত্রুতায় গ্রামটি জংলী ও দাঙ্গাবাজ  গ্রামে পরিণত হয়েছে। গ্রামে অভিযান চালাতে বা সংঘর্ষ দমাতে পুলিশও ভয় পায় গ্রামে যেতে। এমনকি স্থানীয় সরকারী বা বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ একাধিকবার চেষ্টা করেও এগ্রামের শত্রুতা বিরোধ মীমাংসা করতে পারেনি। শুক্রবার সরকার বংশের ধন মিয়ার ছেলে  ইকবাল প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে নিহত হওয়ার প্রতিপক্ষের কর্তাবাড়ীর  লোকজন পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে গেছে। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ হাসমত উল্লাহ জানান, গত শুক্রবার মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সরকার বাড়ীর বংশের ইকবাল নিহতের ঘটনায় দুদিন পার হলেও তার পরিবারের কেউ মামলা দিতে থানায় আসেনি। আমরা এখনও বাদীর অভিযোগ পায়নি, কে বাদী হবে তা জানিনা। বাড়ীতে গিয়ে নিহতের কাউকে খোঁজে পাচ্ছিনা। প্রতিপক্ষরাও পলাতক।  অপেক্ষা করছি মামলা গ্রহন করতে। নিহতের পরিবার পক্ষ থেকে কেউ থানায় এসে অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

১০ম গ্রেডের দাবিতে ভৈরবে প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে  একজন নিহতের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি।। প্রতিপক্ষরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। 

Update Time : ০১:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

১৫ সেপ্টেম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামে কর্তাবাড়ী ও সরকারবাড়ী বংশের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ইকবাল (২৯) নামের একজন নিহত ও উভয়পক্ষের অর্ধশত আহত হয়। গত শুক্রবার বিকেলে এঘটনা ঘটলেও এখন নিহতের পক্ষ থেকে কোন মামলা হয়নি। পুলিশ বলছে নিহতের পরিবারের কোন লোকজন মামলা দিতে আসেনি। এই গ্রামে দুটি বংশের বিরোধ ৫৬ বছর যাবত। শুক্রবার ইকবাল নিহত হলে প্রতিপক্ষ কর্তাবাড়ীর বংশের অধিকাংশ  লোকজন বাড়ীঘর ফেলে পুলিশের ভয়ে  পালিয়ে গেছে।  এবিরোধ ও শত্রুতায় এপর্যন্ত ১০/১২ জন খুন হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে একাধিক। মামলায় আসামীর সংখ্যা শত শত। দুধর্ষ এই গ্রামে তাদের এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে দুই চেয়ারম্যান দুই পক্ষের নেতৃত্ব দেয়। তার মধ্য বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা  সাফায়েত উল্লাহ ও সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মুক্তিযোদ্ধা  তোফাজ্জল হক। এদুজন নেতা একাধিক হত্যা মামলার আসামী। গত ঈদের পরদিন কর্তাবাড়ী বংশের নাদিম নামের একজন খুন হয়েছে সরকার বাড়ীর লোকজনের হাতে। এঘটনায় ৮৩ জনকে আসামী করে মামলা হলে আদালত থেকে জামিন পায় ৬৯ জন। এর আগে গত ৫৬ বছরে ১০/১২ খুন হয়েছে গ্রামে। 

 গত শুক্রবার সরকার বাড়ীর ইকবাল খুন হয় কর্তাবাড়ীর লোকজনের হাতে। তখন সরকার বাড়ীর লোকজন কর্তা বাড়ীর বেশকিছু ঘরবাড়ী ভাঙচুর লুটপাট করে। তারা ঝগড়া সংঘর্ষ লাগলেই দা, লাঠি, বল্লম, ইটপাটকেল নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে। গত শুক্রবারের ঘটনায় নিহত ইকবালের মরদেহ গতকাল শনিবার ময়না তদন্তের পর তাকে এদিন নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

ভৈরবের মৌটুপি গ্রামটি দুই বংশের লোকজনের কাছে বন্দি। দুটি পক্ষের নেতা দুইজন চেয়ারম্যান। তারা দুজনের শত্রুতায় গ্রামটি জংলী ও দাঙ্গাবাজ  গ্রামে পরিণত হয়েছে। গ্রামে অভিযান চালাতে বা সংঘর্ষ দমাতে পুলিশও ভয় পায় গ্রামে যেতে। এমনকি স্থানীয় সরকারী বা বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ একাধিকবার চেষ্টা করেও এগ্রামের শত্রুতা বিরোধ মীমাংসা করতে পারেনি। শুক্রবার সরকার বংশের ধন মিয়ার ছেলে  ইকবাল প্রতিপক্ষের বল্লমের আঘাতে নিহত হওয়ার প্রতিপক্ষের কর্তাবাড়ীর  লোকজন পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে গেছে। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ হাসমত উল্লাহ জানান, গত শুক্রবার মৌটুপি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সরকার বাড়ীর বংশের ইকবাল নিহতের ঘটনায় দুদিন পার হলেও তার পরিবারের কেউ মামলা দিতে থানায় আসেনি। আমরা এখনও বাদীর অভিযোগ পায়নি, কে বাদী হবে তা জানিনা। বাড়ীতে গিয়ে নিহতের কাউকে খোঁজে পাচ্ছিনা। প্রতিপক্ষরাও পলাতক।  অপেক্ষা করছি মামলা গ্রহন করতে। নিহতের পরিবার পক্ষ থেকে কেউ থানায় এসে অভিযোগ দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।