১৩ সেপ্টম্বর, নিজস্ব প্রতিনিধি।।
ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকায় অবস্থিত জহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অহিদুর রহমানের ব্যাপক দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কয়েকদিনের আন্দোলনের মুখে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত) রেদুয়ান আহমেদ রাফি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেন। তার অব্যাহতির বিষয়টি আজ শুক্রবার সকালে সভাপতি রেদুয়ান আহমেদ রাফি এই প্রতিনিধিকে নির্শ্বিত করেছেন। তাকে অব্যাহতি দেয়ার পর বর্তমানে স্কুলের নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় শিক্ষক শাফায়েত হোসেনকে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক ( ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে আজিজুল হককে।
এর আগে প্রধান শিক্ষক ও স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ লোকমান হোসেনের দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করলে তিনি তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি নিয়ে গত কয়েকদিন আগে স্কুলের সকল শিক্ষকগনও সভা করে প্রতিবাদ করে শিক্ষার্থীদের সাথে একমত পোষন করেন। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে ভৈরব- কিশোরগন্জ সড়ক কয়েক ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। শিক্ষার্থীদের দাবি দুর্নীতির মূল হোতা ছিল পরিচালনা পরিষদের সভাপতিেমোঃ লোকমান হোসেন। সরকার পতনের পর থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকাবাসীও ঘটনার প্রতিবাদ করে এলাকায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে।
এবিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি অনিয়ম তদন্ত কমিটির প্রধান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, আমিসহ তিন সদস্য তদন্ত টিম ঘটনার তদন্ত করছি। তিনি বলেন আমরা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রাথমিকভাবে দুর্নীতি অনিয়মের প্রাথমিক যৌক্তিকতা পেয়েছি। এখনও তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। পুরা তদন্ত শেষ হলে দ্রুত প্রতিবেদন দিব।
স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জয়, লিয়াকত ও শিহাব বলেন, স্কুলের পরিচালনা পরিষদ সভাপতি মোঃ লোকমান হোসেন ও প্রধান শিক্ষক অহিদুর রহমান গত ১২ বছরে প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতি অনিয়ম করে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা এপর্যন্ত ৮ কোটি টাকা দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা একারনে আন্দোলনে নেমেছি। তাকে সাময়িক অব্যাহতি দিলেই চলবেনা, প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করতে হবে যা আমাদের প্রধান দাবি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ভারপ্রাপ্ত) ও স্কুল পরিচালনা পরিষদ সভাপতি রেদুয়ান আহমেদ রাফি বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে তিনি ছুটি নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে তার দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এবিষয়ে তিন সদস্য তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তাকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা আমার নেই, তবে তদন্তে দুর্নীতি অনিয়ম প্রমান হলে রিপোর্টটি আমি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠিয়ে দিব। তখন কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।