২৯ আগস্ট, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরবে সাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি  নাজমুল হাসান পাপনকে প্রধান আসামি করে ৯৩ জনের বিরুদ্ধে  ভৈরব থানায় আরও একটি  মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে  এ মামলাটি দায়ের করেন ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তর পাড়া এলাকার মৃত মতি মিয়ার ছেলে রুবেল মিয়া। তিনি ভৈরব বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী। এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে স্থানীয় বিএনপি কর্মী আলম সরকার বাদী হয়ে পাপনকে প্রধান আসামী করে ১৪০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করা হয়। দুটি মামলায় নাজমুল হাসান পাপনকে প্রধান আসামী করে মোট ২৩৩ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পৌর শহরের লক্ষীপুর শহীদুল্লাহ কায়সার পাদুকা মার্কেটের সামনে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের সহিংসতায় আহতের ঘটনায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সাখাওয়াত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ,  সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হেকিম রায়হান, সাধারণ সম্পাদক জামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমির হামজাসহ   ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। একই তারিখে স্থানীয়  বিএনপির অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল বুধবার দুপুরে  পাপনসহ ১৪০ জনকে আসামী করা হয়। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী রুবেল মিয়া বলেন, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় আমিসহ বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অবস্থান করছিলাম। ওই সময় সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে দা, ছুরি, পাইপগান, শর্টগানসহ বিভিন্ন অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসামীরা  আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এসময় আসামীদের শর্টগানের গুলিতে সোহেল এর চোখে রক্তাক্ত জখম হয়। এসময় তাদের রডে আঘাতে ও তাদের ছুড়া গুলিতে আমিসহ আব্দুর রহমান, রাতুল, মুকিত আব্দুল্লাহ ফারুকী, মেহেদী হাসান জিন্নাহ, রাশেদুজ্জামান রাসেল ও রাতুল গুরুত্বর আহত হয়। ঘটনার পরদিন আমি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। দীর্ঘ ১৭ দিন জেল খেটে আসি। আমি সহিংসতাকারীদের বিচার চাই। 

অপর মামলার বাদী আলম সরকার বলেন গত ১৯ জুলাই পাপনের নির্দেশে বিএনপির অফিস ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিসাধনসহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে আসামীরা। একারনে আমি বিচার পেতে পাপনকে প্রধান আসামী করে  গতকাল বুধবার ১৪০ জনের বিরুদ্ধে   মামলাটি  করেছি। সেদিন পাপনের নির্দেশে বিএনপি  অফিসটি ভাঙচুর করা হয়। 

এ বিষয়ে ভৈরব পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ জানান, ১৯ জুলাই প্রশাসনের উপরিমহলের অনুরোধে বিএনপি-জামায়াত এর নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের সাথে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় আমাদের ৫জন  গুরুত্বর আহত হয়েছে। বিএনপি নাজমুল হাসান পাপনকে আসামি করে ভৈরবে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। আমরা আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মামলার মোকাবেলা করবো। 

এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার অভিযোগ  হাতে পেয়েছি। গতকাল ও আজ দুদিনে দুটি মামলায় নাজমুল হাসান পাপনসহ আসামী ২৩৩ জন। মামলাগুলি সুষ্ঠু নিরেপেক্ষ  তদন্ত করে  আইনগত  ব্যবস্থা গ্রহন করব বলে তিনি জানান।