ভৈরবে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত মামুন আতিককে প্রধান আসামী করে  ৫৮ জনের বিরুদ্ধে  মামলা করেছেন।  ওসিকে তদন্তের নির্দেশ।। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:৫৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • ১৩৬ Time View

২৩ আগস্ট, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত মামুন মিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভকে প্রধান আসামী করে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে   কিশোরগঞ্জ  আদালতে একটি  মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল  বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগন্জের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্যাট কিশোর দত্তের আমলী আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেছেন বলে তিনি আজ শুক্রবার স্বীকার করেন।  মামলায় ৫৮ জন ছাড়াও অজ্ঞাত আসামী করা হয় ১০/১৫ জনকে।  মামুন মিয়া একজন দিন মজুর। সে পৌর শহরের জগন্নাথপুর গ্রামের  লক্ষীপুর এলাকার  জাহের মিয়ার ছেলে। আদালত মামলাটি ভৈরব থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুর ২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে ভৈরব আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে মামুন মিয়া হাতে দা এর আঘাতে গুরুতর জখম হয়। এদিন তাকে আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক কিছুদিন চিকিৎসা করার পর তার হাতে পঁচন দেখা দেয়। পরে মামুনের ডান হাতটি কেটে ফেলে দেয়া হয়। ঘটনার একমাস তিনদিন পর বিচার পেতে  তিনি মামলাটি করেন। 

এই মামলায় আওয়ামী লীগ ও দলের অংগসংগঠনের নেতাদের মধ্য  যাদেরকে আসামী করা হয় তারা হলো, উপজেলা আ,লীগের সহ- সভাপতি তালাওয়াত হোসেন বাবলা, যুগ্ম – সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, সহ- প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন মুছা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবির,  উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হেকিম রায়হান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব রায়হান, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মোঃ আল- আমিন সৈকত, পৌর কাউন্সিলর ও আ,লীগ নেতা শহিদুল হক শিমুল, ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা মাহাবুব প্রভা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রিয়াদসহ মোট ৫৮ জন। 

এ বিষয়ে মামলার বাদী মামুন মিয়া বলেন, গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শহীদুল্লাহ কায়সার পাদুকা মার্কেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতারা এক পর্যায়ে আমাদের জগন্নাথপুর গ্রামে ঢুকে যায়। তাদেরকে  গ্রামবাসীসহ আমি প্রতিহত করতে গেলে আমাকে দা দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে আহত করে তারা। এসময়  স্থানীয়রা আমাকে  উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের আঘাতের ফলে আমার ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে। আমার হাত কাটার পর থেকে আমি মানবেতর জীবন যাপন করছি। বিভিন্ন সংগঠন ও বিএনপির নেতাদের সহযোগিতায় কোন রকম চিকিৎসা করতে পেরেছি। বাকী জীবন কিভাবে আমার সংসার চালাব, কিভাবে  কাটবে দিন এনিয়ে চিন্তায় আছি । আমি ঘটনার বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম আজ শুক্রবার সকালে জানান, মামলার বিষয়টি শুনেছি কিন্ত আদালতের আদেশ এখনও থানায় পৌঁছেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলাটি দায়ের করা হলে আগামী রোববার আদেশটি থানায় পৌঁছতে পারে। আদেশটি পৌঁছলে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে  আইনগত ব্যবস্থা নিবে। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরবে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত মামুন আতিককে প্রধান আসামী করে  ৫৮ জনের বিরুদ্ধে  মামলা করেছেন।  ওসিকে তদন্তের নির্দেশ।। 

Update Time : ০২:৫৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

২৩ আগস্ট, নিজস্ব  প্রতিনিধি:

ভৈরবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত মামুন মিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভকে প্রধান আসামী করে ৫৮ জনের বিরুদ্ধে   কিশোরগঞ্জ  আদালতে একটি  মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল  বৃহস্পতিবার বিকেলে কিশোরগন্জের সিনিয়র ম্যাজিস্ট্যাট কিশোর দত্তের আমলী আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেছেন বলে তিনি আজ শুক্রবার স্বীকার করেন।  মামলায় ৫৮ জন ছাড়াও অজ্ঞাত আসামী করা হয় ১০/১৫ জনকে।  মামুন মিয়া একজন দিন মজুর। সে পৌর শহরের জগন্নাথপুর গ্রামের  লক্ষীপুর এলাকার  জাহের মিয়ার ছেলে। আদালত মামলাটি ভৈরব থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার দুপুর ২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে ভৈরব আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে মামুন মিয়া হাতে দা এর আঘাতে গুরুতর জখম হয়। এদিন তাকে আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক কিছুদিন চিকিৎসা করার পর তার হাতে পঁচন দেখা দেয়। পরে মামুনের ডান হাতটি কেটে ফেলে দেয়া হয়। ঘটনার একমাস তিনদিন পর বিচার পেতে  তিনি মামলাটি করেন। 

এই মামলায় আওয়ামী লীগ ও দলের অংগসংগঠনের নেতাদের মধ্য  যাদেরকে আসামী করা হয় তারা হলো, উপজেলা আ,লীগের সহ- সভাপতি তালাওয়াত হোসেন বাবলা, যুগ্ম – সাধারণ সম্পাদক মোঃ খলিলুর রহমান, সহ- প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন মুছা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মিজানুর রহমান কবির,  উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হেকিম রায়হান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব রায়হান, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মোঃ আল- আমিন সৈকত, পৌর কাউন্সিলর ও আ,লীগ নেতা শহিদুল হক শিমুল, ছাত্রলীগ নেত্রী সাবিহা মাহাবুব প্রভা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রিয়াদসহ মোট ৫৮ জন। 

এ বিষয়ে মামলার বাদী মামুন মিয়া বলেন, গত ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শহীদুল্লাহ কায়সার পাদুকা মার্কেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতারা এক পর্যায়ে আমাদের জগন্নাথপুর গ্রামে ঢুকে যায়। তাদেরকে  গ্রামবাসীসহ আমি প্রতিহত করতে গেলে আমাকে দা দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে আহত করে তারা। এসময়  স্থানীয়রা আমাকে  উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের আঘাতের ফলে আমার ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে। আমার হাত কাটার পর থেকে আমি মানবেতর জীবন যাপন করছি। বিভিন্ন সংগঠন ও বিএনপির নেতাদের সহযোগিতায় কোন রকম চিকিৎসা করতে পেরেছি। বাকী জীবন কিভাবে আমার সংসার চালাব, কিভাবে  কাটবে দিন এনিয়ে চিন্তায় আছি । আমি ঘটনার বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম আজ শুক্রবার সকালে জানান, মামলার বিষয়টি শুনেছি কিন্ত আদালতের আদেশ এখনও থানায় পৌঁছেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মামলাটি দায়ের করা হলে আগামী রোববার আদেশটি থানায় পৌঁছতে পারে। আদেশটি পৌঁছলে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে  আইনগত ব্যবস্থা নিবে।