ভৈরব থানা থেকে লুন্ঠন হওয়া বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধারের পর সেনাবাহিনী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করল।। 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ১০৮ Time View

১৭ আগস্ট, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরব থানা থেকে লুন্ঠন হওয়া বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধারের পর সেনাবাহিনী পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে  হস্তান্তর করল। আজ শনিবার সকাল ১১ টায় স্থানীয় হাজি আসমত কলেজ প্রাঙ্গনে স্থানীয় সেনাবাহিনী ক্যাম্পের মেজর মোঃ সানজেদুল ইসলাম ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলামের নিকট গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে  আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলি বুঝিয়ে দেন। এসময় সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল ফারহানা আফরীনসহ সেনাবাহিনীর ও পুলিশ  কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন। 

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে এদিন সন্ধ্যায় ভৈরব থানায় ১০/১৫ হাজার দুর্বত্ত ও দুষ্কৃতিকারী হামলা চালায়। এসময় থানায় কর্মরত ওসিসহ সকল পুলিশ পালিয়ে যায়। এদিন থানায় দুর্বত্তরা আগুন লাগানোসহ অস্ত্র ও সরন্জামাদি লুট করে নিয়ে যায়। তারপর গত কয়েকদিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মীরাসহ জনতা বিভিন্ন স্থান ও লোকদের কাছ থেকে অস্ত্রগুলি উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে জমা দেয়। আজ শনিবার উদ্ধারকৃত অস্ত্র থানা পুলিশের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

অস্ত্র বুঝিয়ে দেয়ার সময় মেজর মোঃ সানজেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে এক ব্রেফিংএ জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলি উদ্ধার করার পর আজ বুঝিয়ে দিলাম। তিনি বলেন উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্য ভৈরব ছাড়াও কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, ভৈরব বাজার পুলিশ ফাঁড়ি, ভৈরব রেলওয়ে, হাইওয়ে ও নৌ- থানার লুট করা বিপুল পরিমান অস্ত্র রয়েছে। অন্যান্য থানার অস্ত্রগুলি পরে বুঝিয়ে দেয়া হবে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্য রাইফেল, শর্টগান, স্টেনগান,  চাইনিজ রাইফেল, গ্যাসগান ইত্যাদি রয়েছে।   ঘটনার পর থেকে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিল, এখন তারা সবাই কর্মস্থলে ফিরে এসেছে। তিনি আরও বলেন ভৈরব থানাটি পুড়িয়ে দিয়ে লুট করার পর তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানীয় স্টেডিয়ামে থানার অস্থায়ী কার্যালয় গত ৯ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। অস্ত্র ছাড়া পুলিশ তাদের কার্যক্রম চালাতে পারেনা। আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে অস্ত্রের প্রয়োজন বলে তিনি জানান। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্য উদ্ধারকৃত অস্ত্র আজ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেয়া হলো। লুন্ঠন করা বাকী অস্ত্রগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার ১২ দিন পর আজ শনিবার আমরা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অধিকাংশ অস্ত্র বুঝিয়া পাইলাম। বর্তমানে ভৈরব থানা অস্থায়ী কার্যালয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। এসময় গত ৫ আগস্ট ঘটনার দিন পুলিশ প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়া ও অস্ত্র লুটের বর্ণনা দেন।

ভৈরব সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল ফারহানা আফরীন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঝুঁকি নিয়ে  থানার কিছু পুলিশ সদস্যদেরসহ অস্ত্র উদ্ধার করে। তার মধ্য কিছু পুলিশ পালিয়ে যায় ও অধিকাংশ অস্ত্র লুট করে দুর্বত্তরা। ঘটনার পর থেকে ছাত্র জনতা  কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাক্যাম্পে জমা দেয়। থানার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্য আজ বিপুল পরিমান অস্ত্র পুলিশের হাতে হস্তান্তর করলাম। তিনি এসময় দেশের ক্রান্তিলগ্নে গণমাধ্যমকর্মীসহ জনগন, ছাত্র ও সবার সহযোগীতা কামনা করেন। 

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

ভৈরবে যুবলীগ নেতা কর্তৃক  প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে অফিসে কক্ষে মারধোর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

ভৈরব থানা থেকে লুন্ঠন হওয়া বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধারের পর সেনাবাহিনী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করল।। 

Update Time : ০১:১১:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

১৭ আগস্ট, নিজস্ব প্রতিনিধি:

ভৈরব থানা থেকে লুন্ঠন হওয়া বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধারের পর সেনাবাহিনী পুলিশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে  হস্তান্তর করল। আজ শনিবার সকাল ১১ টায় স্থানীয় হাজি আসমত কলেজ প্রাঙ্গনে স্থানীয় সেনাবাহিনী ক্যাম্পের মেজর মোঃ সানজেদুল ইসলাম ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলামের নিকট গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে  আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলি বুঝিয়ে দেন। এসময় সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল ফারহানা আফরীনসহ সেনাবাহিনীর ও পুলিশ  কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন। 

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে এদিন সন্ধ্যায় ভৈরব থানায় ১০/১৫ হাজার দুর্বত্ত ও দুষ্কৃতিকারী হামলা চালায়। এসময় থানায় কর্মরত ওসিসহ সকল পুলিশ পালিয়ে যায়। এদিন থানায় দুর্বত্তরা আগুন লাগানোসহ অস্ত্র ও সরন্জামাদি লুট করে নিয়ে যায়। তারপর গত কয়েকদিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মীরাসহ জনতা বিভিন্ন স্থান ও লোকদের কাছ থেকে অস্ত্রগুলি উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে জমা দেয়। আজ শনিবার উদ্ধারকৃত অস্ত্র থানা পুলিশের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

অস্ত্র বুঝিয়ে দেয়ার সময় মেজর মোঃ সানজেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে এক ব্রেফিংএ জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ভৈরব থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্রগুলি উদ্ধার করার পর আজ বুঝিয়ে দিলাম। তিনি বলেন উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্য ভৈরব ছাড়াও কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, ভৈরব বাজার পুলিশ ফাঁড়ি, ভৈরব রেলওয়ে, হাইওয়ে ও নৌ- থানার লুট করা বিপুল পরিমান অস্ত্র রয়েছে। অন্যান্য থানার অস্ত্রগুলি পরে বুঝিয়ে দেয়া হবে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্য রাইফেল, শর্টগান, স্টেনগান,  চাইনিজ রাইফেল, গ্যাসগান ইত্যাদি রয়েছে।   ঘটনার পর থেকে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিল, এখন তারা সবাই কর্মস্থলে ফিরে এসেছে। তিনি আরও বলেন ভৈরব থানাটি পুড়িয়ে দিয়ে লুট করার পর তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানীয় স্টেডিয়ামে থানার অস্থায়ী কার্যালয় গত ৯ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। অস্ত্র ছাড়া পুলিশ তাদের কার্যক্রম চালাতে পারেনা। আইনশৃংখলা ঠিক রাখতে অস্ত্রের প্রয়োজন বলে তিনি জানান। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্য উদ্ধারকৃত অস্ত্র আজ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেয়া হলো। লুন্ঠন করা বাকী অস্ত্রগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। 

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার ১২ দিন পর আজ শনিবার আমরা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অধিকাংশ অস্ত্র বুঝিয়া পাইলাম। বর্তমানে ভৈরব থানা অস্থায়ী কার্যালয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। এসময় গত ৫ আগস্ট ঘটনার দিন পুলিশ প্রাণ রক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়া ও অস্ত্র লুটের বর্ণনা দেন।

ভৈরব সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল ফারহানা আফরীন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার দিন খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঝুঁকি নিয়ে  থানার কিছু পুলিশ সদস্যদেরসহ অস্ত্র উদ্ধার করে। তার মধ্য কিছু পুলিশ পালিয়ে যায় ও অধিকাংশ অস্ত্র লুট করে দুর্বত্তরা। ঘটনার পর থেকে ছাত্র জনতা  কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাক্যাম্পে জমা দেয়। থানার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্য আজ বিপুল পরিমান অস্ত্র পুলিশের হাতে হস্তান্তর করলাম। তিনি এসময় দেশের ক্রান্তিলগ্নে গণমাধ্যমকর্মীসহ জনগন, ছাত্র ও সবার সহযোগীতা কামনা করেন।