২১ জুন, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে ওয়ার্কশপে হাত হারানো শিশু নাঈম হাসান নাহিদ (১০) কে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্ট এক আদেশ দিয়েছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারী হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্য ১০ বছর মেয়াদী ১৫ লাখ টাকার ও ডিসেম্বর মাসের মধ্য ১৫ লাখ টাকার এফডিআর ব্যাংক থেকে করে দিতে হবে শিশু নাহিদের নামে। একইসাথে শিশুর লেখাপড়া খরচ বাবত প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা তার ব্যাংক হিসেবে জমা দিতে হবে। শিশুটির বাবা মামলার বাদী নিয়ামুল আনোয়ার অভিযোগ করে বলেন, বিবাদী হাজী ইয়াকুব আলী হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী এখনও প্রথম কিস্তির ১৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দেননি এবং লেখাপড়ার খরচ বাবত মাসের ৭ হাজার টাকা কোন মাসেই পরিশোধ করেনি।
২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ভৈরবের ইয়াকুব ওয়ার্কশপে শিশু নাহিদকে জোর করে কাজ করাতে গিয়ে তার ডান হাত কেটে যায়। পরে ডাক্তারগন তার কনুই পর্যন্ত কেটে তাকে প্রাণে রক্ষা করে। পরে এব্যাপারে নাহিদের বাবা হাইকোর্টে এক রীট পিটিশন দায়ের করে ওয়ার্কশপ মালিকের কাছে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে। তারপর মামলাটি দীর্ঘদিন চলার পর গত ৩১ জানুয়ারী হাইকোর্ট ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার আদেশ দেন।
এবিষয়ে শিশু নাহিদের বাবা নিয়ামুল আনোয়ার অভিযোগে বলেন, আমি দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে আজ নিস্বঃ হয়ে গেছি। হাজী ইয়াকুবের কর্মচারীরা তাকে জোর করে মেশিন চালাতে দিলে হাত কেটে যায়। আমার ছেলে এখন পঙ্গু, তার জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। একারনে আদালতে আমি বিচার চেয়েছি। এখন ক্ষতিপূরনের টাকা না দিয়ে ওয়ার্কশপ মালিক ইয়াকুব আলী তালবাহানা করছে। এখন আবারও আমার আদালতে গিয়ে ঘটনা জানাতে হবে। আদালতের দুয়ারে দুয়ারে আর কত ঘূরব। তিনি বলেন, আমি রায়ের সার্টিফাইড কপি ঈদের আগে হাতে পেয়েছি। বিবাদী পক্ষের আপীলের সময় পার হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে ওয়ার্কশপ মালিক হাজী ইয়াকুব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্ষতিপূরনের এত টাকা দেয়ার ক্ষমতা আমার নেই। আমি রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করব। আপীলের সময় চলে গেছে বললে তিনি তা অস্বীকার করেন।