১৯ জুন, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভৈরবে পাগলা কুকুরের কামড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান বাচ্চুসহ ৩৩ জন আহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহর এলাকার বিভিন্ন স্থানে কুকুর কামড়ের ঘটনাটি ঘটে। আক্রান্ত ৩৩ জন আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে। তবে হাসপাতালে এত পরিমান ভ্যাকসিন না থাকায় আহতরা অনেকেই বাইরের ফার্মেসী থেকে কিনে চিকিৎসা নিয়েছে বলে অনেকেই জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে পাগলা কুকুরটি এখনও ধরতে বা মারতে পারেনি কেউ।
এবিষয়ে ভৈরব পৌর মেয়র ইফতেখার হোসেন বেনু জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি কিন্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কুকুর মারার অধিকার পৌর কর্তৃপক্ষের নেই। তবে জনতা যদি পাগলা কুকুরটিকে মেরে ফেলে আমাদের কিছুই করার নেই। যারা কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে তাদেরকে চিকিৎসা দিতে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারকে অনুরোধ করেছি। চিকিৎসায় কারো সহযোগীতা লাগলে তা আমি করে দিব বলে তিনি জানান।
পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে তারা হলো, অধ্যাপক শামসুজ্জামান বাচ্চু, সৌরভ, রোহান , মিস্টার, শান্ত, কালা মিয়া, সোলাইমান, আরাফাত, নবী হোসেন, আতিকুল, বর্ন, মোস্তফা জামান, রাকিব, আউলাদ, মুসা মিয়া, সুমন, কাউসার, আবুল মিয়া, রুবেল, কাইসার, লাইছ মিয়া, আবুল কাশেম, মনির হোসেন, আসাদ, হোসেন আলী, আরমান, তৌহিদ, আবুবকর সিদ্দিক, রাব্বি, সাব্বির, শহিদুল্লাহ, সানি, সূর্য ও মানিক।
শহরের ভৈরবপুর এলাকার বাসিন্দা আরাফাত হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ করে একটি পাগলা কুকুর আমাকে কামড় দিয়ে দৌড়ে চলে যায়। চন্ডিবের এলাকার আবুল হোসেন বলেন, আমি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দেয়ার সময় হঠাৎ করে কুকুরটি আমার পায়ে কামড় দিয়ে পালিয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও কুকুরটি ধরতে পারেনি।
মঙ্গলবার পাগলা কুকুর কামড়ের ঘটনায় ভৈরব শহরে আতংক বিরাজ করতে থাকে। শহরের ভৈরবপুর, চন্ডিবের, পলতাকান্দা, কমলপুর, গাছতলাঘাট, ঘোড়াকান্দা, পঞ্চবটি, বাসস্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে একের পর এক মানুষকে কামরাতে থাকে কুকুরটি। কিন্ত কেউ কুকুরটি ধরতে বা মারতে পারেনি। ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসী কুকুরটি খোঁজতে থাকে। আজ বুধবার সকাল থেকে পৌর কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসী এখনও কুকুরটি খোঁজছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বুলবুল আহাম্মদ জানান, ঈদের ছুটিতে আমি বাড়ীতে ছিলাম। কিন্ত মোবাইলে খবর পেয়ে আমি তৎক্ষনাৎ জরুরি বিভাগের ডাক্তারকে নির্দেশ দিয়েছি সবার চিকিৎসায় ভ্যাকসিন দিতে। তিনি বলেন পাগলা কুকুরের কামড়ে সাধারনত প্রত্যেককে ভ্যাকসিন ও আইজি দিতে হয় ৫ টি করে। আমার হাসপাতালে এত পরিমান ভ্যাকসিন ছিলনা। আর আইজি থাকে কিশোরগন্জ সদর হাসপাতালে। অনেকে বাইরের ফার্মেসী থেকে বেসরকারীভাবে ভ্যাকসিন কিনে তৎক্ষনাত দিলেও পরবর্তীতে তাদেরকে দেয়ার জন্য আমি জরুরী ভিত্তিতে কিশোরগন্জ সিভিল সার্জনের সাথে যোগাযোগ করে আজ বুধবার আইজি ও ভ্যাকসিন হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করেছি। যারা পাগলা কুকুর কামড়ে আক্রান্ত বা আহত হয়েছে তাদেরকে আমরা সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করব। এতে ভয়ের কিছু নেই। আক্রান্তদেরকে হাসপাতালে যোগাযোগ করার জন্য তিনি বলেছেন। প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও আইজি হাসপাতালে এখন রয়েছে বলে তিনি নিশ্বিত করেছেন।